ছবি: সংগৃহীত
চীনে উইঘুর মুসলমানদের উপর চলমান নিপীড়নের বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহল নীরবতা পালন করছে। হলোকাস্ট কিংবা অন্যান্য গণহত্যার বিষয় থেকে এ ব্যাপার সহজেই অনুমান করা যায় যে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের মুখে বিশ্বের উদাসীনতা, নিস্ক্রিয়তা এবং নীরবতা ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আক্ষরিক অর্থেই মারাত্মক ফল বয়ে আনতে পারে।
চীনা শাসক শি জিনপিং এবং ক্ষমতাসীন দল চীনা কমিউনিস্ট পার্টি তিব্বত এবং হংকং এ মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো বিষয়ের জন্য ইতিমধ্যেই কুখ্যাত। উইঘুরদের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মহলের নীরবতা তাদের আরো সাহসী করে তুলছে।
মুসলিম ধর্মাবলম্বী, তুর্কি ভাষী সংখ্যালঘু গোষ্ঠী, উইঘুর সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরেই চীনা সরকারের বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার। দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ, যা জিনজিয়াং নামে পরিচিত, এখানে প্রায় ১০০ লাখের মতো উইঘুর মুসলমানরা বসবাস করেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, উইঘুরদের প্রতি দমন-পীড়ন বাড়িয়েছে চীন। এ ঘটনাকে অনেক বিশেষজ্ঞ গণহত্যা বলে অভিহিত করেছেন। উইঘুরদের ধর্মীয় স্বাধীনতা, ভাষার অধিকার, সাংস্কৃতিক মতপ্রকাশ এবং চলাফেরার স্বাধীনতার উপর বিধিনিষেধ জারি করেছে চীনা সরকার।
কানাডিয়ান আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী সারাহ টেইচ বলেন, গণহত্যার অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর একটি অভিযোগ এবং এ বিষয়টিকে হালকাভাবে নেওয়া একদম উচিত নয়। জিনজিয়াং বা পূর্ব তুর্কিস্তানে গণহত্যার বিষয়ে একাধিক নির্ভরযোগ্য প্রমাণ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।
আরো পড়ুন: বিচ্ছিন্নতা কাটিয়ে 'আরব বলয়ে' ফিরে আসছে সিরিয়া
শিক্ষা প্রদানের নাম করে ২০১৭ সাল থেকে, প্রায় দশ লাখেরও বেশি উইঘুরদের বন্দিশিবিরে আটক করে রেখেছে চীন। মুক্ত উইঘুরদের উপর চলছে অকথ্য নির্যাতন। উইঘুর নারীদের জোরপূর্বক গর্ভপাত বা বন্ধ্যাকরণ করা হচ্ছে।
গত বছর, জাতিসংঘ মানবাধিকারের অফিস প্রতিবেদনে বন্দিশিবিরগুলোর সত্যতা তুলে ধরা হয়। এখানকার বন্দিদের অধিকাংশই নিরপরাধ। তাদের একমাত্র অপরাধ হলো তাদের ধর্ম ইসলাম।
চীন থেকে পালিয়ে যাওয়া উইঘুরদের ফেরত পাঠাতে অন্যান্য দেশের সরকারকেও চাপ প্রদান করছে চীন।
কানাডা সর্বপ্রথম উইঘুরদের বিরুদ্ধে চীনা কার্যকলাপকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। পরবর্তীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং নেদারল্যান্ডসও এ বিষয়ে স্বীকৃতি প্রদান করে।
খবরটি শেয়ার করুন