শনিবার, ১৭ই মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** আমেরিকান শুল্ক নিয়ে এত ভয়ের কিছু নেই, অভিমত দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের *** ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির সম্ভাবনা *** আজ সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও ব্যাংক খোলা *** মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির নতুন ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা *** মাগুরায় শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় প্রধান আসামির ফাঁসি, বাকি তিনজন খালাস *** রাজধানী ঢাকায় চলবে বৈদ্যুতিক বাস: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ *** আজ সব সরকারি অফিসের কার্যক্রম চলছে *** আবারও শুরু হচ্ছে লাক্স সুপারস্টার প্রতিযোগিতা *** তুরস্কের ইস্তাম্বুলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরাসরি বৈঠক *** নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: প্রধান উপদেষ্টা

মাহফুজ আলমরা নায়ক, জামায়াত চিরকালের ভিলেন

উপ-সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ১১:০৪ অপরাহ্ন, ১৬ই মে ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

গোলাম মোর্তোজা

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম (অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা) যখনই ১৯৭১ সালকে হৃদয়ে ধারণ করে কথা বলেন, তখনই তিনি মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের শত্রুতে পরিণত হন। তাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষোদগার, চরিত্রহনন ও হত্যার হুমকি দেওয়া অব্যাহত রাখে তারা। এবার তারা তাকে অসম্মান করার জন্য বেছে নিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্মকে।

অন‍্যের কাঁধে বন্দুক রেখে গুলি করার স্বভাব জামায়াতের বহু পুরনো। যখন বিএনপির সঙ্গে জোট করে আন্দোলন করত, তখনও সমাবেশগুলোতে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শ্লোগান দিয়ে বিএনপিকে বিব্রত করত। ঠিক একই প্রক্রিয়ায় ঢাকার শাহবাগে শিক্ষার্থীদের আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনের প্লাটফর্মকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করে জামায়াত-শিবির।

তারা সেখানে এসে শ্লোগান দেয় 'গোলাম আযমের বাংলাদেশে… নিজামির বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ঠাঁই নাই'। গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের ঠাঁই নাই, ঠিক আছে। কিন্তু বাংলাদেশ কখনও গোলাম আযম, নিজামিদের ছিল না। গোলাম আযম, নিজামিরা বাংলাদেশের জন্মের বিরোধিতা করেছিলেন। জামায়াতের কাগজ-পত্র, ছবি অনুযায়ীও তা প্রমাণিত।

ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের সময় জামায়াত ভুল রাজনীতি করেছে। এবং যখনই ক্ষমতায় বা ক্ষমতার কাছাকাছি থেকেছে, তখনই তারা দাম্ভিক হয়ে অন্যদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য অপমান, অসম্মান করে। পরিণতিও তাদের ভোগ করতে হয়। ২০০১ সালে ক্ষমতার দাম্ভিকতা (জামায়াতের) স্মরণ করে দেখেন (বিএনপির সঙ্গে জোট করে তখন সরকারে আসে দলটি)।

আওয়ামী লীগ বিতাড়িত হওয়ার পর জামায়াত এখন আবার সেই পুরনো দাম্ভিকতার ধারায় ফিরে গেছে। ছাত্রলীগের (নিষিদ্ধ সংগঠন) ভেতরে থেকে শিবিরও অপকর্ম করেছে। ২০২৪ সালের আন্দোলনে (ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান) তাদের (জামায়াত) ভূমিকা থাকলেও মূল শক্তি তারা ছিল না। এমনকি ২০২৪ সালের গণঅভ্যূত্থানের সঙ্গে শিবির আছে, তা বলারও প্রেক্ষাপট ছিল না। জামায়াত-শিবিরের ইমেজ সংকট এতটাই প্রকট যে, সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের থেকে দূরে থাকেন।

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ মুক্ত পরিবেশে জামায়াত এখন বড় বড় কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করছে, তাদের অনেক শক্তি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিকল্পিত প্রোপাগান্ডা (অপপ্রচার) ও গালাগালিতে আসলেই তারা শক্তিশালী। এ লেখার কারণেও দেখবেন তারা গালাগালিতে মেতে উঠবে। চরিত্রহনন করবে। বুদ্ধিদীপ্ত তর্ক করবে না। গালাগালিতে সফল হলেও, বাস্তবে বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত ছাড় না দেয়, কমপক্ষে ২৯৫ আসনে (ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে) জামানত বাজেয়াপ্ত হবে জামায়াতের।

'২৪ সালের গণঅভ্যূত্থানের অন্যতম রূপকার (কয়েক বছর আগে থেকে) মাহফুজ আলম। তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে, চরিত্রহনন করে, বোতল ছুঁড়ে দমিয়ে রাখা যাবে না। বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি জামায়াতকে কখনও গ্রহণ করবে না।

মাহফুজ আলমরা '২৪ এর নায়ক। জামায়াত-শিবির চিরকালের ভিলেন। নায়করা মনস্টার হাসিনার (সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) পতনের প্রেক্ষাপট তৈরি না করলে গুহায় লুকিয়ে থাকা জামায়াতকে আরও বহু মূল্য দিতে হত। জামায়াত যদি বুদ্ধিদীপ্ত রাজনৈতিক দল হত, চিরকাল মাহফুজ আলমদের স্যালুট করত। কিন্তু জামায়াত যেহেতু হঠকারী রাজনৈতিক দল, ফলে সব গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যে ভুল করেছে, এখনও সেই ভুলের ধারাতেই আছে।

লেখক: সাংবাদিক ও ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার।

এইচ.এস/

গোলাম মোর্তোজা

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন