স্টুয়ার্ট ব্রড - ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড। চলতি অ্যাশেজ সিরিজ শেষেই সব ধরনের ক্রিকেটকে বিদায় বলবেন তিনি। গতকাল শনিবার (২৯ জুলাই) অভাল টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের অবসরের ঘোষণা দেন ব্রড।
বয়স ৩৭ পেরোলেও পারফরম্যান্সে সেটার কোনো প্রভাব পড়েনি। অ্যাশেজে ইংলিশ বোলারদের মধ্যে ব্রডের উইকেটই সবচেয়ে বেশি; ১৫১টি। প্রয়াত শেন ওয়ার্ন (১৯৫), গ্লেন ম্যাকগ্রার (১৫৭) পর অ্যাশেজের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি তিনিই।
এমনকি এবারের অ্যাশেজেও ইংলিশ বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট তাঁর; ২০টি। কদিন আগে টেস্ট ইতিহাসের পঞ্চম বোলার হিসেবে ৬০০ উইকেটের মাইলফলকও ছুঁয়েছেন। দীর্ঘ দিনের বোলিং সঙ্গী জিমি অ্যান্ডারসন ৪১ বছর বয়সেও খেলা চালিয়ে যাওয়ার কথা বললেও ব্রড কোনো আভাস ছাড়াই খেলোয়াড়ি জীবনকে বিদায় বলে দিলেন।
সেটাও তৃতীয় দিনের খেলা শেষে অ্যান্ডারসনের সঙ্গেই মাঠ ছাড়ার পর পর। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে শেষ উইকেট জুটিতে ব্যাট করছিলেন তাঁরা।
🗣️ "I don't think I will leave the game with any regrets"
— Sky Sports Cricket (@SkyCricket) July 29, 2023
Stuart Broad discusses the emotions and why he has made the decision to retire pic.twitter.com/zJ9vfmNnOL
বিদায়ের ঘোষণা দিতে গিয়ে স্কাই স্পোর্টসকে ব্রড বলেছেন, ‘আগামীকাল (রোববার) অথবা সোমবার ক্রিকেটে আমার শেষ দিন হবে। যাত্রাটা অসাধারণ ছিল। যতবার পেরেছি, ইংল্যান্ড ও নটিংহামের (তাঁর কাউন্টি দল) প্রতিনিধিত্ব করেছি। এটা অনেক বড় সম্মানের।’
ব্রড আরও বলেছেন, ‘ক্রিকেটকে যতটা ভালোবাসা সম্ভব, বেসেছি। এই সিরিজের অংশ হতে পারা চমৎকার ব্যাপার। আমি সবসময় চূড়ায় থেকে শেষ করতে চেয়েছি। এই সিরিজকে সবচেয়ে চমকপ্রদ ও চিত্তাকর্ষক মনে হয়েছে।’
সিদ্ধান্তটা হুটহাট নেননি বলেও জানিয়েছেন ব্রড, ‘এটা (অবসর) নিয়ে দুই সপ্তাহ ভেবেছি। আমার মনে হয়েছে ইংল্যান্ড–অস্ট্রেলিয়া সিরিজ সবকিছুর ঊর্ধ্বে। গতকাল (শুক্রবার) রাত সাড়ে ৮টায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার দিক থেকে, দলের দিক থেকে এই লড়াই বেশ উপভোগ করেছি। বলতে পারেন অ্যাশেজের সঙ্গে আমার সম্পর্কটা প্রণয়ের মতো।’
ইংল্যান্ডের হয়ে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৩৪৪ ম্যাচ খেলেছেন ব্রড। উইকেট নিয়েছেন ৮৪৫টি—টেস্টে ৬০২, ওয়ানডেতে ১৭৮ আর টি–টোয়েন্টিতে ৬৫টি। দলের প্রয়োজনে ব্যাট হাতেও অবদান রেখেছেন। টেস্টে ১৩টি ফিফটি ও একটি সেঞ্চুরি আছে তাঁর। পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরির দিনে জোনাথান ট্রটের সঙ্গে ৩৩২ রানের মহাকাব্যিক জুটি গড়েছিলেন; যা টেস্ট ইতিহাসে অষ্টম উইকেটে সর্বোচ্চ।
অথচ ২০০৭ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যুবরাজ সিংহের কাছে ছয় বলে ছয় ছক্কা খাওয়ার পর অনেকেই ব্রডের ক্যারিয়ারের শেষ দেখে ফেলেছিলেন। কিন্তু বিখ্যাত বাবার (সাবেক ক্রিকেটার ও বর্তমানে আইসিসি ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রড) বিখ্যাত ছেলে হতে চাওয়ার তাড়না হয়তো তাঁর মধ্যে কাজ করেছে। ২০০৭–এর ওই একটি ওভারের প্রায়শ্চিত্ত করেছেন ২০১০ সালে ইংল্যান্ডকে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতানোয় বড় অবদান রেখে। সেটাই ছিল ইংলিশদের প্রথম কোনো বৈশ্বিক শিরোপা।
আরো পড়ুন: রিয়ালকে উড়িয়ে যে বার্তা দিল বার্সেলোনা
২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হেরে ইংল্যান্ড ছিটকে পড়ার পর ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়েন ব্রড। ২০১৬ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের দলে ফিরলেও মাত্র দুটি ওয়ানডে খেলতে পেরেছেন। ক্যারিয়ার লম্বা করতে এরপর টেস্টেই মনোযোগী হয়েছেন। দেশের জার্সিতে শেষ টি–টোয়েন্টিটাও খেলেছেন অনেক আগে। সেটা বাংলাদেশের মাটিতেই, ২০১৪ বিশ্বকাপে।
এম/