উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ছবি: পিটিআই
উত্তর প্রদেশে ফের রাজনৈতিক চমক মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ (সাবেক পূর্ব পাকিস্তান) থেকে যাওয়া রাজ্যে বসবাসকারী প্রায় ১০ হাজার হিন্দু পরিবারকে স্থায়ী জমির মালিকানা দেওয়ার নির্দেশ দিল তার সরকার। শুধু তাই নয়, এই পরিবারগুলোকে ‘অনুপ্রবেশকারী’ বা ‘অবৈধ নাগরিক’ বলে আর চিহ্নিত করা হবে না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর অফিস সূত্রে খবর, সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনকে জমিসংক্রান্ত যাবতীয় দলিল প্রস্তুতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খবর কলকাতা টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
এই পদক্ষেপে একদিকে যেমন মানবিক দিক থেকে প্রশংসা পাচ্ছে যোগী সরকার, তেমনই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোরদার চর্চা। প্রশ্ন উঠছে, যখন বিজেপির অন্য রাজ্য বা কেন্দ্রীয় নেতারা ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ নিয়ে হুঁশিয়ারি দেন, তখন উত্তর প্রদেশের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর এই সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান কিসের ইঙ্গিত?
তৃণমূল কংগ্রেস এই সিদ্ধান্তকে ‘রাজনৈতিক ভণ্ডামি’ বলে আখ্যা দিয়েছে। তাদের দাবি, ‘এ রাজ্যে যাদের বাংলা ভাষাভাষী বলে নিপীড়ন করা হচ্ছে, সেই একই দল অন্য রাজ্যে তাদের জমি দিচ্ছে! এটা দুমুখো রাজনীতি।’
বিজেপির একাংশ অবশ্য এই সিদ্ধান্তকে ‘ঐতিহাসিক’ ও ‘গান্ধীবাদী মানবিকতার ধারায় এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করছে। তারা বলছে, ‘যারা ১৯৭১-এর যুদ্ধের সময় বাস্তুচ্যুত হয়েছে, তাদের এত বছর পর হলেও ন্যায্য অধিকার দেওয়া হচ্ছে—এটাই ভারতীয় সংস্কার।’
উত্তর প্রদেশের পিলিভিত, লক্ষিমপুর খেরি, বিজনোর ও রামপুরের কিছু বিশেষ ব্লকে এই জমি হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে। জমির পরিমাণ, প্রকৃতি ও দলিল হস্তান্তরের আইনি রূপরেখা নিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে বলেও খবর।
সব মিলিয়ে এই পদক্ষেপ এখন জাতীয় রাজনীতির আলোচনার কেন্দ্রে। কোথাও কোথাও এর প্রভাব পড়তে পারে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতেও—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এখন দেখার বিষয়, এই জমি বিতরণ শেষমেশ কতটা মানবিক জয় এনে দেয় আর কতটা রাজনৈতিক মেরুকরণ ঘটায়।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন