শুক্রবার, ১৩ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৯শে ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নামাজ-রোজা করতে দেখে দস্যুরা অত্যাচার কম করেছে : নাবিক জয় মাহমুদ

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০২:২০ অপরাহ্ন, ১৬ই মে ২০২৪

#

ছবি : সংগৃহীত

‘জিম্মি করার পর দস্যুরা আমাদের ওপর অনেক অত্যাচার করত। যখন দেখেছে আমরা নিয়মিত নামাজ পড়ছি, রোজা রাখছি তখন তাদের মন নরম হয়। এরপর থেকে তারা নরম সুরে আমাদের সাথে কথা বলে এবং অত্যাচারের মাত্রা কমিয়ে দেয়।’

সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়ার অভিজ্ঞতা জানিয়ে এমনটা বলছিলেন এমভি আবদুল্লাহর নাবিক (ওএস) জয় মাহমুদ।

তিনি বলেন, নামাজ রোজা করতাম দেখে দস্যুরা আমাদের ওপর নির্যাতন বা অত্যাচার কম করেছে। তবে কখনও ভাবিনি আমরা জীবিত বাড়ি ফিরে আসব।

জয় মাহমুদের বাড়ি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায়। চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছানোর পর বুধবার (১৫ই মে) সকালে উপজেলার সালাইনগর দক্ষিণপাড়া গ্রামে ফেরেন জয়। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আনন্দে আপ্লুত জয়ের বাবা-মা। আর নাতিকে ফিরে পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে তার বৃদ্ধ দাদির মনেও।

গত ১২ই মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে এমভি আবদুল্লাহ এবং জাহাজে থাকা ২৩ নাবিককে জিম্মি করে সোমালিয়ান জলদস্যুরা। জয় ওই ২৩ নাবিকের একজন। জয়ের ফিরে আসার খবর ছড়িয়ে পড়লে আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে পাড়া-প্রতিবেশীরা তাকে এক নজর দেখতে তার বাড়িতে আসতে শুরু করেন। তার সহপাঠীরাও প্রিয় বন্ধুর ফিরে আসার খবরে জয়ের বাড়িতে ছুটে আসেন।

আরো পড়ুন : বাংলাদেশে গ্রামে ও শহরে পাখি কমে যাচ্ছে কেন?

জয় বলেন, দস্যুরা যখন আমাদের জিম্মি করে তখন আমরা ভাবিনি বেঁচে ফিরব। বন্দুকের নলের মুখে আমাদের থাকতে হয়েছে। প্রতিটি মুহূর্ত ছিল আতঙ্কের। প্রতিটি দিনই ছিল দীর্ঘ। বন্দিদশার ৩৩ দিনকে মনে হয়েছে ৩৩ বছর। প্রতিটি দিন কেটেছে আতঙ্ক ও কষ্টের মধ্যে। আমরা শুধু নামাজ পড়েছি আর আল্লাহর কাছে দোয়া করেছি।

তিনি বলেন, তবে আস্তে আস্তে দস্যুরা যখন স্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে তখন মনে একটু একটু করে সাহস পাই আমরা। ঈদের দিন ঈদ মনে হয়নি। ঈদে শুধু নামাজ পড়তে পেরেছিলাম। আর কিছু করতে পারিনি। এবার ঈদে আনন্দর ছিল না। এখন বাড়ি ফিরতে পেরে খুব আনন্দ লাগছে।

জয়ের মা আরিফা বেগম বলেন, আমার বুকের ধন বুকে ফিরে এসছে। এটাই বড় আনন্দ। এর চেয়ে আনন্দের আর কিছু হতে পারে না। আল্লাহ যে আমার মানিককে আমার বুকে ফিরিয়ে দিয়েছে এজন্য তার দরবারে লাখ লাখ শুকরিয়া জানাই।

জয়ের বাবা জিয়াউর রহমান বলেন, আমার ছেলে আজ সকালে বাড়ি ফিরেছে। আমরা খুব আনন্দিত। এজন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী, দেশবাসী, জাহাজ কর্তৃপক্ষ, মিডিয়াকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। মহান আল্লাহর কাছে শত কোটি শুকরিয়া জানাই।

জয়ের বৃদ্ধ দাদি বলেন, আমার নাতি বাড়ি ফিরে আসিছে তাই মনে শান্তি পাচ্ছি। কত যে কান্দিচি তা বলে বুঝানো যাবে না। আল্লাহ আমার নাতিকে দীর্ঘজীবন দান করুক। এটাই আমার চাওয়া।

এস/ আই.কে.জে/


নাবিক জলদস্যু

খবরটি শেয়ার করুন