শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কেন খাবেন আমড়া ও কদবেল

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:৪৪ অপরাহ্ন, ২৩শে অক্টোবর ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

আমরা জানি, প্রায় সব ধরনের ফলের মধ্যে রয়েছে বিশেষ পুষ্টিগুণ। খাদ্য উপাদান ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের অন্যতম উৎস ফল। আবার রোগীর পথ্য হিসেবেও ফল খাওয়া হয়। বিশেষজ্ঞরা এ কারণে বারোমাসি ফলের পাশাপাশি মৌসুমি ফল খাওয়ারও পরামর্শ দেন। মৌসুমি ফলগুলোর মধ্যে এখন আমড়া ও কদবেলের সময়। দেশীয় এ ফল দুটি খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ।

আমড়া


আমড়া খুবই জনপ্রিয় একটি ফল, সহজলভ্যও বটে।

প্রতি ১০০ গ্রাম আমড়া থেকে 

ভিটামিন সি পাওয়া যায় ২০ মিলিগ্রাম

ভিটামিন বি পাওয়া যায় ১০.২৮ মিলিগ্রাম

ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় ৫৫ মিলিগ্রাম

আয়রন পাওয়া যায় ৩.৯ মিলিগ্রাম

ক্যারোটিন পাওয়া যায় ৮০০ মাইক্রোগ্রাম

শর্করা ও প্রোটিন পাওয়া যায় যথাক্রমে ১৫ গ্রাম ও ১.১ গ্রাম

 ১০০ গ্রাম আমড়া থেকে শক্তি পাওয়া যায় ৫৬ কিলোক্যালরি

পুষ্টিগুণ

আমড়া একটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল। ১০০ গ্রাম আমড়া প্রায় ৩৯ শতাংশ  ভিটামিন সির চাহিদা পূরণ  করতে পারে। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে,ফ্রি র‍্যাডিকালের ক্ষতি এড়ানো যায়, স্কার্ভি রোগ এড়ানো যায়। কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে। কোলাজেন ত্বক, লিগামেন্ট, কার্টিলেজকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।

এটি মুখে রুচি ফেরায়, ক্ষুধা তৈরি করতে সাহায্য করে। আমড়ার আয়রন দৈনিক আয়রনের চাহিদার ১৫.৫%-৩৫% পূরণ করতে পারে। আয়রন রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করে ও হিমোগ্লোবিন উৎপন্ন করে। তাই আমড়া শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখে রাখতে সাহায্য করতে পারে।

আরো পড়ুন : দীর্ঘ সময়ের জন্য জলপাই সংরক্ষণের পদ্ধতি

আরো কিছু পুষ্টিগুণ-

১. আমড়ার ফাইবার বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।

২. ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। সর্দি, কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা জাতীয় রোগের জীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করে।

৩. আমড়া ক্যালসিয়ামের একটি ভালো উৎস। প্রতিদিনের ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণে আমড়া খাওয়া যেতে পারে।

৪. রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।

৫. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় উপাদান থাকায় বার্ধক্যের গতি ধীর করে।

৬. যারা ওজন কমাতে চান তারা প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় আমড়া রাখতে পারেন। এটি ক্ষুধা নিবারণেও সাহায্য করবে,পাশাপাশি পূরণ করবে পুষ্টির চাহিদাও। হালকা খাবার হিসেবে ফলটি খেতে পারেন।

কদবেল


শক্ত খোলসে আবৃত টক-মিষ্টি স্বাদের দেশীয় ফল কদবেল। আমের চেয়ে সাড়ে ৩ গুণ, কাঁঠালের দ্বিগুণ আর আমলকি ও আনারসের চেয়ে প্রায় ৪ গুণ বেশি পরিমাণ আমিষ রয়েছে ফলটিতে।

প্রতি ১০০ গ্রাম কদবেলে-

প্রোটিন ৩.৫ গ্রাম

শর্করা ২.২ গ্রাম

আয়রন ০.৬ মিলিগ্রাম

ভিটামিন সি ১৩ মিলিগ্রাম

ক্যালসিয়াম ৫.৯ মিলিগ্রাম

বিভিন্ন খনিজ পদার্থ ২.২ গ্রাম

শক্তি উৎপাদন করে ৪৯ কিলোক্যালরি

আরো পড়ুন : পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বাকরখানি বিক্রি শুরু হয় কত সালে?

কদবেল শরীরের যেসব উপকার করে থাকে তা হলো-

১. কদবেলে ট্যানিন নামক বিশেষ একটি উপাদান রয়েছে। এই ট্যানিন দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া ও আমাশয় ভালো করে। এ ছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটব্যথা ও হজমের সমস্যা প্রতিরোধ করে

২. শরীরে মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে। ফলে কিডনি সুরক্ষিত থাকে

৩. শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্নায়ুর শক্তি জোগায়

৪. কদবেলের খনিজ উপাদান ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী

৫. রক্ত পরিষ্কার করে

৬. কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে

৭. যকৃত ও হৃদপিণ্ডের জন্য বিশেষ উপকারী

৮. হরমোনজনিত সমস্যা দূর করে। স্তন ও জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে

৯. রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। একইসঙ্গে বুক ধড়ফড় কমায়

১০. টক-মিষ্টি স্বাদ মুখের রুচি বাড়ায়

১১. কদবেলের ফেনোলিক এসিড উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই এটি পাইলস ও আলসারের চিকিৎসায় সাহায্য করে

তবে যারা কিডনির সমস্যায় ভুগছেন তাদের কদবেল নিয়ম মেনে খেতে হবে। অতিরিক্ত কদবেল খেলে গ্যাস, মাথাব্যথা দেখা দিতে পারে।

এস/ আই.কে.জে/

পুষ্টিগুণ আমড়া ও কদবেল

খবরটি শেয়ার করুন