শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা হচ্ছে বুধবার

দ্রব্যমূল্য কমানো-আর্থিকখাত-কর্মসংস্থানে অগ্রাধিকার আ.লীগের

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১২:৪০ পূর্বাহ্ন, ২৬শে ডিসেম্বর ২০২৩

#

ছবি-সংগৃহীত

দ্রব্যমূল্য কমানো, আর্থিকখাতে শৃঙ্খলা ফেরানো, কর্মসংস্থান বাড়ানোসহ বেশ কিছু খাতে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ক্ষমতাসীনদের এ ইশতেহার ঘোষণা হবে বুধবার (২৭শে ডিসেম্বর)। এদিন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা জাতির সামনে নিজেদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি তুলে ধরবেন।

এবারের ইশতেহারে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বধীন সরকারের বদলে যাওয়া দৃশ্যপট রাখা হয়েছে। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি অগ্রাধিকারসহ তুলে ধরা হয়েছে আগামী নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি।

দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে, এবার নির্বাচনী ইশতেহারে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে- দ্রব্যমূল্য কমানো ও সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা, ব্যাংকসহ আর্থিকখাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকারিতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, কর্মোপযোগী শিক্ষা ও যুবকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণ, আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা, লাভজনক কৃষির লক্ষ্যে যান্ত্রিকীকরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, শিল্পের প্রসারে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, নিম্ন আয়ের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা সুলভ করা, সাম্প্রদায়িকতা ও সব ধরনের সন্ত্রাস রোধ করা এবং সর্বস্তরে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুরক্ষা ও চর্চার প্রসার।

নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগের লক্ষ্য- ২০৩১ সালের মধ্যে দেশে হতদরিদ্রের অবসান হবে। ২০৪১ সাল নাগাদ দারিদ্র্য নেমে আসবে ৩ শতাংশে। তাছাড়া শিক্ষিত, দক্ষ, চৌকস ও দুর্নীতিমুক্ত মানুষদের রাজনীতিতে আগ্রহী করে তোলায়ও মনোযোগ দেবে দলটি।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ও দলটির প্রেসিডিয়াম ড. আবদুর রাজ্জাক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ইশতেহারে প্রথমে পটভূমি থাকবে বাংলাদেশের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা। প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি, বিদেশি শক্তি ও বিদেশি ষড়যন্ত্র এবং দেশের মধ্যে যারা বিদেশিদের পা চাটা এদের বিষয়ে কী কর্মসূচি নেবো, কী কৌশল অবলম্বন করবো, কীভাবে মোকাবিলা করবো- এগুলো থাকছে।

ইশতেহারে আমাদের কিছু অগ্রাধিকার থাকবে- যেমন কৃষি, তরুণ, মাদকসহ বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের সুস্পষ্ট কর্মসূচি ও প্রতিশ্রুতি থাকছে। বর্তমান দেশি-বিদেশি পরিস্থিতিসহ সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে আমরা ইশতেহার প্রণয়ন করেছি।’

ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির সদস্য সচিব এবং আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি এবং আর্থিকখাতে সরকার ২০০৯ সাল থেকে এ যাবত অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে। অর্থনীতিকে অনেক বেশি শক্তিশালী করেছে।

দেশের অর্থনীতির প্রতিটি খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় অনেক কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়েছে। বাংলাদেশের আজকের যে অর্থনৈতিক উল্লম্ফন হয়েছে, সেটি সরকারের বহুমাত্রিক পদক্ষেপের অবদানে। সার্বিকভাবে অর্থনীতির গতিশীলতা রক্ষা ও শৃঙ্খলায় গুরুত্ব থাকবে এই ইশতেহারে।’

ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আরেক সদস্য ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘কীভাবে সুশাসন নিশ্চিত করা যায়, তার জন্য বিভিন্ন নীতির কথা আমাদের ইশতেহারে গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরা হবে। এর বাইরে প্রতিটি কাজে প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করা, প্রযুক্তি সহজলভ্য করা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, কৃষিখাতে ফলন বৃদ্ধি, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা, যাতে কর্মসংস্থানের পথ সুগম হয়, ব্যাংকিংখাতে আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল, এবারের ইশতেহারে ব্যাংকিংখাতসহ অন্য ইস্যুতে কীভাবে প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা আনা যায়, সেটি আমরা প্রস্তাব করবো। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র আরও কীভাবে সুদৃঢ় করা যায়, তার সুনির্দিষ্ট সুপারিশ সেখানে থাকবে।’

আরো পড়ুন: নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতেই বিএনপির কর্মসূচি : কাদের

ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আরেক সদস্য অর্থনীতিবিদ সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘ইশতেহারে মানুষ ও সমাজের প্রয়োজন তুলে এনেছি। বিশেষ করে কর্মসংস্থান কেন্দ্রে রেখে সবকিছুকে তার সঙ্গে সম্পৃক্ত করেছি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও শিশুদের বিষয়টি যখন লিখেছি, সেখানেও কর্মসংস্থান রেখেছি। এটাই আমাদের সেন্টার পয়েন্ট। এছাড়া দ্রব্যমূলের কারণে মানুষ কষ্ট পেয়েছে। সবার কষ্ট লাঘবে যা যা প্রয়োজনীয় আমরা উদ্যোগ রেখেছি।’

‘ব্যাংকসহ আর্থিকখাতের শৃঙ্খলার জন্যও আমাদের মতামত আছে। শিল্পায়নের প্রসারেও আমাদের বক্তব্য থাকছে। চিকিৎসাসহ সব ধরনের সেবাখাতে আমরা তথ্যপ্রযুক্তির অধিক ব্যবহার বা সেবায় আধুনিকায়নে গুরুত্ব দিচ্ছি। উদ্ভাবনী ও আইডিয়াও গুরুত্ব দেবো। কৃষিতেও আধুনিকায়ন হোক চাই। সেখানে ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার করতে চাই।’

২০০৮ সালে ‘দিন বদলের সনদ’ শিরোনামে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। এরপর ২০১৪ সালেও ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ শিরোনামে ১০টি মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ক্ষমতারোহণ করে দলটি।

একইভাবে ২০১৮ সালে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ও ২১০০ সালের মধ্যে নিরাপদ ব-দ্বীপ গড়ে তোলার পরিকল্পনা দেওয়া হয়। যদিও এবারের টার্গেট স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, ২৭শে ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের ইশতেহার ঘোষণা করবেন।

এসি/ আই.কে.জে

দ্রব্যমূল্য আর্থিকখাত কর্মসংস্থানে

খবরটি শেয়ার করুন