বুধবার, ১৮ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৩রা আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা : ধারা অনুযায়ী যা যা করতে পারবে সেনাবাহিনী *** ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পেলো সেনাবাহিনী *** অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না : তারেক রহমান *** ৪৩তম বিসিএস : স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও গোয়েন্দা প্রতিবেদনের পরই নিয়োগ *** নিহত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, আশুলিয়ায় শনিবার থেকে বন্ধ কারখানা চালু *** ঢাকায় একদিনে ট্রাফিক আইনে ১৫২ মামলা, জরিমানা ৭ লাখ টাকা *** সাবেক রেলমন্ত্রীকে রিমান্ডে পাঠানোর পর আদেশ স্থগিত *** কোন স্ট্যাটাসে দিল্লিতে শেখ হাসিনা, জানে না অন্তর্বর্তী সরকার *** বাংলাদেশকে আরও ২ বিলিয়ন ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক *** জীবিকা সংকটে শান্তিপ্রিয় খুমিরা || দরকার বিত্তবানদের সহযোগিতা

রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত জনবান্ধব পুলিশের প্রত্যাশা

সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ১২:২৭ অপরাহ্ন, ১১ই আগস্ট ২০২৪

#

ছবি - সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর পুলিশের কনস্টেবল থেকে শুরু করে পদস্থ কর্মকর্তারা আত্মগোপনে চলে যান। ফলে গত কয়েকদিন দেশে পুলিশের কোনো উপস্থিতি ছিল না। এতে বিভিন্ন স্থানে এক ধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। রাজধানীসহ সারা দেশে রাত নামলেই ডাকাত আতঙ্কে ভোগেন মানুষ। তাই রাতভর পাহারা দিচ্ছে ছাত্র-জনতা। ডাকাতির সংবাদ পেলে এলাকাবাসী ফোন করছেন সেনাবাহিনী ও বিজিবিকে। বর্তমানে পুলিশ সদস্যদের নিরাপত্তায় থানায় থানায় মোতায়েন করা হয়েছে সেনা ও আনসার সদস্য। এতে আতঙ্ক কাটতে শুরু করছে পুলিশ সদস্যদের।

বস্তুত গত কয়েকদিন নজিরবিহীন নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছিল পুরো দেশ। অবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে পুলিশের উচ্চপদস্থ কিছু পদে পরিবর্তন আনা হয়। মাঠপর্যায়ের সদস্যদের মধ্যে আস্থা ফেরাতে ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টারা বৃহস্পতিবার (৮ই আগস্ট) রাতে শপথগ্রহণ করেন। লক্ষ করা গেছে, এরপর থেকেই স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। জানা যায়, শুক্রবার (৯ই আগস্ট) রাজধানীর ২৯টি থানার কার্যক্রম চালু হয়েছে। আরও জানা যায়, ১১০টি মেট্রোপলিটন থানার মধ্যে ৭০টি এবং রেঞ্জের ৫২৯টি থানার মধ্যে ২৯১টি-মোট ৩৬১ থানার কার্যক্রম চালু হয়েছে। থানাগুলোতে সেনা সদস্যরা থাকায় কর্মরতদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা কমেছে। তবে আতঙ্ক পুরোপুরি কাটেনি। শুক্রবারও রাজধানীর সড়কে ট্রাফিক পুলিশের কোনো সদস্য চোখে পড়েনি। শিক্ষার্থীদের ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের কারণেই সড়কে বিরাজ করছে সুশৃঙ্খল অবস্থা।

সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমন করতে গিয়ে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের কারণে পুলিশের ওপর বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে মানুষ। এক পর্যায়ে জনআক্রোশের শিকার হয়ে এ বাহিনীর বহু সদস্য হতাহত হন। থানা ও পুলিশের কাজে ব্যবহৃত যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। বহু জায়গায় অস্ত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ও নথি লুট হয়েছে। ফলে দেশে পুলিশি ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। বর্তমানে থানায় পুলিশ সদস্যদের কেউ কেউ সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছেন। সম্ভবত এর নেপথ্যেও কাজ করছে আতঙ্ক। সেই আতঙ্ক দূর করার সহজ উপায় হলো সেবা দিয়ে জনআস্থা অর্জন করা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের আচরণগত সমস্যার কারণেও মানুষের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ সবকিছুর বহিঃপ্রকাশ একসঙ্গে ঘটেছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে। সম্প্রতি পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের এক সভায় এ বাহিনীর একজন সদস্য বলেছেন, পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের খেয়ালখুশিমতো নির্দেশদানের কারণেই পুলিশের এ দশা হয়েছে। সভায় বক্তারা বলেছেন, তারা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে আগ্রহী। পুলিশ রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে পারলে দ্রুত তারা মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারবে। এ বাহিনীর সদস্যরা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে পারলে আশা করা যায়, আগামীতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। পুলিশকে জনবান্ধব বাহিনী হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে পুলিশ আইনেও সংস্কার করা দরকার।

আই.কে.জে/

জনবান্ধব পুলিশ

খবরটি শেয়ার করুন