মঙ্গলবার, ২২শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৭ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** বিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনায় আজ রাষ্ট্রীয় শোক *** সংসদে সংরক্ষিত আসন চায় দলিত সম্প্রদায় *** উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নরেন্দ্র মোদির শোক *** সাগরিকার হ্যাটট্রিকে নেপালকে উড়িয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ *** উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক *** হাসপাতাল এলাকায় অহেতুক ভিড় না করার অনুরোধ প্রধান উপদেষ্টার *** নিরীহদের হয়রানি না করতে অনুরোধ গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির *** পাইলট বিমানটিকে জনবিরল এলাকায় নেওয়ার চেষ্টা করেন: আইএসপিআর *** বিসিবির সিদ্ধান্ত বদল, স্টেডিয়ামে খাবার নিয়ে ঢুকতে মানা *** বিমান দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য বাঁচলেন অভিনেত্রী সানা

 টুনার মতো ইলিশও মিলবে কৌটায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন, ১৪ই মে ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে তৃতীয় হলেও ইলিশ উৎপাদনে প্রথম। বিশ্বে ইলিশ উৎপাদনের ৭৫ শতাংশই হয় বাংলাদেশে। সঠিক সংরক্ষণের অভাবে অনেক সময় জেলেদের লোকসানের মুখে পড়তে হয়। কৌটায় প্রক্রিয়াজাত মাছ বিদেশে বেশ জনপ্রিয়। আমদানি করা টুনা মাছের কৌটা পাওয়া গেলেও দেশে প্রক্রিয়াজাত করে কৌটায় মাছ বিক্রির প্রচলন নেই। সম্প্রতি বাংলাদেশে ইলিশ ও টুনা মাছের কৌটা প্রক্রিয়াজাতকরণের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) একদল গবেষক।

বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য অধিদপ্তরের অধীনস্থ সাস্টেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ বিভাগের অর্থায়নে পরিচালিত গবেষণাটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ, বায়োলজি ও জেনেটিকস বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীব। গবেষণা সহযোগী হিসেবে আছেন ফিশিং অ্যান্ড পোস্ট হারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাসুদ রানাসহ শিক্ষার্থীদের একটি দল।

গবেষকদল জানান, ২০২২ সালের জুলাই মাসে গবেষণাটি শুরু হয়। এ পদ্ধতির মাধ্যমে ইলিশ ও টুনা মাছ কৌটায় তিন মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাচ্ছে। এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণের জন্য আরো অধিকতর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। দেশে বছর জুড়ে মিলবে কৌটাজাত ইলিশ ও টুনা মাছ এমন প্রত্যাশা তাদের।

গবেষক দলের প্রধান কাজী আহসান হাবীব বলেন, ‘দেশে প্রতি বছর প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। শুধু দেশে নয়, বিদেশেও আমাদের ইলিশের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কৌটাজাত করার পর এই ইলিশ দেশের অভ্যন্তরে বিক্রি এবং বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর অর্থ আয় করা সম্ভব। অন্যদিকে বাংলাদেশে টুনা মাছ তেমন জনপ্রিয় না হলেও উপকূলীয় এলাকায় বিপুল পরিমাণে টুনা মাছ ধরা পড়ে। বাজারে এই মাছ খুব কম দামে বিক্রি হয়। কিন্তু কৌটাজাত টুনা মাছ বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।’

কাজী আহসান হাবীব আরো বলেন, ‘বেশি সময় ধরে মাছ সংরক্ষণে সফল হলে উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হবে। পুরো গবেষণাটি সফল হলে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) কাছে মাছ বাজারজাত করার জন্য অনুমোদন চাওয়া হবে। অনুমোদন পেলেই বাজারজাত করা হবে। গবেষণা ও প্রশিক্ষণের কাজ আশাকরি আগামী ছয় মাসের মধ্যে শেষ হবে।’

গবেষক মাসুদ রানা বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্ব জুড়ে রেডি-টু-ইট এবং রেডি-টু-কুক খাদ্যের চাহিদা বাড়ছে। এ কারণে স্বল্প ব্যয়ে এই প্রক্রিয়া এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারাও এটি থেকে লাভবান হতে পারেন।’

তিনি আরো বলেন, এমনভাবে মাছ প্রক্রিয়াজাত করা হবে যাতে মাছের টুকরা না ভাঙে। প্রক্রিয়াজাতের পর কাঁটা নরম হবে ফলে খেতে সমস্যা হবে না। ইলিশের এই নরম কাঁটা দেহে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দূর করতে সহায়তা করবে। কৌটা খুলেই মাছ খাওয়া যাবে। দুই-তিন মিনিট গরম করে নিলে মাছ আরো বেশি সুস্বাদু হবে।

আরো পড়ুন: উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে মোখার অগ্রভাগ

কৌটাজাত মাছের বিষয়ে গবেষক দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রতিটি কৌটায় লেজ মাথা বিহীন ২০০ গ্রাম মাছ থাকবে। কৌটায় চার টুকরা ইলিশ থাকবে, দাম পড়বে ৩২০ টাকার মতো। আর টুনার কৌটা ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি করা যাবে। ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে পুরোপুরি বের হয়ে গেলে বিশ্ববাজারে বেশ কিছু বাণিজ্য সুবিধা হারাবে। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই প্রযুক্তিকে অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম করতে পারলে রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আসবে বলে মনে করছেন অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা।

এম/


 

 টুনা ইলিশ কৌটা

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন