মঙ্গলবার, ৩রা জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২০শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** সরকারি চাকরিজীবীদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি *** ঈদে পরিবহনে সবার ছবি তোলা হবে... *** ঈদ উপলক্ষে ট্রাক–কাভার্ড ভ্যান–লরি ৬ দিন বন্ধ *** সবার সম্মতি থাকা প্রস্তাবগুলোই জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত হবে: আলী রীয়াজ *** ট্রাম্প ইউক্রেন ও রাশিয়ার নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে আগ্রহী *** 'আমেরিকার ১১০ পণ্যে শুল্ক সুবিধা দিলে অন্যান্য দেশকেও দিতে হবে' *** ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির সম্ভাবনা *** সরকারি কর্ম কমিশনের জন্য ১৪৯ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব *** বাজেটে অনেক ভালোর মধ্যে একটা অনৈতিক কাজও হয়েছে: সিপিডি *** গুম নিয়ে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে অভিযোগ দিলেন সালাহউদ্দিন

চাকরি অধ্যাদেশ জারি

সরকারি কর্মচারীদের দাবি-দাওয়া পর্যালোচনায় স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৯:২১ অপরাহ্ন, ২৫শে মে ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

সচিবালয়ে কর্মচারীদের আন্দোলনের মধ্যেই 'সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’  জারি করেছে সরকার। আজ রোববার (২৫শে মে) সন্ধ্যায় এ অধ্যাদেশ জারি করা হয়।

এ অধ্যাদেশ অনুমোদনের প্রতিবাদে সচিবালয়ের ভেতরে আজ রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ মিছিল করেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। তারা এ অধ্যাদেশকে ‘নিবর্তনমূলক ও কালাকানুন’ আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। তা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন।

সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের ব্যানারে এ আন্দোলন হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ সংশোধন করে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ -এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। আজ তা অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়েছে।

কর্মচারীরা অভিযোগ করেছেন, সাড়ে চার দশক আগের বিশেষ বিধানের কিছু ‘নিবর্তনমূলক ধারা’ সংযোজন করে এ অধ্যাদেশ করা হয়েছে।

অধ্যাদেশে অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীদের (আইনানুযায়ী সবাই কর্মচারী) চারটি বিষয়কে অপরাধের আওতাভুক্ত করা হয়। সেগুলো হলো সরকারি কর্মচারী যদি এমন কোনো কাজে লিপ্ত হন, যা অনানুগত্যের শামিল বা যা অন্য যে কোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে; অন্যান্য কর্মচারীর সঙ্গে সমবেতভাবে বা এককভাবে ছুটি ছাড়া বা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া নিজ কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হন; অন্য যে কোনো কর্মচারীকে তার কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকতে বা বিরত থাকতে বা তার কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানি দেন বা প্ররোচিত করেন; এবং যে কোনো সরকারি কর্মচারীকে তার কর্মে উপস্থিত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন, তাহলে তিনি অসদাচরণের দায়ে দণ্ডিত হবেন।

এসব অপরাধের শাস্তি হিসেবে বলা হয়েছিল, দোষী কর্মচারীকে নিম্নপদ বা নিম্ন বেতন গ্রেডে নামিয়ে দেওয়া, চাকরি হতে অপসারণ বা চাকরি থেকে বরখাস্ত করার দণ্ড দেওয়া যাবে।

তবে অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে সহজেই শাস্তি দেওয়ার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। কারণ, বিভাগীয় মামলা রুজু ছাড়াই শাস্তি দেওয়ার সুযোগ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, অভিযোগ গঠনের সাতদিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। আর অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হলে তাকে কেন দণ্ড আরোপ করা হবে না, সে বিষয়ে আরও সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। 

এর ভিত্তিতে দণ্ড আরোপ করা যাবে। এভাবে দণ্ড আরোপ করা হলে দোষী কর্মচারী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে সেই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। তবে রাষ্ট্রপতির দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না। যদিও আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে পারবেন।

আন্দোলনকারী কর্মচারীরা অধ্যাদেশকে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছেন।

এদিকে, সরকারি কর্মচারীদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পর্যালোচনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মতামত ও সুপারিশ দিতে স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন করেছে সরকার। সরকারি চাকরি আইন সংশোধনে নতুন অধ্যাদেশের খসড়া বাতিলের দাবিতে কর্মচারীদের আন্দোলনের মধ্যেই এ পদক্ষেপ নিল সরকার।

আজ সরকারি কর্মচারীগদের দাবি-দাওয়া পর্যালোচনা সংক্রান্ত ১০ সদস্যের স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে সভাপতি করে কমিটিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা-১ অধিশাখা; বিধি-১ অধিশাখা; মাঠ প্রশাসন, অভ্যন্তরীণ নিয়োগ ও নব নিয়োগ অধিশাখা এবং প্রশাসন অধিশাখার যুগ্ম সচিবদের সদস্য করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, অর্থ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের একজন প্রতিনিধিকে (যুগ্ম সচিবের নিম্নে নয়) কমিটির সদস্য করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবালয় ও কল্যাণ অধিশাখার যুগ্ম সচিবকে কমিটির সদস্যসচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এইচ.এস/

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন