সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইলিশের ভরসা দক্ষিণাঞ্চল

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৫:০৩ অপরাহ্ন, ৩রা আগস্ট ২০২৩

#

চাঁদপুর মাছঘাটে আসতে শুরু করেছে ইলিশ - ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘদিন পর চাঁদপুর মাছঘাটে ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে। এখানকার স্থানীয় জেলেরা পদ্মা-মেঘনার মোহনায় কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেলেও লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ভোলা, বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ চাঁদপুর মাছঘাটে আসতে শুরু করেছে। এতে দেশের অন্যতম বড় মৎস্য আড়ত বড়স্টেশন মাছঘাটে শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের কর্মব্যস্ততা বেড়েছে। ইলিশের সরবরাহ বাড়ায় দামও কিছুটা কমেছে।

চাঁদপুর মাছঘাটের ব্যবসায়ীরা সাংবাদিকদের জানান, চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাটে দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ আসার আগে প্রতিদিন ৫০-৬০ মণ ইলিশ বেচাকেনা হতো। ওই সময় এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ২০০ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকায়। এক কেজির ওপরের ইলিশ তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।


ইলিশ - ছবি: সংগৃহীত

নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর গত ২৫ জুলাই থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ চাঁদপুর মাছঘাটে আসায় দাম কিছুটা কমেছে। এখন প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ মণ ইলিশ মাছ ঘাটে আসছে। এসব ইলিশ মাছঘাট থেকে বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে। বর্তমানে এক কেজি ওজনের ইলিশ এখন ১ হাজার ৪০০ থেকে দেড় হাজার টাকায় এবং এর ওপরের ওজনের ইলিশ আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, খুচরা বাজারে কেজি প্রতি ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।

চাঁদপুর মাছঘাটে জেলে কাশেম বলেন, প্রতিবছরই নদীতে ইলিশ কমে যাচ্ছে। গতবছর যা ছিল, এবার তাও নেই। নদীতে পানি এখনো বৃদ্ধি পায়নি। জুন-জুলাই মাস শেষ হলো কিন্তু আগের মতো আর জালে ইলিশ ওঠে না। আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ইলিশ ধরা যাবে। তারপর মা ইলিশের নিষেধাজ্ঞা আসবে। তাই এই দুই মাস নদীতে ইলিশ না পেলে ক্ষতি পোষানো যাবে না। এমনিতেই এখন সারাদিন জাল বেয়ে তেলের টাকা ওঠে না। আশায় আছি, কখন কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাবো।

চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত সরকার বলেন, মাছঘাটে ইলিশ না থাকায় দোয়ার আয়োজন পর্যন্ত করা হয়েছে, যা এখানকার ইতিহাসে এই প্রথম। ইলিশ দিনদিন কমে যাচ্ছে। চাঁদপুরে পানি কম, বৃষ্টি হয় না। আমরা আশাবাদী সামনে ৫০০ থেকে এক হাজার মণ ইলিশ সরবরাহ হবে।


ইলিশ - ছবি: সংগৃহীত

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান বলেন, আমাদের মৎস্য অভিযানের অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমরা সেইসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই মৎস্য অভিযানকে সফল করেছি এবং করবো। নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশ খাওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। তাহলে ইলিশের সরবরাহ বাড়বে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যথাসময়ে বৃষ্টি এবং নদীর পানি বাড়ছে না। মূলত ইলিশ গভীর জলে বিচরণ করে। নদীর পানি বৃদ্ধি না হওয়ার কারণে ইলিশ অবাধে বিচরণ করতে পারছে না।

আরো পড়ুন: তফসিল ঘোষণার পর ইসির সঙ্গে কাজ করবে ফেসবুক

তিনি আরও বলেন, এছাড়া বর্তমান সময়ে বড় একটি সমস্যা হচ্ছে বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যার দূষিত পানি চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদী হয়ে বয়ে যাচ্ছে। যে কারণে এখানকার ইলিশ অন্যত্র সরে যাচ্ছে। তবে এটা নিয়ে বেশি চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। আগস্টে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে জেলেরা কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা পাবে।

এম/


ইলিশ চাঁদপুর বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট

খবরটি শেয়ার করুন