সোমবার, ১লা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৭ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিমের খোসা থেকে তৈরি সারের ব্যবহার

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০২:৪০ অপরাহ্ন, ২৭শে মার্চ ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

সুন্দর একটা বাগান পেতে হলে সঠিক পদ্ধতিতে পরিচর্যা একান্ত আবশ্যক। কিন্তু সমস্যা হলো এ বিষয়ে আমরা সবাই আগ্রহী হলেও ঠিক কীভাবে কোন সার প্রয়োগ করব তা অনেকেরই অজানা। ছাদ বাগান, মাঠ বাগান বা বাণিজ্যিক বাগানের গাছে বা টবের গাছে ডিমের খোসা বা খোসার তৈরি সারের ব্যবহার সম্পর্কে জানাবো।

গাছের ম্যাক্রো নিউট্রিয়েন্টস এর চাহিদা পূরণ করে ডিমের খোসা। ডিমের খোসার মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম। গাছের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম কার্বনেট পাওয়া যায় এই উপকরণ থেকে। এ ছাড়া ডিমের খোসায় আছে আয়রন, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক, ফ্লোরিন, ক্রোমিয়াম ও মলিবডেনাম। ক্যালসিয়ামের অভাবে ফুল, কাণ্ড ও শিকড়ের বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয়। এর অভাবে বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিকৃতি, পাতা ও ফলে কালো দাগ দেখা দেয়। পাতার ধার ঘেঁষে হলুদ রঙ দেখা দিয়ে থাকে।

ডিমের খোসা দিয়ে কম্পোস্ট সার বা জৈব সার তৈরি করতে প্রথমেই ডিমের খোসাকে ব্যবহার উপযোগী করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথমে ডিমের খোসা সংগ্রহ করতে হবে, সংগ্রহকৃত ডিমের খোসা ভালভাবে শুকিয়ে নিতে হবে।

শুকানো ডিমের খোসাগুলোকে গুঁড়ো করে পাউডারে রূপান্তর করতে হবে। সেক্ষেত্রে ব্লেন্ডার, মিক্সচার ব্যবহার করা যেতে পারে বা জাতুনিতে পিশেও তৈরি করা যেতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে খোসাগুলো যেন ভালভাবে মিহি হয়, দানা দানা যেন না থেকে যায়। বড় দানার চেয়ে পাউডার দ্রুত মাটির সাথে মিশতে পারে, ফলে সহজেই তার মিনারেলগুলো গাছের গ্রহণোপযোগী হয়ে উঠে। দানা দানা থেকে গেলে এগুলো ব্যবহারে বা গাছে প্রয়োগের পর তা মাটির সাথে মিশতে অনেক সময় লাগে, পোকার আক্রমণ দেখা দিতে পারে। তাই এমন পাউডার তৈরি করতে হবে যাতে পিঁপড়ে বা পোকা-মাকড় তাতে আক্রমণ করে সেগুলোকে বহন করে নিয়ে যেতে না পারে।

ডিমের খোসা থেকে তৈরিকৃত ডাস্ট বা সার যেকোনো ধরনের গাছে ব্যাবহার করা যায়।

গাছে বা টবে ডিমের খোসার প্রয়োগের পরিমাণ-

৮ ইঞ্চি টবে ১ টেবিল চামচ, ১০ ইঞ্চি টবে ১ টেবিল চামচ, ১২ ইঞ্চি টবে ১.৫ টেবিল চামচ

ডিমের খোসার সার ব্যবহার পদ্ধতি

টবের মাটিতে ডিমের খোসার সার প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রথমে টবের মাটিকে নিড়ানী দিয়ে বা খুঁচিয়ে আলগা করে দিতে হবে। তারপর পরিমাণ মত ডিমের খোসার সার টবের চারিদিকে খুঁচানো মাটির উপর ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।

ডিমের খোসার গুঁড়া পানি দিয়ে পাতলা করে গাছের নীচে ব্যবহার করতে পারি। এই সার টমেটো এবং বেগুনের মতো শাকসব্জিতে পানিজনিত রোগ এবং পাতা হলুদ বর্ণ ধারণ করা- এর মতো রোগের চিকিৎসা করতে কার্যকর। এছাড়া এই কম্পোস্ট গোলাপ গাছে প্রয়োগ করলে ফুল ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। গাছ বৃদ্ধির প্রাথমিক পর্যায়ে এই পদ্ধতিটি প্রয়োগ করা যেতে পারে। টবে মাটির মিশ্রণ প্রস্তুত করার সময় ১-৪ ডিমের খোসার চূর্ণ দিয়ে একটি গাছ লাগানো যেতে পারে।

এগ শেল বা ডিমের খোসা সিদ্ধ পানি গাছের দ্রুত বর্ধনশীলতার জন্য পৃথিবীর অন্যতম এক সার। এক লিটার পানিতে ৫টি ডিমের খোসা সিদ্ধ করুন। এই পানি উষ্ণ আবহাওয়ায় ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত রাখুন। পরের দিন মিশ্রণটি মাটিতে প্রয়োগ করুন অথবা গাছে স্প্রে করতে পারেন। এতে আরো বেশি ফল পাওয়া যায়। যদি ফুলের গাছ হয় তবে এর প্রয়োগে আরো বেশি ফুল পাবেন।

আরো পড়ুন: এবার ৩০০ কোটি টাকার পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন হবে ফরিদপুরে

এসি/ আই. কে. জে/ 

ডিমের খোসা সার

খবরটি শেয়ার করুন