শুক্রবার, ৫ই ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২১শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** কলকাতায় পাঁচ জেএমবি সদস্যের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড *** নির্বাচনে সহায়তা নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে ব্রিফ করল জাতিসংঘ *** কাফু–ক্যানিজিয়ার সঙ্গে ঢাকায় নৈশভোজের সুযোগ *** নতুন গণমাধ্যম নীতি নিয়ে আপত্তি, পেন্টাগনের বিরুদ্ধে নিউইয়র্ক টাইমসের মামলা *** প্রধান উপদেষ্টাকে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর ফোন, বন্যায় সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা *** খালেদা জিয়াকে নিয়ে নির্মিত সরকারি ডকুমেন্টারি প্রকাশ *** একটি মানবশিশুকে যেভাবে পাহারা দিলো চারটি কুকুর *** অনিবার্য কারণ ছাড়া বিএনপি নির্বাচনি মাঠে থাকবে: নজরুল ইসলাম খান *** নিবন্ধন পাচ্ছে ‘আমজনতার দল’, প্রতীকের বিষয়ে যা জানা গেল *** এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসতে দেরি হতে পারে, জুবাইদা রহমান ঢাকায় আসছেন

তেহরান থেকে রাজধানী অন্যত্র সরিয়ে নেবে ইরান, নেপথ্যে পানি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৫:৩০ পূর্বাহ্ন, ৩রা অক্টোবর ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান জানিয়েছেন, রাজধানী তেহরান থেকে দেশটির প্রশাসনিক কেন্দ্র অন্যত্র সরানো এখন আর বিকল্প নয়, বরং বাধ্যবাধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপ, ভয়াবহ পানি সংকট ও ভূমিধসের হুমকির কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

বৃহস্পতিবার (২রা অক্টোবর) হরমোজগান প্রদেশ সফরে যান ইরানের প্রেসিডেন্ট। সেখানে তিনি বলেন, ‘তেহরান, কারাজ ও কাজভিনসহ আশপাশের অঞ্চলে পানি সংকট চরমে পৌঁছেছে। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই সমস্যা চললেও কার্যকর সমাধান হয়নি।’ খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

তিনি জানান, রাজধানী স্থানান্তরের প্রস্তাব গত বছরই সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির কাছে তোলা হয়েছিল। যদিও সে সময় তীব্র সমালোচনা হয়, কিন্তু সংকট এত গভীর হয়েছে যে এখন আর দেরি করা যাবে না।

এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে গার্ডিয়ান জানিয়েছে, তেহরান বর্তমানে ১ কোটির বেশি মানুষের আবাসস্থল এবং পুরো ইরানের প্রায় এক-চতুর্থাংশ পানি ব্যবহার করে। অথচ শহরটির পানি সরবরাহ মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। সাধারণত রাজধানীর ৭০ শতাংশ পানি আসে বাঁধ থেকে, বাকি ৩০ শতাংশ ভূগর্ভস্থ উৎস থেকে। কিন্তু বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় বাঁধগুলোর সক্ষমতা দ্রুত কমে যাচ্ছে। এর ফলে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ বাড়ছে।

পেজেশকিয়ান জানান, ২০২৪ সালে ইরানে বৃষ্টিপাত হয়েছে মাত্র ১৪০ মিলিমিটার, যেখানে স্বাভাবিক মান ২৬০ মিলিমিটার। অর্থাৎ ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ বৃষ্টি কমেছে। চলতি বছর পরিস্থিতি আরও খারাপ, বৃষ্টিপাত নেমে এসেছে ১০০ মিলিমিটারেরও নিচে। এর ফলে বাঁধে পানি সঞ্চয় কমছে, অনেক কূপ শুকিয়ে যাচ্ছে এবং অন্য অঞ্চল থেকে প্রতি ঘনমিটার পানি আনার খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪ ইউরো।

ইরানের প্রেসিডেন্ট সতর্ক করে বলেন, ‘অযথা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে প্রাকৃতিক সম্পদের ভারসাম্য নষ্ট হলে শেষ পর্যন্ত ধ্বংস ছাড়া কিছুই বাকি থাকবে না। ইতিমধ্যেই তেহরানের কিছু এলাকায় বছরে ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত ভূমিধস হচ্ছে, যা ভয়াবহ বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দেয়।’

নতুন রাজধানী দক্ষিণাঞ্চলের পারস্য উপসাগর তীরবর্তী এলাকায় হলে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি আসবে বলে মনে করেন পেজেশকিয়ান। তার ভাষায়, ‘এই অঞ্চল উন্মুক্ত সমুদ্রের সরাসরি প্রবেশাধিকার দিচ্ছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও উন্নয়নের নতুন দিগন্ত খুলে যাবে।’

এর আগে সাবেক প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানিসহ একাধিক নেতা রাজধানী স্থানান্তরের পরিকল্পনা করলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তবে ক্রমবর্ধমান পানি সংকট ও ভূমিধসের হুমকি এবার ইরানকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করছে।

ইরান মাসউদ পেজেশকিয়ান

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250