শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৪ঠা আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা : জনজীবনে শান্তি ফিরে আসবে

উপ-সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ১২:৪৪ অপরাহ্ন, ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০২৪

#

ছবি - সংগৃহীত

সেনাবাহিনীকে বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, মেয়াদ ৬০ দিন অর্থ্যাৎ দুই মাস। এটি নিঃসন্দেহে সঠিক ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জ ছিল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা। কিন্তু সারা দেশে থানাগুলো কার্যকর না থাকা এবং বিভিন্ন দলীয় পরিচয়ে একশ্রেণির দুর্বৃত্তদের কারণে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। এমন সময় সরকারের এই সিদ্ধান্তে জনজীবনে স্বস্তি ফিরে আসবে।

সরকারি চাকরিতে কোটা আন্দোলন শুরু হয় জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে। আন্দোলন ঘিরে যখন সহিংসতা বাড়তে থাকে তখন ১৯শে জুলাই কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েন করে তৎকালীন সরকার। কিন্তু কারফিউ উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পরে সেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে পুরো দেশজুড়ে। বিক্ষোভ ও সহিংসতা বাড়তে থাকলে এক পর্যায়ে আন্দোলন সরকার পতন আন্দোলনে রূপ নেয়। পরে ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান।

সরকার পতনের পর দেশজুড়ে থানায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। অস্ত্র, গোলাবারুদ লুট করা হয়। অনেক পুলিশ শারীরিক আক্রান্ত ও বেশ কয়েকজন নিহত হন। পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়। পুলিশ এখনো স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে আসতে পারেনি। এসব কারণে দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটে। শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক বিক্ষোভ, বিভিন্ন স্থানে দখল-চাঁদাবাজি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

নতুন সরকারের প্রথম থেকেই কারফিউ না থাকলেও দেশজুড়ে সেনা মোতায়েন ছিল। পুলিশের অনুপস্থিতিতে শুরুর দিকে থানায়-থানায় দায়িত্ব পালন করেন সেনা সদস্যরা। কিন্তু তাদের হাতে নির্বাহী ক্ষমতা না থাকার কারণে এতদিন ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেননি। এমন প্রেক্ষাপটে আগে থেকেই দেশজুড়ে মোতায়েন থাকা সেনা কর্মকর্তাদের বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।

ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭টি ধারা প্রয়োগের সুযোগ রেখে সেনা কর্মকর্তাদের এই ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ এবং ১৪২ ধারার অধীনে তাদের কার্যক্রম চলার কথা বলা হয়েছে।

এসব ধারায় গ্রেপ্তার ও গ্রেপ্তারের আদেশ, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করা, তল্লাশি পরোয়ানা জারি, অসদাচরণ ও ছোটোখাটো অপরাধের জন্য মুচলেকা আদায়, মুচলেকা থেকে অব্যাহতি, বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ, স্থাবর সম্পত্তি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বাধা অপসারণ এবং জনগণের ক্ষতির আশঙ্কা করলে সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিভিন্ন ক্ষমতা পাবেন সেনা কর্মকর্তারা।

আই.কে.জে/

সেনাবাহিনী

খবরটি শেয়ার করুন