শুক্রবার, ১৩ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৯শে ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোপালগঞ্জে বাড়ছে অসময়ের তরমুজ চাষের আবাদ

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৭:০১ অপরাহ্ন, ২৬শে আগস্ট ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ঘেরপাড়ে অসময়ের তরমুজ চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। কৃষক এই তরমুজ চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন।  

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার বলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ৫ বছর আগে অসময়ের তরমুজ চাষ শুরু হয়। তখন মাত্র ২০ শতাংশ জমিতে এ তরমুজের চাষ করেন কৃষক । প্রতি শতাংশে এ তরমুজ ১৮০ কেজি ফলন দিয়েছিল । ১ শতাংশ জমিতে তারমুজ চাষে কৃষকের খরচ হয়েছে ২০০০ টাকা। আর বিক্রি নেমেছে ৭ হাজার ২০০ টাকা। খরচ বাদে অসময়ের তরমুজ চাষে কৃষক শতংশে ৫ হাজার ২০০ টাকা লাভ করেছেন। তারপর থেকেই প্রতি বছর ঘেরপাড়ের আনাবাদি জমিতে তরমুজ চাষ বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, এ বছর গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ৫ একর জমিতে অসময়ের তরমুজের চাষ হয়েছে। প্রতি একরে ১৮ মেট্রিক টন তরমুজ ফলনের আশা করা হচ্ছে। সেই হিসেবে ৫ একরে ৯০ মেট্রিক টন তরমুজ উৎপাদিত হবে। প্রতি কেজি তরমুজ কৃষক ক্ষেত থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। সে হিসেবে এ তরমুজের বাজার দর ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার বলেন, অসময়ের তরমুজ খুবই রসালো। ভেতরের অংশ বেশ লাল । এ তরমুজ প্রচুর মিষ্টি।  তরমুজ খেতে সুস্বাদু। বাজারে এ তরমুজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই  কৃষক বাড়তি দামে তরমুজ বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা কৃষকের আয় দ্বিগুণ করে দিতে চাই। তাই কৃষকদের দিয়ে আমরা উচ্চ মূল্যের ফসল আবাদ করাচ্ছি। উচ্চ মূল্যের ফসল বিক্রি করে কৃষক অধিক লাভবান হচ্ছেন। এতে একদিকে কৃষক যেমন লাভবান হচ্ছেন, তেমনি দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ হালদার বলেন, ৬ বছর আগে ১ জন কৃষক ঘেরপাড়ে অসময়ের তরমুজ চাষ শুরু করেন। তার দেখাদেখি এখন অন্তত ৩০ জন কৃষক ব্লাক সুইট, বেঙ্গল টাইগার ও সোনিয়া জাতের  তরমুজের আবাদ সম্প্রসারণ করেছেন। তাদের তরমুজের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। বাজারে তরমুজের দাম ভালো রয়েছে। তাই তরমুজ বিক্রি করে কৃষক মোটা অংকের লাভের আশা করছেন।

আরও পড়ুন: সমন্বিত কৃষি খামার উদ্যোক্তাদের এগিয়ে যাবার নতুন সম্ভাবনা

একই গ্রামের কৃষক রাজিব বালা বলেন, আমার প্রতিবেশী বিধান বিশ্বাস গত ৫ বছর ধরে তরমুজের চাষ করে আসছে। তার দেখাদেখি কৃষি বিভাগের সহযোগিতা, প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ পেয়ে আমিও ২৫ শতাংশ  ঘেরপাড়ের অনাবাদি জমিতে তরমুজের চাষ করেছি। এক্ষেত্রে  প্রতিবেশী নির্মলেন্দু বিশ্বাস সব ধরণের সহযোগিতা করেছে। আমার ঘেরপাড়েও তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। আশা করছি ২৫ শতাংশে অসময়ের তরমুজের  অন্তত সাড়ে ৪ টন ফলন পাবো। এ তরমুজ বিক্রি করে ২ লাখ ২ হাজার ৫০০ টাকা পাবো । ৫০ হাজার টাকা খরচ বাদে এ তরমুজ থেকে অন্তত ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা আয় করতে পারবো বলে আশা করছি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপ-পরিচালক আঃ কাদের সরদার বলেন, আগে কৃষক ঘেরপাড়ে শুধু শাক, সবজির আবদ করতেন। প্রতি কেজি শাক সবজি গড়ে ২০ টাকা দরে বিক্রি হয়। পক্ষান্তরে চরমুজ চাষ করে কৃষক প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারেন। তাই কৃষকদের নিয়ে আমরা উচ্চমূল্যের ফসল আবাদ করাচ্ছি। এতে কৃষক লাভবান হচ্ছেন।

এসি/কেবি

তরমুজ আবাদ

খবরটি শেয়ার করুন