শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এখনো উত্তাল আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, আন্দোলনে অটল শিক্ষার্থীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৮:৩৩ অপরাহ্ন, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে এখনো উত্তাল আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস।শিক্ষার্থীরা তাঁবু গেড়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। রাত-দিন বিভিন্ন সময় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে মিছিল নিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখছেন। আন্দোলেনের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস বর্জন করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য অভ্যন্তরীণ অনুষ্ঠানও বয়কট করছেন।

এমন পরিস্থিতিতে আন্দোলন দমাতে বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার অব্যাহত রেছেছে দেশটির পুলিশ।ইতিমধ্যে কয়েকশ শিক্ষার্থী পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। কিন্তু অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে গ্রেফতার, ধ্বস্তাধ্বস্তি, হুমকি, বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমাতে পারছে না মার্কিন প্রশাসন।

নতুন করে শহরের এমারসন কলেজ থেকে স্থানীয় সময় বুধবার রাতে প্রায় ১০৮ জনকে গ্রেফতার হয়েছে।এর আগে সন্ধ্যায় ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া থেকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয় ৯৩ জনকে।

আরো পড়ুন: গাজা উপকূলে অস্থায়ী বন্দর তৈরি শুরু আমেরিকার

এদিকে নিউইয়র্কের পর টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের অস্টিন শহরে ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসেও বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সেখান থেকে ৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এর আগে কলাম্বিয়া, ইয়েল ও নিউইয়র্ক ইউনির্ভাসিটিতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। আন্দোলন দমাতে সেখান থেকে গণগ্রেফতারের ঘটনা ঘটে। কিন্তু এতে ওই বিশ্ববিদ্যালয় তিনটির শিক্ষার্থীরা ভীত না হয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে রাতারাতি বিক্ষোভ শুরু হয়।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, শিক্ষার্থীরা গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন। প্রথমে কলম্বিয়া ও ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় উত্তাল হয়ে ওঠে। সেখানে হস্তক্ষেপ করে পুলিশ। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসজুড়ে দেখা যায় প্যালেস্টাইনের পতাকা। বিশ্ববিদ্যালয়টি থেকে শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।বিশ্ববিদ্যালয়ে বাতিল হয় সশরীরে ক্লাস। এর পরপরই এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে আমেরিকাজুড়ে।এছাড়া ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কয়েক ডজন ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়।

এ খবর দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন।এরমধ্যে সোমবার (২২শে এপ্রিল) রাতে পুলিশ নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ দমাতে যায়। সেখানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। এসময় বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এতে উত্তেজনা আরও বাড়ে। বার্কলে, এমআইটিসহ আমেরিকার শীর্ষ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া–বার্কলে ও ইউনির্ভাসিটি অব মিশিগানেও ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। এর জেরে আমেরিকার বিভিন্ন ইসরায়েলপন্থি ও ইহুদি গোষ্ঠী বলছে, এসব বিক্ষোভে ইহুদিবিরোধী উপাদান রয়েছে। ফলে তারা নিরাপদ বোধ করছেন না।

নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির কয়েকজন ইহুদি শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ‘হুমকিপূর্ণ’ উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, সেখানে ইহুদি শিক্ষার্থীদের ওপর হয়রানির ঘটনা খুবই বিরল। 

এদিকে টেক্সাস ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীদের সরাতে অভিযানে নামেন পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দারা। লাঠি হাতে ঘোড়ায় চড়ে পুলিশ সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।এতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। টেক্সাসের গভর্নর বলেছেন, এই বিক্ষোভকারীদের ‘কারাগারে থাকা উচিত’।

সূত্র: বিবিসি 

এইচআ/ 

আমেরিকা প্যালেস্টাইন ছাত্র আন্দোলন

খবরটি শেয়ার করুন