সোমবার, ২৬শে আগস্ট ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১১ই ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চলচ্চিত্রে তিন দশক: কী লিখলেন ভক্ত-দর্শকদের শাবনূর!

বিনোদন ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৩:৪৩ অপরাহ্ন, ১৫ই অক্টোবর ২০২৩

#

ছবি-ফাইল

ঢাকাই সিনেমার একসময়ের জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূর। প্রয়াত নির্মাতা এহতেশামুর রহমান পরিচালিত ‘চাদঁনী রাতে’ সিনেমার মধ্য দিয়ে অভিনয়ে পথচলা শুরু করেন তিনি। প্রয়াত নায়ক সালমান শাহের সঙ্গে ‘তুমি আমার’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘তোমাকে চাই’, ‘সুজন সখী’সহ ১৪টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন শাবনূর। এই জুটির প্রায় প্রতিটি সিনেমা ছিল দর্শকপ্রিয়তার শীর্ষে।

অভিনয় ক্যারিয়ারের তিন দশক পূর্ণ করেছেন শাবনূর। দীর্ঘ এই পথচলায় তিনি স্মরণ করেছেন অভিনয়ের প্রথম দিনগুলোর কথা। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এই শিল্পের মানুষজন ও তার ভক্ত-দর্শকদের প্রতি।

চিত্রনায়িকা শাবনূর অনুরাগীদের কাছে ১৫ অক্টোবর তারিখটি মনে থাকার কথা। এটা বিশেষ তারিখও বলা যায়। কারণ, এ দিন মুক্তি পেয়েছিল ঢালিউডের জনপ্রিয় এই নায়িকার প্রথম সিনেমা। সেই হিসাবে আজ তার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারের তিন দশক পূর্ণ হলো।

সমাজ মাধ্যমের পাতায় দিনটির কথা মনে করে নাতিদীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন শাবনূর। জানিয়েছেন মনের অনুভূতি।

শাবনূর লিখেছেন, “সবার ভালোবাসায় চলচ্চিত্র জীবনের পথচলায় তিন দশক পার করে দিলাম, আলহামদুলিল্লাহ। স্বনামধন্য চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রয়াত এহতেশাম দাদুর ‘চাঁদনী রাতে’ ছবির মাধ্যমে ১৯৯৩ সালের ১৫ অক্টোবর আমার চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু হয়েছিল। প্রথম এই সিনেমায় সহশিল্পী ছিলেন নায়ক সাব্বির।”

চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে অনেক গুণী পরিচালকের সঙ্গে কাজের সুযোগের প্রমসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, “আমার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে অনেক গুণী পরিচালকের ছবিতে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘দুই নয়নের আলো’ (২০০৬) ছবিটি আমাকে এনে দিয়েছিল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের সম্মান।

তারকা জরিপে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বিভাগে ১০ বার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছি। এ ছাড়াও তিন বার বাচসাস পুরষ্কার লাভ করি। প্রবল দর্শক চাহিদার জন্যে প্রযোজক-পরিচালকরা আমাকে নিয়ে ছবি নির্মাণে অত্যন্ত আগ্রহী হওয়ায় আমার পক্ষে ১৫৮টি ছবির বিশাল মাইলফলক ছোঁয়া সম্ভব হয়েছে।”

