শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিবিপ্রধান

৩ মাসে ১৪৩ রোহিঙ্গার হাতে ভুয়া পাসপোর্ট, গ্রেপ্তার ২৩

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:১৯ অপরাহ্ন, ২৬শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

গত তিন মাসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১৪৩ রোহিঙ্গা নাগরিককে ভুয়া পাসপোর্ট করে দিয়েছে একটি চক্র। 

দেশের বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে এসব পাসপোর্ট করে দেওয়া শক্তিশালী চক্রের সদস্য, রোহিঙ্গা নাগরিক এবং দুজন আনসার সদস্যসহ ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) দলের লালবাগ বিভাগ।

সোমবার (২৬শে ফেব্রুয়ারি) মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশিদ।

এই চক্রটি শুধু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নয়, দাগি আসামি ও অপরাধীদেরও পাসপোর্ট করে দেয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই কাজে চক্রটি তিন ধাপে কাজ করে। প্রথম ধাপে একটি চক্র কক্সবাজার, বান্দরবান এলাকা থেকে প্রথমে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষদের সংগ্রহ করে। তারপর দ্বিতীয় ধাপে তাদের জন্মসনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজ করে আরেকটি চক্র। সর্বশেষ চক্রটি বানিয়ে দেয় পাসপোর্ট।

ডিবি জানায়, রাজধানীর আগারগাঁও, মোহাম্মদপুর, যাত্রাবাড়ী ও বাড্ডায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে ২৩শে ফেব্রুয়ারি বিপুল পরিমাণ পাসপোর্টসংক্রান্ত ডকুমেন্টস, পাসপোর্ট এবং কম্পিউটারসহ তিন রোহিঙ্গা নারী ও পুরুষসহ চক্রের ২০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ডিবি দল। গ্রেপ্তারদের হেফাজত থেকে মোট ১৭টি পাসপোর্ট, ১৩টি এনআইডি, ৫টি কম্পিউটার, ৩টি প্রিন্টার, ২৪টি মোবাইল ফোন এবং পাসপোর্ট তৈরির সংশ্লিষ্ট শত শত দলিলপত্র জব্দ করেছে ডিবি।

গ্রেপ্তারের পর তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে ডিবি দাবি করেছে, ছয় ঘণ্টার মধ্যে জন্মসনদের জন্য চক্রটি ৫ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা নেয়। তিন দিনের মধ্যে এনআইডি করে দেওয়ার জন্য ২৫ হাজার টাকা এবং পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য ১ লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা নিয়ে থাকে।

আরও পড়ুন: কনসার্টে তরুণী ধর্ষণ, মূলহোতা দিহান গ্রেফতার

ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ বলেন, গ্রেপ্তার দালালদের মোবাইলে শত শত পাসপোর্ট করে দেওয়ার প্রাসঙ্গিক সফট ডকুমেন্টস, ডেলিভারি স্লিপ পাওয়া গেছে। যার মধ্যে গত তিন মাসে রোহিঙ্গাদের জন্য করা ১৪৩টি পাসপোর্ট ইতিমধ্যে তারা সরবরাহ করেছে। ২০১৯ সাল থেকে চক্রটি রোহিঙ্গাদের, বাংলাদেশি দাগি অপরাধীদের ভিন্ন নাম ও ঠিকানায় হাজার হাজার পাসপোর্ট করে দিয়েছে। চক্রটি ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, রংপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ ও বরিশাল জেলার ঠিকানা ব্যবহার করে জন্মসনদ ও এনআইডি বানায়। তারপর বানায় পাসপোর্ট।

পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে এসবি পুলিশ ভেরিফিকেশনের কাজ করে থাকে, তখন কেন এই জালিয়াতি ধরা পড়ে না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ধরা পড়বে কী করে? একজনের হাতে জন্মসনদ, এনআইডি তুলে দেওয়ার পর সে যখন জরুরি ভিত্তিতে পাসপোর্ট করতে দেবে, তখন তো পুলিশ দেখে মোবাইল নম্বর। সেই নম্বরে যোগাযোগ করলে সে সব বলে দেয়, কারণ তাকে তো সব শেখানো হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ বর্তমান ঠিকানাতে যায়। রোহিঙ্গা নাগরিক স্থায়ী ঠিকানা কক্সবাজার দিলেও বর্তমান ঠিকানা সে ব্যবহার করে।

পাসপোর্ট জালিয়াতি কিংবা অবৈধভাবে পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

এসকে/ 

রোহিঙ্গা ভুয়া পাসপোর্ট

খবরটি শেয়ার করুন