ছবি: সংগৃহীত
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জনাব মো. মহিববুর রহমানের বাংলাদেশ সচিবালয়ের দপ্তরে মঙ্গলবার (২৩শে এপ্রিল) ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা ক্যাথরিন কুকসহ তার সাথে আগত প্রতিনিধিগণ সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
প্রতিনিধিগণের মধ্যে হিউম্যানেটেরিয়ান এডভাইজার জনাব কৃষ্ণান নাইর, ব্রিটিশ হাই কমিশনারের প্রোগ্রাম ম্যানেজার জনাব মুসাউইর আহমেদ ব্রিটিশ হাই কমিশনারের সাথে ছিলেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব কামরুল হাসান এনডিসি, অতিরিক্ত সচিব জনাব কে এম আব্দুল ওয়াদুদ, জনাব হাসান সারওয়ার, জনাব এবিএম শফিকুল হায়দার, জনাব মো. রবিউল ইসলাম মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর পিএস জনাব মো. আবুল কালাম তালুকদার ও এপিএস জনাব মো. আসিফ হাসান এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সৌজন্য সাক্ষাতে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুক রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের গৃহিত উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এ ইস্যু নিয়ে ব্রিটিশ সবসময়ই বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়ে আসছে। রোহিঙ্গাদের বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ব্রিটিশ হাইকমিশনার বাংলাদেশে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের কর্মমুখী প্রশিক্ষণ ও আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে তাদের জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা করার বিষয়টি তুলে ধরেন।
প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান ব্রিটিশ হাইকমিশনারের কথা শুনেন এবং তাদের এ উদ্যোগকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা ইস্যুতে অত্যন্ত আন্তরিক হয়ে তাদের জন্য ভাসানটেকে ৩ একর খাস জমিতে রোহিঙ্গাদের প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা নিয়েছেন।
মহিববুর রহমান আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রোহিংগাদের অবস্থা ও মানবিকতার দিক বিবেচনা করেই তাদেরকে ভাসানটেকে প্রতিস্থাপন করেছিলেন। কিন্তু তাদের বিশাল জনগোষ্ঠীর দায়ভার সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাহ করা এখন একটা চ্যালেঞ্জিং ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুর একটি স্থায়ী সমাধানের জন্য আমাদের সরকার অত্যন্ত আন্তরিক রয়েছে।
তিনি বলেন, ১ মিলিয়ন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী দিন দিন বেড়েই চলেছে। আমাদের ১৭ কোটি মানুষের সাথে তাদের লাইভলিহুড বাংলাদেশের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। বর্তমান গাজা ও বৈশ্বিক অন্যান্য ইস্যুর সাথে যেন রোহিঙ্গা ইস্যুটি বিলীন হয়ে না যায়। আমি চাই, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রোহিঙ্গা ইস্যু এখন আলোচনার মুখ্য ইস্যু হয়ে দাঁড়াক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের দুর্যোগ প্রতিরোধে ৫৫ হাজার ভলান্টিয়ার কাজ করছে। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে এসব ভলান্টিয়াররা রোহিঙ্গাদের আশ্রয়স্থলগুলোতে স্বেচ্ছা শ্রম দিচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত আন্তরিক ও সাহায্য সহযোগিতা মনমানসিকতা প্রবণ। দুর্যোগকালে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ৫৫ হাজার ভলান্টিয়ারের পাশাপাশি প্রায় ১০ মিলিয়ন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করে থাকে।
আরও পড়ুন: ‘বিডিএস জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের অবহিত করার ব্যবস্থা নিতে হবে’
এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ হাই কমিশনার বলেন, ব্রিটিশ সরকার বাংলাদেশ সরকারকে আগের মতো সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রাখবে। আমরা শুধু বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতা করতেই চাই না, আমরা চাই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রোহিঙ্গা ইস্যু স্পট লাইট হিসেবে কাজ করবে। তিনি বলেন, গাজা, দঃ আফ্রিকা ও পৃথিবীর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর মতো রোহিঙ্গা ইস্যুও একটা বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হউক।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু যাতে হারিয়ে না যায় এ জন্য এখানে বিশেষ ফোকাস বাড়াতে হবে। বিভিন্ন সভা, সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ইস্যুটি তুলে ধরতে হবে।
পরে প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান ব্রিটিশ হাই কমিশনারকে বঙ্গবন্ধু স্মারক ক্রেস্ট উপহার দেন।
এসকে/
খবরটি শেয়ার করুন