সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২৫ যুক্তি দেখিয়ে রোববার আপিল করবেন ড. ইউনূস

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১১:০৩ পূর্বাহ্ন, ২৭শে জানুয়ারী ২০২৪

#

ফাইল ছবি

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাজার রায়ের বিরুদ্ধে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার আসামি রোববার (২৮শে জানুয়ারি) আপিল দায়ের করবেন। আপিলে শ্রম আদালতের সাজার রায় থেকে খালাস চেয়ে ২৫টি আইনি যুক্তি তুলে ধরা হবে।

শনিবার (২৭শে জানুয়ারি) ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, রোববার শ্রম অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে আপিল দায়ের করা হবে। আপিলে আমরা ২৫টি আইনি যুক্তি তুলে ধরব।

এর আগে গত ১০ই জানুয়ারি শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার আসামিকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। রায় প্রদানকারী বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানার স্বাক্ষরের পর ৮৪ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়।

পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়েছে, আসামিরা শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ৪(৭) (৮), ১১৭, ২৩৪ এর বিধান লঙ্ঘন করে আইনের ৩০৩(৫) ও ৩০৭ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তা প্রমাণিত হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। এ অবস্থায় আসামি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউনূস, চেয়ারম্যান, আশরাফুল হাসান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, নুরজাহান বেগম, পরিচালক, মো. শাহজাহান, পরিচালকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ৪(৭) (৮), ১১৭, ২৩৪ ও বিধি ১০৭ লঙ্ঘনের জন্য ৩০৩(৩) ও ৩০৭ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের ওই আইনের ৩০৩ (৩) ধারার অপরাধে ০৬ (ছয়) মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫,০০০/-(পাঁচ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ১০ (দশ) দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৩০৭ ধারার অপরাধে ২৫,০০০/-(পঁচিশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে অতিরিক্ত ১৫ (পনেরো) দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হলো।

গত ১লা জানুয়ারি শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। তবে আপিল করার শর্তে ড. ইউনূসসহ আসামিদের ১ মাসের জামিন দেওয়া হয়।

ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা এ রায় ঘোষণা করেন। এ মামলায় অন্য আসামিরা হলেন গ্রামীণ টেলিকমের এমডি আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান। তাদেরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: এটাকে ন্যায়বিচার যদি বলতে চান, তাহলে বলতে পারেন: ড. ইউনূস

ড. ইউনূসসহ আসামিদের শ্রম আইনের ৩০৩ (ঙ) ধারায় সর্বোচ্চ ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১০ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অপরদিকে ৩০৭ ধারায় ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেন আদালত।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা এক নম্বর আসামির বিষয়ে প্রশংসাসূচক বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। তাকে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা নোবেলজয়ী আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব বলা হয়েছে। কিন্তু এ আদালতে নোবেলজয়ী ইউনূসের বিচার হচ্ছে না, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান হিসেবে বিচার হচ্ছে। এসময় আদালত বলেন, ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করা মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে ও বিপক্ষে গত বছরের ২৪শে ডিসেম্বর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়।

এর আগে ২১শে ডিসেম্বর ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে মামলার আইনগত বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। ওইদিন ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেছিলেন, এ মামলার সাক্ষীদের বর্ণনায় ড. ইউনূসসহ অন্যরা সংশ্লিষ্ট আছেন এমন কোনো বর্ণনা নেই। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ডকুমেন্ট নেই। মামলার আর্জিতে কোথাও আসামিরা অপরাধী এমন কোনো অভিযোগ নেই।

২০২১ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করার অভিযোগ আনা হয়।

এসকে/ 

ড. মুহাম্মদ ইউনূস আপিল শ্রম আদালত

খবরটি শেয়ার করুন