সোমবার, ২৬শে আগস্ট ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১১ই ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঔষধি ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ‘কালো ধান’ চাষ সাড়া ফেলেছে

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৯:৫৯ পূর্বাহ্ন, ১৪ই নভেম্বর ২০২৩

#

ছবি-ফাইল

রংপুরে ঔষধি ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ বিদেশি জাতের ‘ব্ল্যাক রাইস’ বা কালো ধান চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা মিলন রায়। ২০ শতাংশ জমিতে তিনি এ ধান চাষ করেছেন। ফলনও হয়েছে বেশ।

বিদেশি জাতের এ ধান উচ্চ ফলনশীল হওয়ায় এলাকার অন্য চাষিরাও আগ্রহী হয়ে উঠছেন। তারাও বীজ সংগ্রহ করে ভবিষ্যতে এ জাতের ধান চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন।

কৃষি বিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘ব্ল্যাক রাইস’ ঔষধি ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ। এই ধানে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে থাকা ফাইবার হার্টকে সুস্থ রাখে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া এ ধানের চালে রয়েছে ডায়াবেটিস, স্নায়ুরোগ ও বার্ধক্য প্রতিরোধ ক্ষমতা।

রংপুর মহানগরীর ৬নং ওয়ার্ডের চব্বিশ হাজারী উত্তরপাড়া গ্রামের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা মিলন রায় ইউটিউবে প্রথম এ ধানের চাষাবাদ সম্পর্কে জানেন। পরে ৫০০ টাকা দিয়ে পঞ্চগড় থেকে সাবেক একজন সেনা সদস্যের কাছ থেকে ২ কেজি বীজ কিনেছিলেন। ২০ শতক জমিতে ব্ল্যাক রাইসের পাশাপাশি ২৫ শতক জমিতে বি-৫২ প্রজাতির ধান চাষ করেছেন।

জানা গেছে, ব্ল্যাক রাইস ধানের উৎপত্তি ইন্দোনেশিয়ায়। অধিক ঔষধি গুণ থাকায় এক সময় চীনের রাজা-বাদশাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য গোপনে এই ধান চাষ করা হতো। যা প্রজাদের জন্য চাষ করা বা খাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। এ কারণে এই ধানকে নিষিদ্ধ ধানও বলা হতো।

পরবর্তীতে জাপান ও মিয়ানমারে এই ধান চাষ শুরু হয়। সেখান থেকে আসে বাংলাদেশে। পার্বত্য এলাকায় এ চালকে বলা হয় পোড়া বিন্নি চাল। থাইল্যান্ডে একে বলে কাও নাইও ডাহম।

স্থানীয় কৃষক আইয়ুব আলী বলেন, বিদেশি জাতের ধান আমাদের এই এলাকায় প্রথম চাষ হচ্ছে। অল্প টাকা ও পরিশ্রমে ধান ভালোই হয়েছে। মিলনকে দেখে এলাকার অনেকেই এই ধান চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমি নিজেও পরীক্ষামূলকভাবে এই ধান লাগাব।

একই এলাকার কৃষক নূরু মিয়া বলেন, কালো ধান দেখতে দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই আসছে। আমি নিজেও ধানক্ষেত দেখে এসেছি। ফলন তো ভালো হয়েছে। এ ধানে সার ও কীটনাশক কম লাগে। বীজ সংগ্রহ করতে পারলে আগামীতে আমিও কালো ধান আবাদ করব। আশা করছি অন্যরাও বিদেশি এই ধান চাষাবাদে এগিয়ে আসবে।

মিলন রায় বলেন, ব্ল্যাক রাইসকে স্বাভাবিক ধানের মতোই পরিচর্যা করতে হয়। অতিরিক্ত কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন পড়ে না।

তবে তিনি বাণিজ্যিকভাবে এটি বিক্রির বিষয়ে অনেকটাই চিন্তিত। উৎপাদিত এই কালো রঙের চাল কোথায় বিক্রি করবেন তা এখনো অজানা।

এদিকে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার পিরব এলাকার ফকির সোহেল জানান, তিনি ২০১৯ সাল থেকে ব্ল্যাক রাইস বা কালো ধান চাষ করে আসছেন। অল্প মুনাফা বিনিয়োগ করে কালো ধানে অধিক লাভবান হওয়ায় সবার মাঝে সাড়া ফেলেন সোহেল। কালো ধানের বীজ নিজ এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কৃষকদের কাছে বিক্রি করছেন তিনি।

ব্ল্যাক রাইস চাষি ফকির সোহেল জানান, এই ধান চাষে কম খরচে কয়েকগুণ লাভ হয়। সাধারণ জাতের ধান প্রতি বিঘাতে যেখানে ১৮ থেকে ২০ মণ উৎপাদন হয় সেখানে কালো ধান প্রতি বিঘাতে ২৮ থেকে ৩০ মণ পাওয়া যায়। বাজারে এই ধানের চালের বেশ চাহিদা থাকায় দামও অনেক।

আরো পড়ুন: খরচ কম লাভ বেশি, রাজবাড়ীতে করলা চাষে কৃষকের মুখে হাসি

এসি/ আই. কে. জে/



ঔষধি গুণ ‘কালো ধান’

খবরটি শেয়ার করুন