ছবি: সুখবর
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব যান্ত্রিক এবং পঞ্চম শিল্প বিপ্লব যন্ত্র ও মানুষের মিশেলে একটি মানবিক শিল্প বিপ্লব। এই বিপ্লব নতুন সমাজ বিনির্মাণের সোপান। এরই ধারাবাহিকতায় শিল্প, বাণিজ্য, স্বাস্থ্যও শিক্ষাসহ জীবনের প্রতিটি স্তর ডিজিটাইজ করতে হবে। ডিজিটাইজেশনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের গত সাড়ে ১৪ বছরে বিস্ময়কর সফলতা অর্জিত হয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের আগেই একটি সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। উন্নত জাতি বিনির্মাণের এই লড়াইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন এবং প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী গতকাল শনিবার (৭অক্টোবর) রাতে ঢাকায় আইইবি মিলনায়তনে আইইবির কম্পিউটার বিভাগ আয়োজিত ডিজিটাল রূপান্তর : চুতুর্থ শিল্প বিপ্লবে আইসিটি ও সিএসই মূল শক্তি বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী প্রকৌশলীদেরকে উন্নয়নের অগ্রসেনা আখ্যায়িত করে বলেন, আমাদের তরুণরা অত্যন্ত মেধাবি। ব্যাংকিং সফটওয়্যারও তারা তৈরি করছে। শতকোটি টাকার সফটওয়্যার ৩ কোটি টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। ডিজিটাল কমার্সে তারা দক্ষতার সাথে কাজ করছে, উদ্যোক্তা হচ্ছে। যথাযথ সহযোগিতার মাধ্যমে তরুণদেরকে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে তৈরি করতে পারলে বাংলাদেশ এগিযে যাবে বহুদূর। সিএসই ও আইটি প্রকৌশলদের জন্য মন্ত্রী সরকারি চাকুরিতে উৎসাহিত করতে বিদ্যমান টেলিকম ক্যাডারের সাথে টেলিকম ও আইসিটি নামে একটি একিভূত ক্যাডার করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডিজিটাইজেশন ও ডিজিটাল সক্ষমতা সম্পন্ন মানব সম্পদের জন্য শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর অপরিহার্য। প্রচলিত কাগজের বই ও কলম নির্ভর ঔপনিবেশিক শিক্ষা থেকে আমরা এখনো বেরোতে পারছি না। স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে স্মার্ট শিক্ষার বিকল্প নাই।
ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার এই উদ্ভাবক বলেন, ১৯৬৯ সালে শুরু হওয়া তৃতীয় শিল্প বিপ্লবে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপের উপর দাঁড়িয়েও টিএন্ডটি বোর্ড গঠন, ১৯৭৩ সালে আইটিইউ ও আইপিইউ-এর সদস্যপদ অর্জন এবং ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় ভূ্-উপগ্রহ কেন্দ্র চালুর মাধ্যমে ডিজিটাল শিল্প বিপ্লবের বীজ বপন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত কম্পিউটারের ওপর থেকে ভ্যাটট্যাক্স প্রত্যাহার, ৪টি মোবাইল অপারেটরকে অপারেশনের সুযোগ প্রদান, ভিস্যাটের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা চালু, দেশে বছরে ১০ হাজার প্রোগ্রামার তৈরির উদ্যোগ এবং জেআরসি টাস্কফোর্স গঠনের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর রোপন করা বীজটিকে চারাগাছে রূপান্তর করেন গত সাড়ে ১৪ বছরে সেই চারাগাছ মহিরূহে রূপ নিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা যত বেশি ডিজিটাইজ হচ্ছি ,ডিজিটাল অপরাধ ততবেশি বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডিজিটাল অপপ্রচার কিংবা অপরাধ প্রতিরোধে আমরা সক্ষমতা অর্জন করেছি।
আইইবির কম্পিউটার বিভাগের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মাহফুজুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইইবির সভাপতি প্রকৌশলী মো: আবদুস সবুর, ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান, খন্দকার মঞ্জুর মোর্শেদ, বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মাহমুদা নাজনীন এবং আইইবির সম্মানী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী এম মঞ্জুরুল হক মঞ্জু বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শামীম আক্তার মূল প্রবন্ধে ডিজিটাল রূপান্তর, ডিজিটাইজেশন, ডিজিটালাইজেশন এবং ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের প্রয়োজনীয়তা ও বাস্তবায়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
একে/