বুধবার, ৩রা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৯শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২৫ বছর পর বাবা হত্যার বিচারের আইনজীবী হলেন ছেলে

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:১০ অপরাহ্ন, ২৮শে নভেম্বর ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

১৯৯৮ সালের ২১ মে রাত সাড়ে ৮টায় জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে হত্যা করা হয় বাবাকে। তখন ছেলের বসয় মাত্র ১২ বছর। পড়েন পঞ্চম শ্রেণিতে। মায়ের চাওয়া ছিল ছেলে বড় হয়ে আইনজীবী হবে এবং বাবা হত্যার বিচার করবে।

সিনেমার গল্পের মতো ২৫ বছর পর সত্যিই মায়ের স্বপ্ন পূরণ হলো। বাবা হারানোর শোক বুকে নিয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ছেলে হয়েছেন আইনজীবী। ওই মামলায় বাবার হয়ে লড়েছেন তিনি। রায়ে চার আসামির মৃত্যুদণ্ড ও একজনের যাবজ্জীবন দিয়েছেন আদালত।

বলছিলাম কুমিল্লা কোর্টের আইনজীবী আবু নাসেরের কথা। চাঞ্চল্যকর এ রায়ে খুশি অন্য আইনজীবীরাও।

সোমবার (২৭শে নভেম্বর) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক রোজিনা খান এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন বরুড়া উপজেলার পরানপুর গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে ইউসুফ, বনি আমিন, ইউসুফের ভাতিজা সোলায়মান এবং শ্যালক আব্দুল হক। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইউসুফের বড় বোন রজ্জবী বিবি।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ১৯৯৮ সালের ২১ মে ফার্নিচার ব্যবসায়ী শহীদ উল্লাহর সঙ্গে আসামিদের বাগবিতণ্ডা হয়। এর জেরে ওইদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে তারা শহীদ উল্লাহকে পরানপুর বাজারের পশ্চিম পাশের জমিতে ডেকে নেন। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। পরে স্বজনরা উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান শহীদ উল্লাহ।

এ ঘটনার পরদিন নিহতের ছোট ভাই আমান উল্লাহ বাদী হয়ে ১৫ জনকে আসামি করে বরুড়া থানায় মামলা করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা বরুড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সৈয়দুল মোস্তফা ইউসুফসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এদের মধ্যে ইউসুফসহ পাঁচজনের অপরাধ প্রমাণিত হলে চারজনের মৃত্যুদণ্ড এবং একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি নুরুল ইসলাম বলেন, ১৯৯৮ সালের এ মামলায় আমরা ২৬ জনের মধ্যে ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য উপস্থাপনে সক্ষম হয়েছি। আদালত যে রায় দিয়েছেন তাতে আমরা খুশি।

নিহত শহীদ উল্লাহর ছেলে মামলার আইনজীবী আবু নাসের গণমাধ্যমকে বলেন, আমার বাবাকে যখন মেরে ফেলা হয় তখন আমি পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিলাম। আমার মা আমাকে ছোটবেলা থেকে একটাই শিক্ষা দিয়েছেন যেন আমি বড় হয়ে আইনজীবী হই এবং আমার বাবা হত্যায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে পারি। আমি আমার মায়ের অনুপ্রেরণায় বাবার খুনিদের বিচার নিশ্চিত করতে আইনজীবী হয়েছি।

তিনি বলেন, ২৫ বছর পর হলেও একজন সন্তান হিসেবে বাবা হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে পেরে আমি আনন্দিত। মহান আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া। আদালতের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

এসকে/ 

আইনজীবী মৃত্যুদন্ড বাবা হত্যা বিচার

খবরটি শেয়ার করুন