শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্বের অর্থনীতিকে কতোটা প্রভাবিত করতে পারে চীন?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৫:৪৪ অপরাহ্ন, ১লা অক্টোবর ২০২৩

#

চীনের অর্থনৈতিক মন্দা কীভাবে বিশ্বকে প্রভাবিত করতে পারে এ নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীন, যা ১৪ কোটিরও বেশি জনগণের আবাসস্থল, বর্তমানে অর্থনৈতিক মন্দা ও বেকারত্বের সমস্যার মতো নানা সমস্যায় জর্জরিত। 

দেশটির স্বনামধন্য রিয়েল এস্টেট কোম্পানি এভারগ্রান্ড বর্তমানে চরম ঋণগ্রস্ত হওয়ার দরুণ এ কোম্পানির চেয়ারম্যান রয়েছেন পুলিশের নজরদারিতে। তাছাড়া কোম্পানিটির শেয়ার স্টক মার্কেটেও স্থগিত করা হয়েছে। 

তবে প্রশ্ন দাঁড়ায় চীনের এ সমস্যাগুলো কী বিশ্বকেও প্রভাবিত করতে পারে?

বিশ্লেষকদের এ ব্যাপারে মন্তব্য হলো, চীনের অর্থনৈতিক বিপর্যয় বিশ্বের অর্থনীতিতে তেমন প্রভাব না ফেললেও ভবিষ্যৎ বৈশ্বিক বিপর্যয়ের উদ্বেগকে বৃদ্ধি করে।

অ্যাপল, ভক্সওয়াগেন এবং বারবেরির মতো শত শত বড় বড় বৈশ্বিক কোম্পানি চীনের বিশাল ভোক্তা বাজার থেকে রাজস্ব লাভ করে। তবে চীনের স্বল্প মাত্রার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এ কোম্পানিগুলোর উপর নির্ভরশীল মানুষদের জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে।

অন্যদিকে বিশ্বের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য চীনকে দায়ী করা হলে চীনের বর্তমান পরিস্থিতি অবশ্যই বৈশ্বিক অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে।

তবে কিছু কিছু অর্থনীতিবিদ বৈশ্বিক অর্থনীতিতে চীনের অবদানকে অতিরঞ্জিত বলে মনে করেন।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চায়না সেন্টারের একজন অর্থনীতিবিদ, জর্জ ম্যাগনাস বলেন, বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ৪০% এর জন্য দায়ী চীন। তবে এ প্রবৃদ্ধি আসলে কাদেরকে উপকৃত করছে? 

চীন মূলত আমদানির চেয়ে রপ্তানি করে বেশি। তাই চীনের বর্তমান পরিস্থিতি তার নিজের জন্যেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর, পৃথিবীর জন্যে নয়।

বড় রপ্তানিকারক যেমন, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল এবং আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশ চীনের জন্য আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

চীন থেকে রপ্তানিকৃত জিনিসের দাম বর্তমানে কম থাকায় স্বল্পমেয়াদে সাধারণ ভোক্তারা এ থেকে উপকার পেতে পারেন।

অন্যদিকে বিগত ১০ বছরে, চীন বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ নামের প্রকল্পটিতে এক ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে।

বিশ্বের ১৫০ টিরও বেশি দেশ রাস্তা, বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর এবং সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে চীনা অর্থ ও প্রযুক্তির সহায়তা লাভ করেছে। তবে চীনের অর্থনৈতিক সমস্যা অব্যাহত থাকলে নিজেদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতেও ব্যর্থ হবে দেশটি।

অন্যান্য দেশে চীনা বিনিয়োগ হ্রাসের আশংকা থাকলেও এ পরিস্থিতি দেশটির বৈদেশিক নীতিকে কিভাবে প্রভাবিত করবে তা এখনও জানা নেই।

অনেকের মতে, দুর্বল চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক জোরদার করার দিকেও মনোযোগ দিতে পারে। আমেরিকান বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার কারণেই চলতি বছরের শুরুর দিকে চীনা রপ্তানি ২৫% কমে যায়। 

আরো পড়ুন : মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট হলেন মোহাম্মদ মুইজ্জো

তবে চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক শোধরাবার কোন ধরনের পদক্ষেপই এখন পর্যন্ত গ্রহণ করেনি। বরং এমন পরিস্থিতিতেও পশ্চিমা বিশ্বের সাথে দ্বন্দ্বে জড়াচ্ছে দেশটি। চীনকে রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন এবং সিরিয়ার বাসার আল-আসাদের মতো নেতাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে দেখা যায়।

অনেকের ধারণা বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সামলাতে তাইওয়ান আক্রমণ করে দেশটিকে নিজেদের দখলে নিতে পারে চীন। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ সম্ভাবনা দেখছেন না। তার মতে চীনের বর্তমানে আগের মতো ক্ষমতা নেই।

এসকে/ এএম/ 

চীন যুক্তরাষ্ট্র অর্থনীতি বাণিজ্য বিনিয়োগ

খবরটি শেয়ার করুন