সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৪শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাপানিদের দীর্ঘ আয়ুর গোপন রহস্য জানেন কি?

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১২:৩৫ অপরাহ্ন, ২১শে জুন ২০২৪

#

ছবি : সংগৃহীত

প্রত্যেকটা মানুষের জানা, মৃত্যু অনিবার্য। তবুও মানুষের বাঁচার আশা অনেক দিনের। আশা থাকলেই কি বাঁচা যায়? কারণ ‘জন্মিলে মরিতে হবে’। তবে দেশে দেশে মানুষে মানুষে মৃত্যুর বয়সের পার্থক্য দেখা যায়। কোনো কোনো দেশে মানুষের গড় আয়ু ৪৬-৫৫ আবার কোনো কোনো দেশে ৮২-৮৫। ২০২৪ সালে জাপানিদের গড় আয়ু ৮৫.১৫ বছর। অর্থাৎ জাপানিরা নীরোগভাবে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকেন। জাপানিদের দীর্ঘ আয়ুর পেছনের গোপন রহস্য কী জানেন? 

জাপানিদের দীর্ঘ আয়ুর পেছনে কাজ করছে তাদের নিয়ন্ত্রিত লাইফস্টাইল ও পরিমিত খাদ্যাভ্যাস। জেনে নিন জাপানিরা কোন খাবারগুলো নিয়মিত খেয়ে অনেকদিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকেন: 

জাপানিরা ডায়েটে যা রাখেন

জাপানিরা তাদের খাদ্য তালিকায় সামুদ্রিক খাবার, সয়াবিন, ফার্মান্টেড খাবার, চা ও মাছ রাখেন। তাদের খাদ্যতালিকায় লাল মাংস, চিনি, আলু, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার ও ফল থাকে না বললেই চলে। এজন্য তাদের খাদ্যতালিকাকে  পৃথিবীর সেরা সুষম খাদ্যের তালিকা বলা হয়। সামুদ্রিক শৈবাল বা সি-উইড, সয়া ও অন্যান্য শস্যদানা গাঁজিয়ে বানানো মিসো জাতীয় খাবার খেয়ে জাপানিরা পান সুন্দর ত্বক, দীর্ঘ আয়ু। কারণ সি-উইডে ভরপুর মিনারেল, ভিটামিন ও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। তারা শর্করা হিসেবে লাল আলু বা মিষ্টি আলু খান। মিষ্টি আলুতে জটিল শর্করা আছে। এজন্য এটি খেলে দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকে।   

আরো পড়ুন : ত্বীন ফলের ১৩টি গোপন রহস্য!

সয়া দিয়ে তৈরি খাবার

সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে জাপানিরা ভরসা রাখেন সয়া দিয়ে তৈরি খাবারের ওপর। সয়া দিয়ে তারা সয়া-দুধ, মিসো, টফু, ন্যাটো (ফার্মেন্টেড সয়াবিন) তৈরি করেন। সয়াতে আছে উৎকৃষ্ট পরিমাণের কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। এ খাবারে যে প্রোটিন পাওয়া যায় তা শক্তিবৃদ্ধি করতে এবং পেশী গঠনে সহায়তা করে। 

ধীরগতিতে খাবার খান

ভালোভাবে চিবিয়ে খাবার খেতে ভালোবাসেন জাপানিরা। সেইসঙ্গে ধীরে ধীরে খাবার খান। খাবার খাওয়ার সময় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গল্পও করেন। এতে তাদের পারিপারিক একাত্বতা বাড়ে। সেই সাথে ভালো করে চিবিয়ে খাবার খেলে হজমও ভালো হয়। 

পরিমাণে অল্প খাবার খান

আমাদের দেশের মানুষেরা সামনে যা পান তা যেন গপাগপ খেয়ে ফেলেন। কিন্তু জাপানিরা এ ব্যাপারে খুব সচেতন। তারা ভরপেট খাবার খান না। এর বদলে যতটুকু না খেলেই নয়, ঠিক ততটুকু খাবার খান। আর এজন্যই তাদের শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি জমা হয় না। স্বাস্থ্য ঠিক থাকে। 

মাচা চা

অন্যান্য খাবার কম খেলেও, চা বেশি পান করেন জাপানিরা। তারা তাদের মাচা চা ভালোবেসে পান করেন। আর এ চায়ের পুষ্টিগুণ অনেক। এ চায়ে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট; যা ত্বকের জন্য উপকারী। 

সকালের খাবার এড়িয়ে যান না

সকালের খাবার হলো দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার, এমনটাই বিশ্বাস করেন জাপানিরা। সকালে তারা ফাস্টফুড, ব্রেড বা এ জাতীয় খাবার খান না। স্টিমড রাইস, রাইজ পরিডজ বা জাউভাত, ভাজা কিংবা সেদ্ধ মাছ খেয়ে সকাল শুরু করেন তারা। আর এতেই সুস্থ থাকেন। সেদেশের রেস্টুরেন্টগুলোতেও পাউরুটি, ব্রেড জাতীয় খাবার দেখা যায় না। কেননা পাউরুটি ও অন্যান্য রুটি রিফাইনড ফ্লাওয়ার দিয়ে তৈরি হয়; যা স্বাস্থ্যকর নয়। এজন্য রেস্টুরেন্টগুলোতে প্রতিটি মেইন ডিশের সঙ্গে স্টিমড রাইস বা রাইস আইটেম থাকে।  

রান্নার পদ্ধতি

খুব বেশি ভাজা খাবার খান না জাপানিরা। তারা স্টিমড, ফার্মেন্টেড, অল্প সময়ে রান্না হয় এমন খাবার খেতে ভালোবাসেন। খুব অল্প তেলে রান্না করা খাবার খান তারা। 

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

এস/  আই.কে.জে

জাপানিজ আয়ু

খবরটি শেয়ার করুন