শুক্রবার, ১০ই জানুয়ারী ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৭শে পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে তিন ব্যক্তির দোয়া অবশ্যই কবুল হয়

ধর্ম ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, ১০ই জানুয়ারী ২০২৫

#

প্রতীকী ছবি

‎মুমিনের দোয়া কখনো ব্যর্থ হয় না। হয়তো সাময়িক বিলম্ব হতে পারে। তবে তিন ব্যক্তির দোয়া আল্লাহ অবশ্যই কবুল করেন। এবং তা খুব দ্রুতই হয়। ঈমাম বুখারি (রহ.) রচিত ‘আল আদাবুল মুফরাদে’ আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, নবী (সা.) বলেন, তিনটি দোয়া অবশ্যই কবুল হয়।

(১) উৎপীড়িত বা মজলুমের দোয়া। জুলুম আরবি শব্দ। অর্থ হলো অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন ইত্যাদি। তা বিভিন্ন পদ্ধতিতে হতে পারে। শারীরিক—শরীরে প্রহার করা শারীরিক জুলুম; মানসিক—ভয়ভীতি বা অন্য কোনো উপায়ে ব্ল্যাকমেইল করা। হকদারের হক অবৈধভাবে আত্মসাৎ করা আর্থিক জুলুম। সবগুলোই অপরাধ। এ অপরাধের শাস্তি আল্লাহ পরকালে তো দিবেনই দুনিয়াতেও দিবেন ভয়াবহ সাজা।

কারণ মাজলুম বা নিপীড়িত ব্যক্তির দোয়া আল্লাহ ফিরিয়ে দেন না। তার দোয়া আর আল্লাহর মাঝে কোনো অন্তরাল থাকে না। ইবনু আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) যখন মুআজ (রা.)-কে ইয়েমেনে পাঠান এবং তাকে বলেন, মাযলুমের ফরিয়াদকে ভয় করবে। কেননা, তার ফরিয়াদ এবং আল্লাহর মাঝে কোনো পর্দা থাকে না। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৪৪৮)।

তাছাড়া একাধিক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, জুলুমের ভয়াবহতার সুস্পষ্ট বর্ণনা। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, তোমরা অত্যাচার করা থেকে বিরত থাকো। কেননা অত্যাচার কিয়ামতের দিন গভীর অন্ধকাররূপে আসবে। তোমরা কৃপণতা পরিহার করো। কেননা এই কৃপণতা তোমাদের পূর্ববর্তীদের ধ্বংস করেছে এবং তাদের পরস্পরের রক্তপাত করতে এবং তাদের প্রতি হারামসমূহকে হালালরূপে গ্রহণ করতে উদ্যত করেছে। (আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৪৯০)।

(২) মুসাফিরের দোয়া। ‎দৈনন্দিন জীবনে মানুষ নানা উদ্দেশ্যে সফর করে। জীবিকা, উচ্চ শিক্ষা ইত্যাদি। তবে যাই হোক সফরে রয়েছে কষ্ট-ক্লেশ, অনাহার আর অনিদ্রা। এজন্য সফর শেষে দ্রুত আবাসস্থলে ফিরে আসার নির্দেশ রয়েছে হাদিসে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) ইরশাদ করেন, সফর আজাবের অংশ বিশেষ। তা তোমাদের যথাসময় পানাহার ও নিদ্রায় ব্যঘাত ঘটায়। কাজেই সকলেই যেন নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে অবিলম্বে আপন পরিজনের কাছে ফিরে যায়। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৮০৪)।

সফরের নানা কষ্টের দিকে লক্ষ করে দ্বিনি বিধিবিধানেও এসেছে সহজতা। চার রাকাত নামাজ দুই রাকাত, কুরবানি না করার অনুমতি ইত্যাদি। পাশাপাশি আছে মুসাফিরের দোয়া কাবুলের বিশেষ সুসংবাদও। তাই সফর অবস্থায় বেশি বেশি দোয়া করা উচিত। 

(৩) সন্তানের জন্য মা-বাবার দোয়া। মা-বাবা হলেন পৃথিবীতে আল্লাহ প্রদত্ত এক অমূল্য সম্পদ। মা-বাবা ছাড়া পৃথিবী শূন্যতায় ভরপুর। সন্তানের জন্য মা-বাবা হলো বৃষ্টিতে ছাতা আর রোদে বৃক্ষের ছায়ার মতো। মা-বাবার সাথে সদাচরণের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ বলেন, ‘তোমার রব আদেশ করেছেন যে তোমরা তিনি ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করবে না এবং পিতামাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে।’ (সুরা বনি ইসরাইল, হাদিস : ২৩)।

মানুষ শেষ বয়সে শিশুসুলভ আচরণ করে। তাই অনেক সময় সন্তানরা তাদের আচরণে বিরক্তি প্রকাশ করে। তাই আয়াতের পরবর্তী অংশে বাবা-মায়ের এমন আচরণে বিরক্তি প্রকাশ না করে সদাচারী হওয়ার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ বলেন, ‘যদি তোমার বর্তমানে তাদের একজন বা উভয়েই বার্ধক্যে পৌঁছে যায়, তবে তাদের উফ পর্যন্ত বলবে না এবং তাদের ধমক দেবে না, বরং তাদের সাথে সম্মানসূচক কথা বলবে।’ (সুরা বনি ইসরাইল, হাদিস : ২৩)।

যদি কোনো সন্তান কোরআনের এ নির্দেশ মেনে চলে তাহলে সে অবশ্যই মাতা-পিতার নেক দোয়া পাবে।

ওআ/ আই.কে.জে/ 

দোয়া

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন