শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে কারণে দীর্ঘ চুম্বনের রেকর্ড নিষিদ্ধ করেছে গিনেস বুক

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০২:১৯ অপরাহ্ন, ২৪শে জুলাই ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

যেকোনো বিষয়েই একক বা দলগতভাবে বিশ্ব রেকর্ড গড়া যায়। এর ফলে বিশ্বের নানা প্রান্তে অদ্ভুত সব বিষয়েও বিশ্ব রেকর্ড গড়ার খবর প্রায়ই শোনা যায়। বিশ্ব রেকর্ডের তেমনই একটি বিষয় হলো দীর্ঘসময় চুমু বা ‘লংগেস্ট কিস’।

এইতো কয়েক বছর আগেও সবচেয়ে বেশি সময় ধরে চুম্বন করে বিশ্ব রেকর্ড করা যেত। তবে এখন আর এই রেকর্ড গড়া যায় না। শেষবার এই রেকর্ড তৈরি হয়েছিল ২০১৩ সালে। তারপর থেকে গিনেস কর্তৃপক্ষ ‘লংগেস্ট কিস’- এর বিশ্ব রেকর্ড গড়া বন্ধ করে দেয়।

থাইল্যান্ডের যুগল এককাচাই-লাকসানা ২০১৩ সালে দীর্ঘতম চুম্বনের সর্বশেষ বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিলেন। ৫৮ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট ধরে চুম্বনরত ছিলেন তারা। এর আগে ২০১১ সালেও বিশ্ব রেকর্ড গড়ে খেতাব জিতেছিলেন তারা।

যে কারণে বন্ধ হলো চুম্বনে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার এই প্রতিযোগিতা-

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড (জিডাব্লিউআর) কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দীর্ঘতম চুম্বনের এই বিশ্ব রেকর্ড নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে, কারণ প্রতিযোগিতাটি ‘খুব বিপজ্জনক হয়ে উঠছিল’। গিনেসের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রতিযোগিতার কিছু নিয়ম বর্তমানে আপডেট হওয়া পলিসির সঙ্গে সাংঘর্ষিক ছিল। 

গিনেসের ওয়েবসাইটে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার নিয়মগুলো তুলে ধরা হয়েছে এবং অংশগ্রহণকারীদের রেকর্ড ভাঙার চেষ্টা করার সময় ওই নিয়মগুলো মেনে চলার সমস্যাগুলোও ব্যাখ্যা করা হয়েছে। 

দীর্ঘতম চুম্বনের রেকর্ডের নিয়মগুলো যেমন ছিল-

* একটানা চুম্বনরত অবস্থায় থাকতে হতো দুই প্রতিযোগীকে। শুধু তাই নয়। একে অন্যের সঙ্গে সবসময় ঠোঁটের স্পর্শ রাখতে হতো। যদি একবারও ঠোঁটের স্পর্শ ছেড়ে যাওয়ার উপক্রম হতো তাহলেই প্রতিযোগিতা থেকে বাতিল হয়ে যেতেন যুগল। 

* প্রতিযোগিতা চলাকালীন প্রতিযোগীরা স্ট্র-এর মাধ্যমে তরল কিছু পান করার অনুমতি পেতেন। কিন্তু সেই সময়েও একে অন্যের ঠোঁটের সংস্পর্শ বজায় রাখতে হতো। 

* দীর্ঘক্ষণ চুম্বনরত অবস্থায় যুগলকে অবশ্যই জেগে থাকতে হতো, ঘুমিয়ে পড়লে চলত না।

* প্রতিযোগিতার মধ্যে চুম্বনরত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে হতো যুগলকে। কোনেভাবেই কোনো রকম সাহায্যকারী জিনিস ব্যবহারের অনুমতি ছিল না।

* কোনোভাবেই বিশ্রাম বা বিরতি নেওয়ার সুযোগ থাকত না প্রতিযোগীদের কাছে। এমনকি বাথরুমে যাওয়ার প্রয়োজন পড়লে সেখানেও যেতে হতো চুম্বনরত অবস্থায়। ডায়পার জাতীয় কোনো প্রোডাক্ট ব্যবহারের অনুমতি ছিল না। 

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কঠোর নিয়মের ফলে স্লিপ ডিপ্রাইভেশনের শিকার হতেন প্রতিযোগীরা। সম্ভাবনা থাকতো সাইকোসিসের মতো রোগ হওয়ার। এমন ঘটনার কিছু উদাহারণও তুলে ধরেছে গিনেস কর্তৃপক্ষ। যেমন: ১৯৯৯ সালে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিলেন ইসরায়েলের কারমিত জুবার ও ডর ওরপাজ। ৩০ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট ধরে চুম্বনরত অবস্থায় ছিলেন তারা। এর ফলে প্রায় অচেতন হয়ে গিয়েছিলেন এই যুগল।

প্রতিযোগিতা জিতলেও ভয়াবহ ক্লান্তিতে ভোগায় তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। এছাড়া ২০০৪ সালে ইতালির ৩৭ বছরের ব্যক্তি আন্দ্রেয়া সার্টি নিজের বান্ধবীকে নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন এই প্রতিযোগিতায়। তরুণী ছিলেন থাইল্যান্ডের বাসিন্দা অ্যানা চেন। ৩১ ঘণ্টা ১৮ মিনিট ধরে একে অন্যের সঙ্গে চুম্বনরত ছিলেন তারা। প্রতিযোগিতা শেষে অক্সিজেন দিতে হয়েছিল যুগলকে।

আরো পড়ুন: যেখানে মহিলাদের কাছে ডিভোর্স মানেই জমিয়ে পার্টি

দীর্ঘ সময় ধরে চুম্বনের প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগীরা একে অন্যকে হারিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে এমন মরিয়া হয়ে উঠতেন যে সময় বয়ে গেলেও চলত প্রতিযোগিতা। বিশ্রামের অনুমতি আছে এই প্রতিযোগিতায়। কিন্তু রেকর্ড করার জন্য প্রতিযোগীরা বিশ্রাম নিতেন না। যে কারণে অনেক প্রতিযোগীই নিজের সক্ষমতার বাইরে যাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়তেন।

রেকর্ড মনিটরিং প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, দীর্ঘতম চুম্বনের রেকর্ডকে দীর্ঘতম চুম্বন ম্যারাথনে রিপ্লেস করা হয়েছে, যা নিয়ম শিথিল করেছে।

এম এইচ ডি/  আই. কে. জে/ 


গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড দীর্ঘতম চুম্বনের রেকর্ড চুম্বন

খবরটি শেয়ার করুন