ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের ওপর বৈষম্য ও সহিংসতার দুষ্টচক্র অব্যাহত রয়েছে। চরমপন্থীদের প্রধান লক্ষ্যই থাকে এই সংখ্যালঘুদের বিনাশ। গত ৪ মে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৬ জন শিক্ষককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। জানা যায়, পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার আপার কুররাম তহসিলে দুটি পৃথক ঘটনায় একই স্কুলের বেশ কয়েকজন শিক্ষক নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় পুলিশ জানায়, অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় তরী মঙ্গলের স্টাফ রুমে প্রবেশ করে এবং সেখানকার শিক্ষকদের উপর গুলি চালায়। ঘটনার সময় সকল শিক্ষকই বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। তারা সেসময় পরীক্ষকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ অঞ্চলের সব হাসপাতালে জরুরি অবস্থা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।
এ ছাড়াও সিন্ধুর মিরপুর খাসে একটি আহমদিয়া মসজিদ ধ্বংস করা হয় এবং গিলগিট বাল্টিস্তানের আস্তোরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক যুবককে হত্যা করা হয়।
গত ২৬ এপ্রিল লাহোর প্রেসক্লাবের বাইরে মিথ্যা ব্লাসফেমি মামলা এবং জোরপূর্বক ধর্মান্তরের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকেরা বিক্ষোভ করে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ক্রমবর্ধমান সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের অবস্থার অবনতি ঘটেছে। প্রায়শই সরকার তাদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। আবার কিছু কিছু ঘটনায় সরকার নিজেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাগরিকদের উপর হামলা চালায়।
১৯৭৪ সাল থেকে পাকিস্তানে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের নাগরিকরা বৈষম্য ও হয়রানির শিকার হচ্ছে। কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং কর্মকর্তারা পাকিস্তানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিপীড়নের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলে পাকিস্তান সরকার এ অভিযোগ অস্বীকার করে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আনে।
আরো পড়ুন: ভারতে সংস্কৃত পরীক্ষায় মুসলিম ছেলের সাফল্য
পাকিস্তানে টিটিপি (তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান) এর প্রভাব বিস্তার নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মূল লক্ষ্যই হলো সসংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার। পাকিস্তানে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী হামলার জন্য দায়ী এই জঙ্গি সংগঠন। তাছাড়া এ দল খ্রিস্টান, হিন্দু, আহমদিয়াসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাগরিকদের উপরও হামলা চালায়। তারা ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা প্রদান করে অমুসলিমদের মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রধান শত্রু বলে মনে করে।
এ গোষ্ঠী প্রায়ই সংখ্যালঘুদের উপাসনালয়, বাড়ি ও প্রতিষ্ঠান লক্ষ্য করে বোমা হামলা, গুলিবর্ষণ ও অন্যান্য সহিংসতা চালায়। ২০১৩ সালে পেশোয়ারের একটি গির্জায় হামলার দায় স্বীকার করে টিটিপি। এ ঘটনায় ৮০ জনেরও বেশি লোক মারা যায়।
খবরটি শেয়ার করুন