ছবি-সংগৃহীত
আজকাল মানুষের মধ্যে হতাশার পরিমাণ অনেক বেশি দেখা যায়। আর এই হতাশার কারণে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বড় বড় তারকারাও আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। এই মানুষগুলোকে সবসময় হাসিখুশি দেখালেও ভেতরে যে কতটা হতাশা ও দুঃখ তারা পুষে রেখেছিলেন সেটা তাদের আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত থেকে বোঝা যায়।
আত্মহত্যার ভাবনা একবার হলেও উঁকি দিয়ে যায় অধিকাংশ মানুষের জীবনে। আত্মহত্যা কখনো সমস্যার সমাধান নয়। তাই এ বিষয়টি নিয়ে জানতে হবে, বুঝতে হবে, জানাতে হবে, সচেতন হতে হবে। কিছু বিষয় খেয়াল রাখলেই কিন্তু যারা এ ধরণের হতাশা বা আত্মহত্যা প্রবণতায় ভুগছেন তারা এই অবস্থা থেকে সহজেই বের হয়ে আসতে পারেন।
যখনই আত্মহত্যার প্রবণতা আপনার মধ্যে বিস্তার করবে তখন সবার আগে নিজেকে যেটা বলা জরুরি সেটা হচ্ছে, মেঘের পরেই কিন্তু সূর্যের আলো হাসে। সুতরাং প্রতিটি খারাপ সময়ের শেষ আছে ও এক সময় ভালো সময় শুরু হবে।
যদি কখনো মনে হয় আপনার মাঝে আত্মহত্যার চিন্তা বাসা বাঁধছে, তাহলে আপনার নিয়মিত কাজকর্ম থেকে বিরতি নিন। পরিবারকে সময় দিন, দূরে কোথাও ঘুরতে যান। আমাদের দেশে এটা একটা সমস্যা আমরা মানসিক চাপকে গুরুত্ব দেই না কখনোই।
কিন্তু এই মানসিক চাপ একসময় বড় ক্ষতির কারণ হয়। সুতরাং যখনই মানসিক চাপ অনুভব করবেন, চেষ্টা করুন নিজেকে খুশি রাখতে। সেজন্য ভ্রমণ বেশ ভালো একটা সমাধান। দুইদিনের জন্য দূরে কোথাও পাহাড় বা সমুদ্রের কাছাকাছি ঘুরে এলে আপনার কাছেই মনে হবে আপনি একটা ভালো সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। তখন আত্মহত্যার চিন্তা মাথা থেকে এমনিতেই সরে যাবে।
যখনই মনে হবে বেঁচে থেকে লাভ নেই, তখনই নিজের চারপাশে দেখুন পরিবারের ও বন্ধুদের কথা ভাবুন। যখন আত্মহত্যার চিন্তা মাথায় বাসা বাঁধে তখন একটা ঘোরের মধ্যে আপনি পড়ে যাবেন। আপনার মনে হবে কেউ আপনার কেয়ার করে না, আপনার কেউ নেই।
কিন্তু একটু ভালো করে ভাবলেই দেখতে পাবেন আপনার আশেপাশে অনেক মানুষ আছে যারা আপনার কথা ভাবে, ভালোবাসে। তাদের কথা চিন্তা করুন আপনি মারা গেলে তাদের কতটা কষ্ট হবে সেটা ভাবুন। কাছের মানুষকে কেউ হারাতে চায় না।
আগেই বলেছি, যখনই মাথায় আত্মহত্যার চিন্তা আসবে তখনই একটা ঘোরের মধ্যে চলে যাবেন। আপনার আশেপাশে সবকিছুই নেগেটিভ মনে হবে আপনার। সবকিছুর জন্য নিজেকে দোষারোপ করা শুরু করবেন।
এটা কিন্তু খুবই ভয়ংকর একটা ব্যাপার। অপরাধবোধ থেকে আত্মহত্যার সংখ্যা অনেক বেশি। তাই যেটা আপনি করেননি বা আপনার কোনও হাত নেই সেটার জন্য নিজেকে দোষারোপ করা বন্ধ করুন। সবকিছু সবসময় ঠিকভাবে হবে না এটাই প্রকৃতির নিয়ম।
সাধারণত অল্প বয়সীরাই আত্মহত্যা প্রবণতায় বেশি ভোগেন। সুতরাং ভাবুন ভবিষ্যতে কী কী করা বাকি আছে আপনার। কী কী আপনি করতে পারেননি। আত্মহত্যা করলে কখনোই আর সেগুলো করার সুযোগ পাবেন না। সুতরাং সেইদিকে মনোযোগ দিন।
এরপরও যদি মনে হয় এভাবে হচ্ছে না।কোনওভাবেই নিজেকে নিজের মানসিক চাপ থেকে বাঁচাতে পারছেন না, দিন দিন আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে, তাহলে একটাই পরামর্শ থাকবে। কিছু করে ফেলার আগে একজন ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।
আরো পড়ুন: মানসিক দৃঢ়তা বাড়াবেন যেভাবে
সবশেষে নিজের ছোট ছোট ইচ্ছেগুলো পূরণ করার চেষ্টা করুন। কোথাও খেতে ইচ্ছে করলে সেখানে চলে যান, মুভি দেখুন সিনেমা হলে গিয়ে, পছন্দের বইটি পড়ুন। দেখবেন সবকিছু আস্তে আস্তে সহজ হয়ে আসছে। সবকিছু আস্তে আস্তে মিশে যাবে সময়ের সাথে।
আপনিও নিজের বিশ্বাস ফিরে পাবেন, মোটিভেশন পাবেন আবার সব শুরু করার। আত্মহত্যা কখনোই সমাধান নয়, নিজেকে রক্ষা করুন ও অন্যদের জন্য উদাহরণ হয়ে উঠুন। সবকিছু এভাবেই সুন্দর হয়ে উঠবে।
এসি/ আই. কে. জে/