বুধবার, ৩রা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোন পাত্রে পানি পান করলে রোগব্যাধি দূরে থাকে?

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:২০ অপরাহ্ন, ২রা জুলাই ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

পানির অপর নাম জীবন। আমাদের শরীরের ৭০ শতাংশই পানি এবং এই পানির জন্যই শরীরের সব রকম কাজকর্ম চালিত হয়। স্বাস্থ্য ভালো থাকার জন্যও পানির গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে গরমের দিনে হাইড্রেশন ঠিক না হলে ওজন কমানো, ত্বক ও সুস্থ হৃদয় সম্ভব নয়।

মানুষ পানি পান করার জন্য নানা ধরনের পাত্র বা গ্লাস ব্যবহার করেন। অধিকাংশ বাড়িতেই পানি রাখা হয় প্লাস্টিকের বোতলে। এমনকি অফিসে, কলেজে বা ঘুরতে যাওয়ার সময়ে পানি পান করার জন্য ব্যাগে ভরে নেওয়া হয় প্লাস্টিকের বোতলে পানি। অনেকে আবার কোল্ড ড্রিঙ্কের বোতল ধুয়ে তাতে পানি ভরে মাসের পর মাস দিব্যি পান করছেন। কখনও ভেবে দেখেছেন, তা আদৌ স্বাস্থ্যসম্মত কি না।

প্লাস্টিকের বোতলে পানিপান স্বাস্থ্যকর নয়! একটি প্লাস্টিক বোতলে কতদিন পানিপান করা যাবে তা নির্ভর করে এটি ফুডগ্রেড প্লাস্টিকের তৈরি কি-না তার উপর।

প্লাস্টিকের বোতলে থাকা বিসফেনল শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে। অনেকে আবার মেটালের বোতলে জল পান করেন। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মেটালের বোতলেও বিসফনেল থাকে। প্লাস্টিকের কারণে পরিবেশ দূষণ এড়াতেই বোতল পালটে ফেলা দরকার। তাছাড়া সব রকমের প্লাস্টিকে পানি খাওয়াও ঠিক নয়। বিশেষ করে বাজারচলতি ঠান্ডা পানীয়ের বা পানির বোতল কিন্তু একবার ব্যবহারযোগ্য। সেগুলোর পুনর্ব্যবহার কখনও নয়। প্লাস্টিকের বোতলের জায়গায় স্টিলের পাত্র, কাচের জার, তামার পাত্র, সিরামিকের পাত্রে পানি রাখা নিরাপদ। দেখে নিন কোন পাত্রে পানি রাখার সুবিধা কতটুকু এবং সুস্বাস্থ্যের চাবিকাঠি কোন পাত্রে।

>> কাচ বা সিরামিকের জার

একান্তই বোতলে পানি পান করার অভ্যেস হয়ে গেলে কাচের বোতল কিনে রাখতে পারেন। এখন অনেক রকমের ডিজাইন করা সুন্দর কাচের বা সিরামিকের বোতল কিনতে পাওয়া যায়। সস, স্কোয়াশ জাতীয় অনেক কিছুই কাচের বোতলে কেনা হয়। সেগুলো না ফেলে, ধুয়ে তাতেই পানি রাখা যেতে পারে। স্টিলের জগ পছন্দ না হলে শৌখিন কাচের জগ রাখুন, তা আপনার অন্দরের শোভাও বাড়াবে। তবে কাচের জিনিস পড়ে ভেঙে যাওয়ার ভয় থাকে। তাই কাচের বোতল নিয়ে যাতায়াত না করে এর ব্যবহার বাড়িতে করাই শ্রেয়। এছাড়া কাচের বোতল, গ্লাস বা সিরামিকের জারে কিন্তু পানি ভরে পান করার জন্য সেরা পছন্দ। শুধু একটু বেশি সাবধানতার প্রয়োজন। এতেই লুকিয়ে রয়েছে সুস্বাস্থ্যের চাবিকাঠি।

>> স্টিলের পাত্র

স্টিলের পাত্রে পানি রাখতে পারেন। আগে বেশির ভাগ বাড়িতেই কিন্তু স্টিলের জগ ব্যবহার করা হত। সেই ব্যবস্থাই অনায়াসে ফিরিয়ে আনা যায়। জগ থেকে গ্লাসে ঢেলে পানি পান করার অভ্যেস নতুন করে শুরু করা যায়। তাছাড়া এতে পানি পান করার সময়ে বায়ুও প্রবেশ করবে না। ফলে যাদের গ্যাসের সমস্যা রয়েছে, তাদের কিছুটা হলেও সুরাহা হবে। স্টিলের জিনিসের যত্নও সহজ।

>> তামার পাত্র

তামা নিজেই পানি শুদ্ধ করতে সহায়ক হওয়ায়, তামার পাত্রের ব্যবহার বহু যুগ ধরে চলে আসছে। শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে সাহায্য করে তামা। তাই ডায়েট এবং শরীরচর্চার পাশাপাশি তামার পাত্রে রাখা পানি পান করুন। অল্প দিনে কমবে শরীরে অতিরিক্ত মেদ। তবে আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের মতে, পানি খাওয়ার সময় তামার তৈরি পাত্র বা গ্লাস ব্যবহার করাই ভাল। আয়ুর্বেদশাস্ত্র অনুযায়ী, রাত্রিবেলায় তামার জগ বা গ্লাসে পানি ঢেকে রেখে দিন। সকালবেলায় খালি পেটে সেই পানি পান করলে শরীরের নানান রোগব্যাধি দূর হয়।

তামার পাত্রে পানি পান করলে হজম শক্তি ভাল হয়। অম্বল কিংবা গ্যাসের সমস্যা থাকলে উপকার পাওয়া যায়। শরীরে থাকা ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়াদের নিঃশেষ করতে তামা সাহায্য করে। শরীরে থাকা দূষিত পদার্থও বার করে দিতে তামা দারুণ উপকারী। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দূর করে।

শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতেও সাহায্য করে তামা। তাই ডায়েট এবং শরীরচর্চার পাশাপাশি তামার পাত্রে রাখা পানি পান করুন। অল্প দিনে কমবে শরীরে অতিরিক্ত মেদ।

যে কোনও রকমের ক্ষতস্থান তাড়াতাড়ি শুকোতে সাহায্য করে তামা। তা ছাড়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও এর জুড়ি মেলা ভার। তামার পাত্রে পানি পান করলে শরীরে ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি কমে।

আরো পড়ুন: এই ৫টি বদ অভ্যাসের কারণে মুটিয়ে যাচ্ছেন দিন দিন

তামায় থাকে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। রোজ সকালে খালি পেটে তামার পাত্রে পানি পান করলে বয়সের ছাপ ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব। এ ছাড়া ত্বকের কালো দাগ-ছোপ দেখা দিলে সেটা কমাতেও সাহায্য করে এই তামা।

যারা হার্টের রোগী এবং উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্য অব্যর্থ দাওয়াই তামা। এ ছাড়া ক্যানসারের প্রবণতা কমাতেও সাহায্য করে তামা। এছাড়া সকালে উঠে তামার পাত্রে পানি পান করলে বাতের ব্যথায় উপশম পেতে পারেন।

এম এইচ ডি/ আইকেজে/

তামা পানি পান শরীরচর্চা বোতল ক্যানসার কোষ্ঠকাঠিন্য

খবরটি শেয়ার করুন