সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জুমার দিনে ভালো পোশাক পরার ফজিলত

ধর্ম ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১২:২৬ অপরাহ্ন, ১০ই নভেম্বর ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

জুমার দিন মুসলমানদের কাছে একটি কাঙ্ক্ষিত দিন। মানব ইতিহাসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে এই দিনে। জুমু’আ নামে পবিত্র কোরআনে একটি স্বতন্ত্র সুরা আছে। এই দিনকে সাপ্তাহিক ঈদ বলা হয়েছে হাদিসে। 

‘মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন।’ (ইবনে মাজাহ: ১০৯৮)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, সূর্য উদিত হওয়ার দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এই দিনে তাঁকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে।’ (মুসলিম: ৮৫৪)

সপ্তাহের বাকি ছয় দিনের তুলনায় অধিক মর্যাদাসম্পন্ন দিনটির আমলও অনেক ফজিলতপূর্ণ। এদিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি উত্তম পোশাক পরা এবং দ্রুত জুমার নামাজে উপস্থিত হওয়ার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে উত্তম পোশাক পরিধান করে, সুগন্ধি থাকলে তা ব্যবহার করে, জুমার নামাজে আসে এবং অন্য মুসল্লিদের গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনের দিকে না যায়, নির্ধারিত নামাজ আদায় করে, ইমাম খুতবার জন্য বের হওয়ার পর থেকে সালাম পর্যন্ত চুপ করে থাকে তার এই আমল আগের জুমা থেকে পরের জুমা পর্যন্ত সব ছোট পাপ মোচন হবে।’ (আবু দাউদ: ৩৪৩)

জুমা ছাড়াও যেকোনো নামাজে পূত-পবিত্র হয়ে, সতেজ ও প্রফুল্ল মনে নামাজে দাঁড়ানো উচিত। কারণ নামাজ হলো বান্দার সঙ্গে আল্লাহর সাক্ষাৎস্বরূপ। তাই মহান প্রভুকে হাজিরা দেওয়ার জন্য গুরুত্বসহকারে, পরিপাটি হয়ে, উত্তম পোশাকে নামাজ আদায় করা উচিত। এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আদম সন্তান! প্রত্যেক নামাজের সময় সাজসজ্জা (সুন্দর পোশাক-পরিচ্ছদ) গ্রহণ করো।’ (সুরা আরাফ: ৩১)

সুতরাং সামর্থ্য অনুযায়ী যত ভালো কাপড় পাওয়া যায়, তা পরিধান করা উত্তম। তবে পুরনো কাপড় পরাতেও দোষ নেই। তা যেন পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন হয় সেদিকে খেয়াল রাখা ভালো।

উল্লেখ্য, অহংকার আসে এমন কাপড় পরিধান না করাই বাঞ্ছনীয়। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ৫/৩৩৩)

রাসুল (স.) ইরশাদ করেন, ‘যার অন্তরে ন্যূনতম অহংকার আছে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ একজন বলল, ‘মানুষ তো সাধারণত সুন্দর কাপড় ও সুন্দর জুতা পরিধান করতে পছন্দ করে।’ রাসুল (স.) বললেন, ‘আল্লাহ সুন্দর, তিনি সুন্দরকে পছন্দ করেন। অহংকার হলো সত্য গ্রহণে অনীহা ও মানুষকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা।’ (মুসলিম: ১৪৭) 

টাইট প্যান্ট নয়, পায়জামা পরিধান করাই উত্তম। এটি সতর ঢাকার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। রাসুল (স.) একবার একটি পায়জামা ক্রয় করেন। কিন্তু সেটি তিনি পরিধান করেছেন কি না এ ব্যাপারে মতানৈক্য আছে। তবে সাহাবায়ে কেরাম হুজুর (স.)-এর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে পায়জামা পরিধান করতেন। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ৫/৩৩৩)

আরো পড়ুন: জুমার নামাজে খুতবা দিতে হয় কেন, জেনে নিন

এমন টুপি ব্যবহার করা সুন্নত, যা মাথার সঙ্গে লেগে থাকে। টুপির রং সাদা হওয়াও সুন্নত। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ৫/৩৩০)

পাগড়ি বাঁধাও সুন্নত। সব সময় পাগড়ি বেঁধে রাখতে পারলে ভালো। আবার শুধু নামাজের সময়ও বাঁধা যায়। পাগড়ি সাদা বা কালো রঙের হওয়া উত্তম। (মুসলিম: ১/৪৩৯) পাগড়ি তিন হাত, সাত হাত, ১২ হাত পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। (ফয়জুল বারি: ৪/৩৭৫)

সব পোশাক ঢিলেঢালা হওয়া উচিত। যেসব পোশাকে সতরের কাঠামো দৃষ্টিগোচর হয়, তা দিয়ে পোশাকের সুন্নত আদায় হয় না। (আপকে মাসায়েল: ৭/১৬৫) 

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাসাধ্য সুন্দর পোশাক পরে জুমার নামাজে শরিক হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এসকে/ 


জুমার নামাজ ভালো পোশাক

খবরটি শেয়ার করুন