সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ জাতীয় কবির ৪৭তম মৃত্যুবাষিকী

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১০:২৮ পূর্বাহ্ন, ২৭শে আগস্ট ২০২৩

#

ছবি- জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি ও বাংলার নবজাগরণের অগ্রদূত কাজী নজরুল ইসলামের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। সুগঠিত দেহ, অপরিমেয় স্বাস্থ্য ও প্রাণখোলা হাসির জন্য বিখ্যাত ছিলেন নজরুল। তাঁর ২৩ বছরের অমোঘ সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমে তিনি  আজও আমাদের মাঝে বেঁচে আছেন। বেঁচে থাকবেন চিরকাল। 

কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ই জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটো বেলায় তাঁর ডাক নাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। বাবা কাজী ফকির আহমেদ ও মা জাহেদা খাতুনের ষষ্ঠ সন্তান নজরুল। 

বাংলা সাহিত্যে নজরুল ‘অগ্নিবীণা’ হাতে প্রবেশ করেছিলেন, ‘ধূমকেতু’র মতো হয়েছিলেন প্রকাশিত। তার লেখাতে যেমন বিদ্রোহের ভাব ছিল, তেমনই ছিল জীবনের সঞ্চারণ। বাংলা সাহিত্যে ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসেবে পরিচিত হলেও নজরুল একাধারে ছিলেন কবি, সঙ্গীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক, অভিনেতা, ধর্মজ্ঞ, দার্শনিক, সৈনিক ও বিপ্লবী।

দরিদ্র মুসলিম পরিবারে জন্ম নেওয়া নজরুল তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা জীবন গ্রামের মক্তবে শুরু করেছিলেন। মক্তবের পাঠ শেষ করে তিনি স্থানীয় এক মসজিদে মুয়াযযিন হিসেবে কাজ করেছিলেন। 

কৈশোর বয়সে নজরুল নাট্যদলের সাথে কাজ করতে গিয়ে কবিতা, নাটক ও সাহিত্য সম্বন্ধে সম্যক জ্ঞান লাভ করেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কিছুদিন কাজ করার পর তিনি সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। 

এসময় নজরুল ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অবতীর্ণ হন। প্রকাশ করেন ‘বিদ্রোহী’ এবং ‘ভাঙার গান’র মতো কবিতা; ‘ধূমকেতু’র মতো সাময়িকী। জেলে বন্দি হবার পর লেখেন ‘রাজবন্দির জবানবন্দি’, এসব সাহিত্যকর্মে সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা ছিল সুস্পষ্ট। ধর্মীয় বৈষম্য ও লিঙ্গভেদের বিরুদ্ধেও তিনি লিখেছেন। বাংলা কাব্যে ইসলামী সঙ্গীত তথা গজলের জন্ম নজরুলই দেন। একইসাথে তিনি অনেক উৎকৃষ্ট শ্যামা সঙ্গীত ও হিন্দু ভক্তিগীতিও রচনা করেন। নজরুল প্রায় তিন হাজার গান রচনা করেন। এসব গানের অধিকাংশেই নিজেই সুরারোপ করেছেন তিনি। এই সঙ্গীতগুলো এখন ‘নজরুল সঙ্গীত’ নামে পরিচিত।

মাত্র ৪৩ বছর বয়সে বাংলা সাহিত্যের এই জগত্তারিণী কবি পিক্স ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন। যে কারণে কবিকে আমৃত্যু সাহিত্যকর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়।

প্রেম, দ্রোহ, সাম্যবাদ ও জাগরণের কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ও গান শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে বাঙালি জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে। ১৯৭১ সালে তার গান ও কবিতা ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণার উৎস।

১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয় কিন্তু কবি তখন ছিলেন ভারতে। কবিকে ছেড়ে যেন পূর্ণতা পাচ্ছিল না বাংলাদেশ। তাই তো  স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবিকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে কবির বসবাসেরও ব্যবস্থা করেন। ধানমণ্ডিতে কবির জন্য একটি বাড়ি প্রদান করেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে শহীদ হন। পরের বছর ১৯৭৬ সালে সেই আগস্ট মাসেরই ২৭ তারিখে পরলোকে চলে যান কবি। 

এম.এস.এইচ/ আই. কে. জে/ 

জাতীয় কবি নজরুল

খবরটি শেয়ার করুন