রবিবার, ১৫ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাইরে খাওয়ার দিন আজ

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৩:০৭ অপরাহ্ন, ৩১শে আগস্ট ২০২৪

#

ছবি : সংগৃহীত

শৈশবে চড়ুইভাতি খেলেনি এমন মানুষ নেই বললেই চলে। খোলা মাঠ, নদীর তীর কিংবা ছায়াঢাকা গাছের নিচে পাড়ার শিশু-কিশোরদের প্রীতিভোজনোৎসব। অঞ্চলভেদে টুলাপানি, ভুলকাভাতসহ নানা নামে পরিচিত এই উৎসব, যা কালের বিবর্তনে কমে গেলেও একেবারে হারিয়ে যায়নি। গ্রামাঞ্চলে চড়ুইভাতি উৎসবের দেখা মেলে এখনো। হাঁপিয়ে ওঠা শহুরে মানুষও সময়-সুযোগ পেলেই সদলবলে বেরিয়ে পড়ে। নিবিড় কোনো বনাঞ্চল বা পাহাড়ের গায়ে চলে রান্নাবান্না আর খাবারের আয়োজন।

অবশ্য আদুরে ‘চড়ুইভাতি’ শব্দটি এখন হয়ে গেছে পিকনিক বা বনভোজন। তবে দুয়ের মধ্যে তফাতও আছে। সাধারণত পাড়া–মহল্লার ছেলেপুলেরা মিলে বাড়ির আশপাশেই চড়ুইভাতির আয়োজন করে থাকে। কেউ বাড়ি থেকে নিয়ে আসে চাল, কেউ ডাল। কেউ নিয়ে আসে ডিম, মুরগি বা অন্য কোনো উপকরণ। আর বনভোজন সাধারণত দূরে কোথাও, কোনো পূর্বনির্ধারিত পিকনিক স্পটে আয়োজন করা হয়ে থাকে। তাতে প্রত্যক্ষভাবে উপকরণ-উপাদানের যোগ নেই। চাঁদা দিয়ে অংশগ্রহণ করতে হয়।

চড়ুইভাতি, বনভোজন কিংবা অন্য কিছু, নাম যা-ই হোক, ব্যাপারটা কিন্তু একই—বাইরে খাওয়া। মানবসভ্যতার শুরুতে মানুষ বাইরেই খেতো। গৃহের ধারণা এলো যখন, অন্য সবকিছুর মতো ভোজন পর্বও ঠাঁই পেলো ঘরে। আধুনিক সভ্যতায় মানুষ খাবার প্রস্তুত ও খাবার গ্রহণ, উভয়ের স্থান বলতে ঘরকেই বোঝে। আধুনিক আবাসনব্যবস্থায় অপরিহার্যভাবেই আলাদা করে ‘রান্নাঘর’ ও ‘ভোজনকক্ষ’ থাকে।

আরো পড়ুন : যে শাক খেলে কমবে রক্তচাপ

তবে ভোজনের ধারণা ঘরে ঢুকে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যেন বাইরে খাওয়া ব্যাপারটি রীতিমতো উৎসবপূর্ণ হয়ে ওঠে। ফরাসি বিপ্লবপরবর্তী (১৭৮৯–১৭৯৯) সময়ে যখন রাজকীয় পার্কগুলো জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায়, তখন বিভিন্ন সামাজিক সম্মিলনের জন্য সেখানে জড়ো হতে থাকে মানুষ। তারা বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসত এবং সবাই মিলে ভাগাভাগি করে খেতো। এই আনন্দপূর্ণ ভোজনোৎসবকে তারা বলত ‘আল-ফ্রেসকো ডাইনিং’। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে উঠতে থাকে প্লেজার গার্ডেন বা আনন্দ উদ্যান। তারও আগে জার্মানিতে গড়ে ওঠে ‘বিয়ার গার্ডেন’। এসব অবকাশযাপনের স্থানে লোকজন পরিবারসমেত ঘুরে বেড়াত, খেলাধুলা করত; সবশেষে থাকত আহার পর্ব। আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থা যখন উন্নত হলো, মানুষ তখন দূরদূরান্তেও বাইরে খাওয়ার আয়োজন শুরু করলো। বিশেষ উপলক্ষ, বার্ষিক পুনর্মিলন কিংবা কোনো উপলক্ষ ছাড়াই মানুষ আজকাল প্রায়ই বাইরে খেতে বের হয়। বাইরে খাওয়ার বাহারি সুযোগ, আয়োজনের রকমফেরও রয়েছে এখন। সাধারণ রেস্তোরা, ছাদ-রেস্তোরা, বুফে, ধাবা প্রভৃতি যেমন আছে, তেমনই বারবিকিউয়ের মতো নানা রকম খাবারের আয়োজনও আছে।

আজ ৩১শে আগস্ট, বাইরে খাওয়ার দিন। দেশীয় প্রেক্ষাপটে বলা যেতে পারে ‘চড়ুইভাতি দিবস’। দিনটির উৎপত্তি সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু জানা যায় না। তবে ন্যাশনাল ডে ক্যালেন্ডার ডটকমের তথ্য অনুযায়ী, অন্তত ২০০৬ সাল থেকে এটি পালিত হয়ে আসছে। আনন্দ ও প্রীতিপূর্ণ এই দিবস পালন করতে পারেন। পরিবারের সদস্য কিংবা বন্ধুবান্ধব নিয়ে আয়োজন করতে পারেন দুর্দান্ত চড়ুইভাতি উৎসব।

সূত্র : ডেজ অব দ্য ইয়ার ও ন্যাশনাল ডে ক্যালেন্ডার

এস/কেবি

বনভোজন

খবরটি শেয়ার করুন