শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাঁদাবাজি ছেড়ে ব্যবসা করছেন হিজড়া সম্প্রদায়

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০২:১৮ অপরাহ্ন, ১৯শে ডিসেম্বর ২০২৩

#

ছবি-সংগৃহীত

তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের চাঁদাবাজিতে সবসময় অতিষ্ঠ হই আমরা। পথে-ঘাটে, পার্কে, ট্রাফিক সিগন্যালে, বিয়ের অনুষ্ঠানে এমনকি বাসা-বাড়িতে গিয়েও জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়।

চাঁদাবাজিই তাদের একমাত্র পেশা ছিল। কিন্তু এখন সেই পেশা বদলে খাবার হোটেল, টেইলার্স এবং চা-কফির দোকানের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবন-যাপনে ফেরার চেষ্টা করছেন এই সম্প্রদায়ের একটি দল। তাদের এমন কর্মের প্রশংসা করছেন এলাকার সাধারণ মানুষ। তাদের স্বাবলম্বী ও ভাগ্য উন্নয়নের সার্বিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার দেওয়ান বাজার। প্রতিদিনই এ বাজারে শত শত মানুষের ভিড় হয়।  এই বাজারে বিভিন্ন ধরনের দোকানের পাশাপাশি রয়েছে তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়ের ত্রিনয়না নামে বেশ কিছু দোকান।

যেখানে রয়েছে ভাতের হোটেল, কফি হাউস ও টেইলার্সের দোকান। এ দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনা করছে তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রাদায়ের লোকজন। যা দেখে বেশ খুশি স্থানীয়রা। সেইসঙ্গে আগামী দিনগুলোতে কর্মের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবন-যাপনে ফিরবেন এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তারা।

২০১৭ সালে স্থানীয় এক হিজড়া স্বপ্নের ছোঁয়া নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন। এই সংগঠনটি উপজেলার প্রায় অর্ধশত হিজড়াকে নিয়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। প্রশিক্ষণ পেয়ে নিজেরা স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখে। তারপর তাদের এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে আসে মদন উপজেলা প্রশাসন। 

তাদের বিভিন্ন সরকারি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হয় এবং সুযোগ করে দেওয়া হয় কর্মসংস্থানেরও। তারপর থেকেই যাত্রা শুরু হয় সংগঠনটির সদস্যদের। সরকারিভাবে ব্যবসা করার সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ায় বেশ খুশি হিজড়া সম্প্রদায়ের সদস্যরা।

স্থানীয়রা জানান, হিজড়া সম্প্রদায়ের লোকরা আগে রাস্তাঘাটে, দোকানে চাঁদা ওঠাতো এখন তারা নিজে কর্ম করছে এটি যেমন আনন্দের তেমনি স্বস্তিরও বটে।

ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের জানান, তাদের হাতে রান্না করা খাবার খুবই সুস্বাদু। তাছাড়া টেইলার্স এবং চা-কফির দোকানও ভালো চলছে। 

একটু সহযোগিতা ও সুস্থ পরিবেশ যে কারও জীবন পালটে দিতে পারে এটি তার অন্যতম উদাহরণ। এরকম মহৎ উদ্যোগে সহায়তা করার জন্য উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের প্রতিটি উপজেলায় যদি এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয় তাহলে হিজড়া সম্প্রদায়ের লোকজন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে।

সংগঠনটির সভাপতি জয়িতা অনন্যা বলেন, তাদের এই কর্মকাণ্ড দেখে দেশের বিভিন্ন স্থানে হিজড়া সম্প্রদায়ের সদস্যরা চাঁদা উত্তোলন বা ভিক্ষাবৃত্তি বাদ দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে। এটি দেশের জন্য একটি রুল মডেল হবে বলেও তিনি বিশ্বাস করেন।

আরো পড়ুন: কুমিল্লায় নতুন টিউবওয়েল থেকে বের হচ্ছে গ্যাস

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহ আলম মিয়া জানান, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে হিজড়া সম্প্রদায়ের লোকজনও ভূমিকা রাখতে পারে। সেই চিন্তা থেকেই তাদের একত্রিত করেছি। তাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করছি।

এসি/ আই. কে. জে/ 


চাঁদাবাজি তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়

খবরটি শেয়ার করুন