ছবি: সংগৃহীত
বিশ্ব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আমেরিকায় সফলভাবে মানবদেহে মূত্রথলি বা ব্লাডার প্রতিস্থাপন করেছেন দেশটির চিকিৎসকরা। গতকাল সোমবার (১৯শে মে) এক প্রতিবেদনে এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে গত ৪ঠা মে ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের রোনাল্ড রেগান ইউসিএলএ মেডিকেল সেন্টারে এ জটিল অস্ত্রোপচারটি করা হয়। আর চিকিৎসকরা জানান, এটি গুরুতর মূত্রথলি সমস্যায় আক্রান্ত অনেক রোগীর জন্য আশার দুয়ার খুলে দেবে।
গত রোববার (১৮ই মে) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, চার সন্তানের জনক ৪১ বছর বয়সী অস্কার লারেইনসারের শরীরে এ অস্ত্রোপচার করা হয়। ক্যান্সারের কারণে তার মূত্রথলির একটি বড় অংশ আগেই অপসারণ করতে হয়েছিল। পরবর্তীতে তার দুটি কিডনিও অপসারণ করতে হয়। সাত বছর টানা ডায়ালাইসিস করাচ্ছেন তিনি।
এ ছাড়া অস্ত্রোপচারে এক দাতার কাছ থেকে একটি কিডনি ও একটি মূত্রথলি পেয়েছেন তিনি। আর দীর্ঘ আট ঘণ্টার অপারেশনে সেগুলো লারেইনসারের দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করেন চিকিৎসকরা।
এদিকে ইউসিএলএ (ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেস) কর্তৃপক্ষ আরো জানায়, প্রথমে রোগীর শরীরে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়, তারপর মূত্রথলি। এরপর কিডনিটিকে নতুন মূত্রথলির সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়।
তবে অস্ত্রোপচারে অংশ নেওয়া সার্জন ড. নিমা নাসিরি জানান, অপারেশনের পরপরই কিডনি প্রচুর পরিমাণে প্রস্রাব তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। তাই রোগীর কোনো ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন হয়নি। আর এ ধরনের অস্ত্রোপচার এতদিন সম্ভব ছিল না। কারণ, মূত্রথলির চারপাশের রক্তনালীগুলো খুব জটিল এবং প্রযুক্তিগতভাবেও খুব কঠিন।
ড. নাসিরি আরও জানান, এ প্রথম মূত্রথলি প্রতিস্থাপন সফল করতে আমাদের দীর্ঘ চার বছরের প্রস্তুতি লেগেছে। এর আগে যেসব রোগীর মূত্রথলি অপসারণ করতে হত, তাদের জন্য অন্ত্রের একটি অংশ দিয়ে কৃত্রিমভাবে থলি তৈরি করা হত। এসব পদ্ধতির স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি অনেক জটিলতা ও ঝুঁকি ছিল।
এদিকে সফলভাবে মানবদেহে মূত্রথলি বা ব্লাডার প্রতিস্থাপন করার পর চিকিৎসকরা আশা করছেন, সম্পূর্ণ মূত্রথলি প্রতিস্থাপন পদ্ধতিতে সেসব ঝুঁকি অনেকখানি এড়ানো সম্ভব হবে।
আরএইচ/
খবরটি শেয়ার করুন