নিজের কয়েকটি পছন্দের ও ব্যবসাসফল ছবির নাম উল্লেখ করে শাবনূর আর লিখেছেন, ‘যেসব চলচ্চিত্রে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি তার মধ্যে ব্যবসাসফল ও দর্শক-সমালোচক জরিপে অন্যতম সেরা ছবিগুলো হলো— স্বপ্নের ঠিকানা, স্বপ্নের পৃথিবী, স্বপ্নের নায়ক, তোমাকে চাই, তুমি আমার, আনন্দ অশ্রু, প্রেম পিয়াসী, সুজন সখী, জীবন সংসার, মহামিলন, বিক্ষোভ, চাওয়া থেকে পাওয়া, বিচার হবে, দুই নয়নের আলো, নিরন্তর, মোল্লা বাড়ির বউ, বিয়ের ফুল, নারীর মন, শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ, নিঃশ্বাসে তুমি বিশ্বাসে তুমি, সুন্দরী বধূ, ফুল নেব না অশ্রু নেব, প্রেমের তাজমহল, পৃথিবী তোমার আমার, কাজের মেয়ে, বস্তির মেয়ে, মধুর মিলন, বুক ভরা ভালোবাসা, স্বপ্নের বাসর, ও প্রিয়া তুমি কোথায়, স্বপ্নের ভালোবাসা, তোমার জন্য পাগল, চার সতীনের ঘর, আমার স্বপ্ন তুমি, আমার প্রাণের স্বামী, ১ টাকার বউ, তুমি শুধু তুমি, কঠিন প্রেম, ঢাকাইয়া পোলা বরিশালের মাইয়া ও স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ, প্রভৃতি। আসলে আমার অভিনীত প্রতিটা ছবিই আমার কাছে প্রিয়।’

সহশিল্পীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানি তিনি লিখেছেন, ‘সহশিল্পীদের মধ্যে প্রয়াত সালমান শাহর সাথে আমার জুটি ছিল সবথেকে বেশি দর্শকপ্রিয়। সালমানের অকাল মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মাত্র চার বছরে আমি ও সালমান সর্বাধিক ১৪টি দর্শক নন্দিত ও ব্যাবসাসফল ছবিতে জুটি বেঁধে কাজ করেছিলাম।

আমার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে আরও যেসব সহশিল্পীদের অবদান অনেক বেশি রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন— প্রয়াত মান্না ভাই, ওমর সানী, বাপ্পারাজ, আমিন খান, অমিত হাসান, রিয়াজ আহমেদ, ফেরদৌস আহমেদ, শাকিল খান ও শাকিব খান প্রমুখ।’

সবশেষ সবার প্রতি ঋণ স্বীকার করে শাবনূর লিখেছেন, ‘আল্লাহর রহমত ও সবার দোয়ায় চলচ্চিত্রে এখনও যথেষ্ট সম্মান নিয়েই বেঁচে আছি। আমার অভিনয় জীবনের দীর্ঘ ৩০ বছরের পথচলায় চলচ্চিত্রের সকল প্রযোজক, পরিচালক, সহশিল্পী, চিত্রনাট্যকার, নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী, ক্যামেরাম্যান ও ছবির সাথে জড়িত কলাকুশলীসহ সবার কাছে আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ ও ঋণী। 

আরো পড়ুন: এসআই পদে নিয়োগের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৯২১

বিশেষ করে আমার ছবির দর্শক ও অগণিত ভক্তদের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ও সমর্থনে আমি আজকের শাবনূর। সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত হবার পর থেকে সর্বক্ষণ উপলব্ধি করছি আমাকে নিয়ে তাদের ভালোবাসা আজও বদলায়নি, বরং বেড়েই চলেছে। আমার প্রতি আপনাদের অকৃত্রিম ভালোবাসা ভবিষ্যতেও আশাকরি অব্যাহত থাকবে। 

আমি সাংবাদিক ভাই-বোনদের প্রতিও বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই। 

আমার প্রতি আপনারা প্রায় সবাই যেভাবে সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব পোষণ করে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে আমাকে এতদূর এগিয়ে নিয়ে আসতে সাহায্য করেছেন তার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। আজকের এই বিশেষ দিনে রইলো সবার প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসা, সবার প্রতি অনেক শুভকামনা।

শাবনূর এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন। সেখানেই স্থায়ী তিনি। বিশেষ প্রয়োজনে বাংলাদেশে এসে কাজ শেষ করে আবার সেখানে ফিরে যান। যদিও মাঝে গুঞ্জন রটেছিল, শিগগিরই চলচ্চিত্রে ফিরবেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা সত্য হয়নি।

এসি/  আই.কে.জে

শাবনূর চলচ্চিত্রে তিন দশক

খবরটি শেয়ার করুন