ছবি: সংগৃহীত
অবশেষে দক্ষিণাঞ্চলের জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। তবে দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। অবশ্য মৎস্যজীবীদের দাবি, দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে গিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ মাছ। এদিকে চাঁদপুরের বাজারেও ইলিশের দেখা মিলছে। এর নব্বই ভাগই ভোলা, বরিশাল, নোয়াখালীর হাতিয়া ও সন্দ্বীপের বলে আড়তদাররা জানান।
বরগুনার পাথরঘাটার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের মার্কেটিং অফিসার বিপ্লব কুমার জানান, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর ২৪ জুলাই থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত ১০ দিনে এ কেন্দ্রে ইলিশ এসেছে ১৫৪ টন। গত বছরের একই সময়ে সরবরাহ ছিল ১৩২ টন। এ হিসাবে গত বছরের তুলনায় গত ১০ দিনে ২২ টনের বেশি রুপালি মাছ এ অবতরণ কেন্দ্রে এসেছে।
এবার দামও অনেক বেশি। আড়তদার মারুফ খান জানান, বৃহস্পতিবার এখানে নদীর প্রতি মণ বড় ইলিশ (এক কেজি বা তার ওপরে) বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকায়। একই আকারের সাগরের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকায়। নদীর মাঝারি ইলিশ (৭৫০ গ্রাম থেকে এক কেজির নিচে) ৫০ থেকে ৫৫ হাজারে এবং একই আকারের সমুদ্রের ইলিশ ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। নদীর ছোট আকারের ইলিশ (৫০০ গ্রাম থেকে ৭৫০ গ্রাম) ৪০ থেকে ৪২ হাজার টাকা মণ এবং একই আকারের সমুদ্রের ইলিশ ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে।
ছবি: সংগৃহীত
তা সত্ত্বেও দাম নিয়েও পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন জেলেরা। তাদের দাবি, নিষেধাজ্ঞার সময় ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের সীমানায় প্রবেশ করে ইলিশ ধরার কারণে তারা এখন কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে পাচ্ছেন না। ফলে দাম একটু বেশি না হলে তাদের খরচ উঠছে না। পাথরঘাটার মাঝি আব্দুল কাইউম বলেন, তাদের যে পরিমাণ খরচ হয়েছে, সে অনুযায়ী মাছ পাননি।
বৃহস্পতিবার সকালে বরগুনা মাছ বাজারে মো. রাসেল নামে এক ক্রেতা বলেন, এক কেজির একটি ইলিশের দাম ১৭০০-১৮০০ টাকা। একটি ইলিশ দেড় কেজি ওজন হলে তা প্রায় ৩ হাজার টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। এমন দামে কিনে খাওয়া মধ্যবিত্তের পক্ষেও সম্ভব নয়।
বরগুনা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, এ বছর বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়ছে। তবে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ইলিশ এখনও পাননি জেলেরা।
চাঁদপুরের আড়তও ভরপুর
চাঁদপুরের সবচেয়ে বড় পাইকারি মাছের আড়ত বড় স্টেশন মাছঘাটে জেলে, ব্যবসায়ী ও মাছ শ্রমিকদের ব্যস্ততা গত কয়েক দিনে বেড়েছে। বৃহস্পতিবার বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ভোলা, হাতিয়া, চরফ্যাসন, লক্ষ্মীপুর ও আশপাশের উপকূলীয় এলাকার ইলিশের সরবরাহে এ মাছঘাট সরগরম।
ছবি: সংগৃহীত
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবেবরাত জানান, বৃহস্পতিবার আড়তে ৩০০ মণ ইলিশ এসেছে। এর মধ্যে মাত্র ২০ মণ হবে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার মাছ। বাকি সবই দক্ষিণাঞ্চলের। বৃষ্টি এবং পূর্ণিমার কারণে ইলিশ আমদানি বেড়েছে। দামও আগের তুলনায় কমেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, এখানে দক্ষিণাঞ্চলের এক কেজি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকায়, যা আগে ছিল ২২০০ টাকা। আর ৫০০-৭৫০ গ্রাম ওজনের মাছ বিক্রি হচ্ছে ১২০০-১৩০০ টাকায় যা আগে ছিল দেড় হাজার টাকা।
আরো পড়ুন:ডেঙ্গুর চেয়েও বেশি মারাত্মক বিএনপি : তথ্যমন্ত্রী
দেড় কেজি বা ২ কেজি আকারের ইলিশ প্রতি কেজি ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ওই হিসাবে একটা ইলিশের দাম পড়ছে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত। অন্য এলাকার হলেও একে চাঁদপুরের ইলিশ বলে চালিয়ে দেওয়া হয়। কারণ চাঁদপুরের ইলিশের স্বাদের সুনাম রয়েছে। নাম প্রকাশে আড়তের এক খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, ‘হাছায় মিছায় মিল্লাই মাছ বেচতে হয়।’
এম/