সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২০২১-২২ অর্থবছরে পাকিস্তানে বহিরাগত ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:২৭ অপরাহ্ন, ১৩ই জুলাই ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানে মোট সরকারি ঋণের মধ্যে বহিরাগত ঋণের সংখ্যা ২০১৯-২০ সালে ৩৬ শতাংশ ছিল। ২০২১-২২ সালে তা এসে দাঁড়ায় ৩৭ শতাংশে, অর্থাৎ ঋণের পরিমাণ কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এ পরিমাণ এখনও ৪০ শতাংশের বেঞ্চমার্কের (সর্বোচ্চ সীমা) নিচে রয়েছে।

অত্যধিক বহিরাগত ঋণের পরিবর্তে বিনিময় হারের অবমূল্যায়নের জন্য এই বৃদ্ধি ঘটেছিল বলে জানা যায়।

পাকিস্তান সরকার মধ্যমেয়াদী ঋণ ব্যবস্থাপনা কৌশলে (২০১৯/২০ – ২০২২/২৩) পরিকল্পিত গত তিন বছরে বেশিরভাগ কৌশলগত মানদণ্ড এবং লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে। তবে, ঋণ ঝুঁকি সূচকের ক্ষেত্রে ২০২১-২২ এর জন্য নির্ধারিত কয়েকটি লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হয়নি। বিপর্যয়কর বন্যা, কোভিড-১৯ মহামারী, আন্তর্জাতিক পণ্যমূল্যের অস্থিরতা এবং বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতির চাপে অর্থনৈতিক ও আর্থিক প্রভাবের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলো সরকারের জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং।

এই সামষ্টিক অর্থনৈতিক ধাক্কা পাকিস্তান সরকারের জন্য ঋণ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা আরো বৃদ্ধি করেছে।

মুদ্রা ঝুঁকির ক্ষেত্রে, মোট পাবলিক ঋণের মধ্যে বহিরাগত ঋণের সর্বোচ্চ সীমা ৪০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে, বিনিময় হারের অবমূল্যায়নের কারণেই ঋণ অনুপাতের বৃদ্ধি ঘটেছে। 

আবার, পুন:অর্থায়নের ঝুঁকি সম্পর্কিত লক্ষ্যমাত্রাগুলোর উপর, অভ্যন্তরীণ ঋণের এটিএম-এর জন্য নিম্ন সীমানা এবং লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর কারণ হল দীর্ঘমেয়াদী ঋণের জন্য বহিরাগত বাজার বিদ্যমান রয়েছে, যা বিভিন্ন বহুপাক্ষিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ২০ থেকে ৪০ বছর মেয়াদী ঋণ প্রদান করে। 

তবে যতক্ষণ পর্যন্ত না অভ্যন্তরীণ বাজারের বৃদ্ধি হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত কম লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করাটাই যুক্তিসঙ্গত। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ঋণ ব্যবস্থাপনার দৃষ্টিকোণ থেকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়।এর মধ্যে একটি হলো দেশীয় ঋণের পুনঃপ্রোফাইলিং, যেখানে সরকার স্বল্পমেয়াদী (৬ মাস) থেকে মধ্যম এবং দীর্ঘমেয়াদী (১ থেকে ১০ বছর) পর্যন্ত এসবিপি ঋণের বিদ্যমান স্টক পুনরায় প্রোফাইল করেছে।

পুন:প্রোফাইলিং ২০১৯ এর জুন মাসে কার্যকর হয়, যা পাকিস্তান সরকারকে তার দেশীয় ঋণের পুন:অর্থায়নের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করে। তবে এসবিপি ঋণের পোর্টফলিও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এবং ২০২৯ সাল নাগাদ আরো বিরাট কিছুর পরিকল্পনা করা হচ্ছে, তাই সামগ্রিক দেশীয় এটিএম এর উপর এর গুরুত্বের প্রভাব বাড়ছে। এখন থেকে, দেশীয় ঋণ এটিএম এর জন্য সর্বনিম্ন সীমানা হল ৩ বছর এবং বহিরাগত ঋণ এটিএম এর জন্য সর্বনিম্ন সীমানা হল ৬ বছর। বর্তমানে পাকিস্তান সরকারের লক্ষ্য এমটিডিএস-এর অধীনে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাগুলোর সাথে মধ্যম মেয়াদে এই সূচকগুলোকে উন্নত করা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার আর্থিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং জিএফএন থেকে জিডিপির সীমানা সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ  নির্ধারণ করেছে।

মধ্যমেয়াদে, সরকারের উদ্দেশ্য হল জিএফএন এবং জিএফএন থেকে জিডিপি এর অনুপাত বিভিন্ন মাধ্যমে হ্রাস করা।

আরো পড়ুন: চীনে পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা বৃদ্ধি, জনমনে উদ্বেগ

বৈচিত্র্য ঋণ গ্রহীতাকে যে কোনো এক শ্রেণীর ঋণদাতা বা ঋণ গ্রহণের উপকরণের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা থেকে রক্ষা করে। এই ধরনের অত্যধিক নির্ভরতা তারল্য সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং কঠিন সময়ে ঋণ গ্রহণের পরিমাণ বাড়াতে পারে। শরিয়া-সম্মত সরকারি সিকিউরিটিজের শেয়ার বাড়ানো বহুমুখীকরণ কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। দেশে শরিয়া-সম্মত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উচ্চ প্রবৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান বাজার শেয়ারের পরিপ্রেক্ষিতে এই কৌশলটির যুক্তি আরও শক্তিশালী।

এর আলোকে, সরকার বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা মেনে চলা নিশ্চিত করার সাথে সাথে সরকারি সিকিউরিটিজে শরিয়া-সম্মত উপকরণের অংশ ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত ১৫ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য রাখছে।

এম এইচ ডি/

পাকিস্তান ঋণ বৃদ্ধি

খবরটি শেয়ার করুন