বুধবার, ২৬শে জুন ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১২ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভালো–মন্দ স্পর্শ সম্পর্কে শিশুদের জানানো উচিত

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৩:৪২ অপরাহ্ন, ১৬ই জুন ২০২৪

#

ছবি : সংগৃহীত

স্পর্শ করে শিশুকে আদর করা কিংবা স্নেহ করা প্রাকৃতিক ও স্বাভাবিক একটি আচরণ। তবে শৈশব বা কৈশোরের কিছু কিছু অস্বাভাবিক ও অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য ও আত্মবিশ্বাসে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, যা পরবর্তীতে তার সামাজিক ও মানসিক বিস্তারে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সচেতন অভিভাবক হিসেবে সন্তানদের ভালো–মন্দ স্পর্শ সম্পর্কে সচেতন ক ও সামাজিক দায়িত্ব কর্তব্য। যেন হঠাৎ অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শের সম্মুখীন হলে শিশু নিজেই প্রতিরোধ করতে পারে। তাই ভালো–মন্দ স্পর্শ সম্পর্কে শিশুদের জানানো উচিত।

কীভাবে শেখাবেন?

যৌন নির্যাতনের শিকার উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত সকল শ্রেণি ও সব বয়সী শিশুরাই হতে পারে। শুধু মেয়ে শিশুরা নয়, ছেলে শিশুরাও যৌন নির্যাতনের সম্মুখীন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুকে অবশ্যই তার প্রাইভেট পার্ট সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। অভিভাবক হিসেবে কাজটি করতে হবে আপনাকে।

আপনার সন্তান শিশু হলেও তার থেকে অনুমতি নেওয়ার অভ্যাস করুন। এতে সে অনুমতির গুরুত্ব শিখবে। পোশাক পরিবর্তন কিংবা গোসলের সময় তাকে স্পর্শ করার আগে অবশ্যই তার অনুমতি নিন। এতে অনুমতি ছাড়া যে প্রাইভেট পার্টে হাত দেওয়া যায় না, এটি বুঝতে শিখবে। আপনার শিশুকে তার শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ সম্পর্কে ধারণা দিন।  পাশাপাশি আরও শেখান যে তার শরীর একান্তই ব্যাক্তিগত এবং এর উপর শুধু তার অধিকার। কোনো পরিচিত বা অপরিচিত ব্যক্তির অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শকে সে না বলার অধিকার রাখে।

আরো পড়ুন : রান্নায় গ্যাসের অপচয় কমাতে মানতে পারেন যেসব কৌশল

ভালো–মন্দ স্পর্শ শেখানোর কোনো সঠিক বয়স আছে কি?

অনেক অভিভাবকরা মনে করেন, যে কোনো বয়সেই শিশুকে এসব শেখানো প্রয়োজন। অনেকে মনে করেন, শিশুরা যখন কোনো বিশেষ বয়সে পৌঁছে তখন তাদের এ ধরনের বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া উত্তম। মূলত যে বয়স থেকে শিশু বোঝে ও কথা বলতে শেখে, তখনই এ ব্যাপারে শিশুকে ধারণা দিন। যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে অভিভাবক ও শিশুর নিজের সচেতনতাই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধক।

সবার আগে অবশ্যই শিশুর সঙ্গে অভিভাবকের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। নতুবা শিশু তার কোনো গোপন বা স্পর্শকাতর বিষয়গুলো নির্দ্বিধায় প্রকাশ করতে চাইবে না বা ভয় পাবে। শিশুদের দ্বিধা, অভিযোগ এবং গোপন বিষয়গুলোকে উপেক্ষা না করে গুরুত্ব দিন। কোনো পরিচিত কাছের মানুষ সম্পর্কে অভিযোগ করলে বকা না দিয়ে বিশ্বাস করুন। আপনি যে আপনার শিশুর সবচেয়ে নিরাপদ ও আস্থার স্থান তা নিশ্চিত করুন।

এ ছাড়া কেউ অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ করলে কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে তা শিশুকে আগে থেকে গুছিয়ে বলুন। শিশুকে স্পষ্টভাবে জানান, বড়দের কোনো স্পর্শ শিশুর অস্বস্তিকর লাগলে যেন সঙ্গে সঙ্গে মা-বাবাকে জানায়। তাকে বলুন- তাৎক্ষণিক ভাবে ‘না’ বলতে হবে। ব্যক্তিটিকে বলতে হবে যে, তুমি পছন্দ করছ না এবং তুমি চাচ্ছো না তিনি তোমাকে এভাবে স্পর্শ করুক। আশেপাশে কেউ থাকলে তার কাছে সাহায্য চাইতে হবে। প্রয়োজনে চিৎকার করতে হবে।

যৌন নির্যাতনের ভয়ে শিশুদের বাইরে খেলাধুলা বা সামাজিক যোগাযোগ বন্ধ করা যাবে না। কারণ পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশে খেলাধুলা এবং সামাজিক মেলামেশা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শিশু বয়সের যৌন নির্যাতনের ফলে অনেক মারাত্মক ও দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক এবং মানসিক প্রভাব ফেলে। যেমন মানুষের প্রতি অবিশ্বাস ও নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি এবং বিবিধ মানসিক সমস্যা।

সুতরাং প্রত্যেক মা–বাবা তাদের সন্তানকে ভালো ও মন্দ স্পর্শ সম্পর্কে শেখাতে হবে। তাই এ বিষয়গুলো নিয়ে মা-বাবাকেই শুরু থেকে সচেতন থাকতে হবে। 

সূত্র : শিশু বিকাশ ডট কম

এস/ আই.কে.জে


শিশু যৌন নির্যাতন

খবরটি শেয়ার করুন