শনিবার, ১৪ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গুমের অপসংস্কৃতি বন্ধ হোক

সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০৫:২২ অপরাহ্ন, ৩০শে আগস্ট ২০২৪

#

ছবি : সংগৃহীত

২০০৬ সালের ডিসেম্বরে গুমবিরোধী সনদটি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। ২০১০ সালে তা বাস্তবায়ন শুরু হয়। তখন মাত্র ৩২টি দেশ এটিতে স্বাক্ষর করে। এই সনদের লক্ষ্য গুম বন্ধের পাশাপাশি এই ধরনের অপরাধের জন্য দায়মুক্তি বন্ধ করা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তা দেওয়া।

আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসটি বিশ্বে গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে পালিত হয়ে আসছে। ২০১১ সাল থেকে প্রতি বছর ৩০শে আগস্ট গুম হওয়া মানুষগুলোকে স্মরণ এবং সেই সঙ্গে তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোর জন্য দিবসটি পালন করা হচ্ছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তথ্য মতে, লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে ১৯৭০ ও ৮০-র দশকে কেবল অবৈধ অস্ত্র কারবারি ও ভিন্ন মতাবলম্বীরাই গুম হতেন। কিন্তু বর্তমানে রাজনৈতিক কারণেও বিভিন্ন দেশে গুম হওয়ার ঘটনা ঘটছে।

জাতিসংঘের গুমবিরোধী সনদে গুমকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।এই সনদের যথাযথভাবে প্রয়োগ হচ্ছে কি না, সেটি দেখভালের জন্য জাতিসংঘের ১০ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি কাজ করে। ঐ কমিটি পক্ষভুক্ত রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিবেদন যাচাই করে থাকে। সনদের ৩৩ অনুচ্ছেদে বলা আছে, সনদের পক্ষভুক্ত কোনো দেশে যদি গুমের ঘটনা ঘটে, তবে ঐ দেশের পরিস্থিতি দেখার জন্য কমিটির সদস্যরা সফর করবেন এবং রিপোর্ট দেবেন।

গুমের অপসংস্কৃতি থেকে বের হওয়ার জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত ২৯শে আগস্ট গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষর করেছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনূস এই সনদে সই করেন।

গুমবিরোধী সনদে স্বাক্ষর করার পর উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য বিশেষ করে মানবাধিকার কর্মীদের জন্য একটি বড় মাইলফলক। বাংলাদেশে ৭০০ জনের ওপরে মানুষ এখন পর্যন্ত গুমের কারণে নিখোঁজ হয়ে আছেন। আর যেন কেউ কখনো নিজের ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে কোনো বাহিনীকে দিয়ে কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে নাগরিকদের গুম করতে না পারে। এ জন্য এই সনদে স্বাক্ষর করা হয়েছে।’

এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৭৫টি দেশ এই সনদে যুক্ত হয়েছে।বাংলাদেশ নতুনভাবে যুক্ত হলো।দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ এই সনদে আগেই স্বাক্ষর করেছে।অন্যদিকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্যের মধ্যে শুধু ফ্রান্স এটিতে স্বাক্ষর করেছে।

গুমবিরোধী সনদে স্বাক্ষর একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। গুমের অপসংস্কৃতি বন্ধ হোক-- এটাই জাতির প্রত্যাশা।

আই.কে.জে/

মতামত

খবরটি শেয়ার করুন