শুক্রবার, ১২ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৮শে ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুর্গম এলাকা বলে পিছিয়ে থাকলে হবে না : ড. ইউনূস

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:৪৯ অপরাহ্ন, ১১ই ডিসেম্বর ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

পার্বত্য অঞ্চলকে শিক্ষা, প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সম্পদে পরিপূর্ণ পার্বত্য জেলাগুলো বাংলাদেশের সবচেয়ে উন্নত অঞ্চল হতে পারতো কিন্তু সবচেয়ে পেছনে পড়ে আছে। এটা হওয়ার কথা না। আপনাদের ফসল, ফল-ফলাদি, ঐতিহ্যবাহী পণ্য দিয়ে অর্থনীতিতে আপনাদের এগিয়ে যাওয়ার কথা। পার্বত্য এলাকাগুলো দুর্গম, সেজন্য যোগাযোগ করা কঠিন হয়। আর এ কারণেই সেখানে প্রযুক্তির প্রসার দরকার। প্রযুক্তি দিয়ে এ দূরত্ব জয় করা যাবে।’

বুধবার (১১ই ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় ‘পার্বত্য জেলা পরিষদ ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। রাজধানীর পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সে পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের জন্য আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটি অনুষ্ঠিত হয়।

নারী ফুটবল দলে পার্বত্য জেলা থেকে আসা খেলোয়াড়দের সঙ্গে বৈঠকের স্মৃতিচারণ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশের মেয়েরা ফুটবলে বিশ্বের অন্যান্য দেশের টিমকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ান হয়েছে। আপনাদের এলাকার মেয়েরা কী দুর্দান্ত খেললো ! কীভাবে বলবেন পিছিয়ে আছে? যারা আপনাদের এলাকা থেকে এসেছে তাদের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। কী কঠিন পরিস্থিতি ! কত কষ্ট করে পাহাড় ভেঙে বাড়ি পৌঁছাতে হয় ! বাবা-মা ঢাকায় এলে কত কষ্ট করে তাদের আসতে হয়। এই প্রতিকূলতার মধ্যেই কিন্তু তারা বিশ্বজয় করে এসেছে।’

আরও পড়ুন: ১৫ই ডিসেম্বর থেকে এমআরপি পাসপোর্ট পাবেন প্রবাসীরা

পার্বত্য এলাকার তরুণরা যেন বিশ্ব নাগরিক হয়ে গড়ে ওঠে– এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের মেয়েরা ফুটবলে বিশ্বজয় এনে দিয়েছে। তরুণদের শুধু বাংলাদেশের নাগরিক না, বিশ্ব নাগরিক হতে হবে। দুর্গম এলাকা বলে পিছিয়ে থাকলে হবে না। সীমাবদ্ধতা থাকবে কিন্তু মনের সীমারেখাকে বাড়িয়ে দিতে হবে। সারা দুনিয়ার মানুষের কাছে নিজ কৃতিত্ব দিয়ে পৌঁছে যেতে হবে।’

জানুয়ারিতে তারুণ্যের উৎসবে পার্বত্য অঞ্চলের তরুণদের অংশ নেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ দেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আপনাদের শিশুদের, তরুণদের এ উৎসবে যোগ দিতে উৎসাহ দিন। স্থানীয় খেলা হোক, রচনা প্রতিযোগিতা, গান-নাচ তারা যা পারে, যা চায় তা নিয়ে যেন অংশ নেয়। এটা সবার উৎসব। উৎসবটি বৈচিত্র্যময় হোক। সরকারি নির্দেশ, তাই অংশ নেবে এরকম না। তাদেরকে আপনারা উৎসাহ দিন, যেন নিজ থেকেই তারা উদ্যমী হয়ে এ উৎসবে অংশ নেয়।’

পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার ও সঠিক পদ্ধতি, প্রশিক্ষণের গুরুত্ব নিয়েও কথা বলেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, ‘দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এক কঠিন সংকটে আছে। আপনাদের অঞ্চলে এটা আরও বেশি কঠিন। শিক্ষকদের কষ্ট হয়, ছাত্রছাত্রীদের কষ্ট হয়। অনিয়মের পরিমাণ সারা বাংলাদেশে আছে, আপনাদের অঞ্চলে আরও বেশি করে আছে। আপনাদের পড়াশোনার দিকে মনোযোগী হতে হবে। আমরাও চেষ্টা করবো রাষ্ট্রীয় দিক থেকে কীভাবে কী করা যায়। পার্বত্য জেলার তরুণরা দুর্গম অঞ্চলে আছে বলে বড় শহর থেকে লেখাপড়ায় পিছিয়ে থাকবে, সেটা হতে দেওয়া যাবে না। লেখাপড়ায় তাদের এগিয়ে যেতে হবে।’

এসি/কেবি

ড. মুহাম্মদ ইউনূস

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন