মঙ্গলবার, ১৮ই নভেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৪ঠা অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** শেখ হাসিনার বিচার ‘সুষ্ঠু ও ন্যায়সংগত কোনোটিই হয়নি’: অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল *** শেখ হাসিনার বিচারপ্রক্রিয়া সমালোচনামুক্ত নয়: ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ *** শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের সাজায় অসন্তোষ প্রকাশ করল জাতিসংঘের ওএইচসিএইচআর *** মতিউর রহমান চৌধুরী এখনো কেন ছদ্মনামে লেখেন, যা জানা গেল *** শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায় প্রমাণ করে, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন: প্রধান উপদেষ্টা *** যে কারণে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের শাস্তি কম *** এপস্টেইনের নথি প্রকাশের পক্ষে হঠাৎ কেন অবস্থান নিলেন ট্রাম্প *** সাংবাদিক খাসোগি হত্যার পর প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন সৌদি যুবরাজ *** লালদিয়ায় ডেনমার্কের বিনিয়োগ বাংলাদেশের জন্য নতুন যুগের সূচনা: প্রধান উপদেষ্টা *** অর্থ উপদেষ্টার নামে ভুয়া ভিডিও

মরণযাত্রায় পাড়ি জমানো কিশোর কুমার অমরত্ব নিয়ে আছেন আজও

বিনোদন প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ১১:২৫ পূর্বাহ্ন, ১৪ই অক্টোবর ২০২৫

#

ফাইল ছবি

‘তোমার বাড়ির সামনে দিয়ে আমার মরণযাত্রা যেদিন যাবে’ গানের মুখ শুনেই আঁতকে উঠলেন মান্না দে! প্রযোজকদের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘কী করেছেন! আমার মরণযাত্রা করে দিয়েছেন! আপনাদের বউদি এ গান আমাকে গাইতে দেবে না।’

মৃণাল বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় পূজা উপলক্ষে মান্না দের জন্য গানটি করেছিলেন। মান্না দে সাফ জানিয়ে দিলেন, গানটা তিনি করছেন না। মৃণাল-পুলকের মন ভেঙে গেল। কিছুদিন পর চলচ্চিত্র পরিচালক মনোজ ঘোষ ‘তুমি কত সুন্দর’ ছবির জন্য ‘তোমার বাড়ির সামনে দিয়ে’ গানটি পছন্দ করলেন। কিন্তু সেখানেও মুশকিল। মান্না দের কথা ভেবে বানানো এ গান মান্না না গাইলে কে গাইবেন?

মনোজ ঘোষ ও মৃণাল বন্দ্যোপাধ্যায় রওনা দিলেন মুম্বাই। গানটি শোনালেন কিশোর কুমারকে। ভালো লাগল তার। তবে মুখরায় ‘তুমি বারান্দাতে দাঁড়িয়ে থাকো’র জায়গায় কিশোর ‘বারান্দা’ শব্দটা পছন্দ করলেন না। বললেন, ওখানে ‘আঙিনা’ করে দিতে হবে। দুজন এবার পড়লেন আরেক বিপদে। মুম্বাই থেকে ফোনে পাওয়া গেল না পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তার অনুমতি না নিয়ে তো আর গানের শব্দ বদলানো যায় না! আবার সেটা না বদলালে কিশোর কুমারও গাইবেন না।

দ্বিমুখী এ বিপদ মাথায় নিয়ে এল রেকর্ডিংয়ের দিন। রেকর্ড করতে এলেন কিশোর কুমার এবং গানের মধ্যে ডুবে গেলেন। শুরু করার আগে একবার মৃণাল বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে বললেন, ‘বড় ভালো সুর করেছ, মৃণাল।’ তারপর ‘বারান্দা’ নিয়ে কোনো কথা না বলে গানটা গেয়ে ফেললেন।

এ গল্প অনেকেরই জানা। আজ এ গল্পের অবতারণা, কারণ গতকাল সোমবার (১৩ই অক্টোবর) ছিল কিশোর কুমারের শেষ বিদায়ের দিন। তবে মরণযাত্রায় পাড়ি জমানো কিশোর কুমার অমরত্ব নিয়ে আজও বসে আছেন বাংলার মানুষের হৃদয়ের আসনে।

যে কারও মরণযাত্রায় তার গাওয়া এ গান না বাজলেও বুকের মধ্যে ঠিকই বেজে ওঠে—‘তোমার বাড়ির সামনে দিয়ে আমার মরণযাত্রা যেদিন যাবে’। সে কারণেই হয়তো তার গাওয়া গানের পঙ্‌ক্তি ধার করে বলতে হয়—‘আজ এই দিনটাকে মনের খাতায় লিখে রাখো’।

‘ওপারে থাকব আমি তুমি রইবে এপারে, শুধু আমার দুচোখ ভরে দেখব তোমারে’ আজও গীত হয় নানা প্রজন্মের শিল্পীদের কণ্ঠে। অনেকে হয়তো বিস্ময় নিয়ে শোনেন গানটি, জানা হয় না যে এটা কিশোরের গান কিংবা ‘আমি যে কে তোমার তুমি তা বুঝে নাও’ গানটি! এ রকম বহু গান আছে, যার বেশির ভাগই শ্রোতাকে আজও দোলা দিয়ে যায়।

আছে হিন্দি গানও। সেই তালিকায় রয়েছে ‘হামে তুমসে পেয়ার কিতনা’, ‘হামে অর জিনে কি’, ‘দেখা এক খাওয়াব’, ‘সাগার কিনারে’, ‘চেহরা হে ইয়া’, ‘ইয়ে দোস্তি’, ‘রিমঝিম ঘিরে সাওয়ান’সহ একগুচ্ছ গান। কেবল বাংলা বা হিন্দি নয়, কিশোর গেয়েছেন মারাঠি, গুজরাটি, অসমিয়া, মালয়ালম, ওড়িয়া, ভোজপুরি ও কন্নড় ভাষায়।

আইনজীবী কুঞ্জলাল গঙ্গোপাধ্যায় ও গৌরী দেবীর ছোট ছেলে কিশোর কুমারের আসল নাম আভাস কুমার। তার জন্ম ১৯২৯ সালের ৪ই আগস্ট। ব্রিটিশ ভারতের সেন্ট্রাল প্রভিন্স বা আজকের মধ্যপ্রদেশের খন্ডোয়া অঞ্চলে। সেখানকার এক ধনী পরিবারের আইনজীবী ছিলেন কিশোরের বাবা কুঞ্জলাল।

জে.এস/

কিশোর কুমার

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250