ছবি: সংগৃহীত
সিপিবি-বাসদসহ চারটি বামপন্থী দলের আপত্তির পর জুলাই জাতীয় সনদ–২০২৫-এ পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর ফলে সংবিধান থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র বাদ পড়ছে না। স্বাক্ষর শেষে রাজনৈতিক দল ও আমন্ত্রিত অতিথিদের দেওয়া জুলাই সনদে বিষয়টি উল্লেখ করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
একই সঙ্গে সনদে প্রতিটি প্রস্তাবের পাশে দলগুলোর আপত্তি (নোট অব ডিসেন্ট) স্পষ্ট করে দিয়ে বলা হয়েছে—দলগুলো নির্বাচনে বিজয়ী হলে নির্বাচনী ইশতেহার উল্লেখপূর্বক ব্যবস্থা নিতে পারবে।
শুক্রবার (১৭ই অক্টোবর) জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে চূড়ান্ত জুলাই জাতীয় সনদের বই রাজনৈতিক নেতা ও আমন্ত্রিত অতিথিদের দেয় কমিশন। অন্যদিকে অঙ্গীকারনামার পঞ্চম ধারা পরিবর্তনের কথা জানানো হয়। সেটির পিডিএফ কপি দলগুলোর নেতাদের দেওয়া হয়েছে।
১৪ই অক্টোবর সনদের যে অনুলিপি কমিশন দিয়েছিল, সেখানে বলা ছিল, বিদ্যমান সংবিধানের ক্রান্তিকালীন ও অস্থায়ী বিধানসংক্রান্ত ১৫০(২) অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হবে এবং এ সংশ্লিষ্ট পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তফসিল সংবিধানে রাখা হবে না। এ সিদ্ধান্তে নয়টি দল একমত ছিল না।
সংবিধানের পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তফসিল যুক্ত করা হয়েছিল ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। পঞ্চম তফসিলে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ভাষণ। ষষ্ঠ তফসিলে আছে ১৯৭১ সালের ‘২৫শে মার্চ মধ্যরাত শেষে অর্থাৎ ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে’ বঙ্গবন্ধুর দেওয়া স্বাধীনতার ঘোষণা।
আর সপ্তম তফসিলে আছে ১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের জারি করা স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র—এখানে পরিবর্তন আনা হয়েছে।
চূড়ান্ত সনদে বলা হয়েছে, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫০(২) সংশোধন করা হবে এবং এ সংশ্লিষ্ট পঞ্চম ও ষষ্ঠ তফসিল সংবিধানে রাখা হবে না। অর্থাৎ জুলাই সনদ অনুসারে সংবিধানে যে সংস্কার আসবে, তাতে সংবিধানের তফসিলে ৭ই মার্চের ভাষণ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা থাকবে না। তবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র সংবিধানের তফসিলে থাকবে।
চূড়ান্ত সনদে প্রতিটি প্রস্তাবের পাশে কোন কোন দলের ভিন্নমত, সেটা উল্লেখ করার পাশাপাশি একটি নোট দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘অবশ্য কোনো রাজনৈতিক দল বা জোট তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখপূর্বক যদি জনগণের ম্যান্ডেট লাভ করে, তাহলে তারা সেই মতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।’
ভিন্নমত থাকা সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের পদ্ধতি কী হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। এখন যেভাবে নোট দেওয়া হয়েছে, বিএনপি প্রস্তাব করেছিল, সনদের অঙ্গীকারনামায় যেন এভাবে একটি ধারা যুক্ত করা হয়। অঙ্গীকারনামায় যুক্ত করা না হলেও সেটি ভিন্নমত থাকা প্রস্তাবগুলোর পাশে নোট আকারে দেওয়া হয়েছে।
খবরটি শেয়ার করুন