ছবি- সংগৃহীত
কার্তিকের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার কুষ্টিয়ায় লালন শাহ'র আখড়াবাড়িতে দিনভর ঝরলো বৃষ্টি। সেই বৃষ্টির সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল লালন শাহ'র ভক্ত-অনুরাগীর চোখের জল।
বৃহস্পতিবার শুরু হয় লালন শাহ'র ১৩৪তম তিরোধান উপলক্ষে স্মরণোৎসব। আজ বিকেলে উৎসব শেষ হলে নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরতে শুরু করেন ভক্ত-অনুরাগীরা।
তবে, শনিবারও আখড়াবাড়ি প্রাঙ্গণে চলবে তিন দিনব্যাপী বাউলমেলা।
প্রবীণ সাধক নহির শাহ বলেন, 'বিভিন্ন মতের মানুষ একত্র হয়ে একমতে চলার নাম সাধুসঙ্গ। সেখানে সাধু-গুরুরা একই সুর, একই তাল, একইভাবে সাধুসঙ্গে অংশ নেন।'
১৮৯০ সালের ১৭ই অক্টোবর দেহত্যাগ করেন ফকির লালন শাহ। এরপর থেকেই দিনটি তিরোধান দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। তিরোধান দিবস তথা পহেলা কার্তিক অধিবাস সেবার মধ্য দিয়ে শুরু হয় অষ্টপ্রহর সাধুসঙ্গ। পরদিন সকালে বাল্যসেবা ও বিকেলে পূর্ণসেবার মধ্য দিয়ে সাধুসঙ্গ শেষ হয়।
সিরাজগঞ্জ থেকে আখড়াবাড়ি এসেছিলেন আবুল কালাম। তিনি বলেন, 'বছরে দুইবার আখড়াবাড়ির সাধুসঙ্গে আসার সুযোগ হয় আমাদের। এ সময়ে বহু মানুষের সঙ্গে আমাদের মতের লেনাদেনা চলে। খোঁজ করি মনের মানুষের। আবারও ফিরে আসতে চাই এই আখড়াবাড়িতে।'
বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে স্মরণোৎসব উদ্বোধন করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, 'লালনের চেতনা অসাম্প্রদায়িক। এই চেতনা না থাকলে বাংলাদেশ থাকে না। আজ অনেক উন্নতি-অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু সমাজ যদি অসাম্প্রদায়িক ও মানবতাবাদী না হয়, তাহলে এসব অগ্রগতি টিকবে না।'
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আই.কে.জে/