ফাইল ছবি (সংগৃহীত)
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে সহিংসতায় নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তরের যে খবর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়, তা ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসত্য’ বলে দাবি করেছে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, চিকিৎসকরা চাইলেও নিহতদের স্বজনরা রাজি না হওয়ায় মরদেহের ময়নাতদন্ত করা সম্ভব হয়নি।
আজ রোববার (২০শে জুলাই) গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জীবিতেষ বিশ্বাসের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব দাবি করা হয়।
গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে গত ১৬ই জুলাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে স্থানীয়দের দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে। একই সঙ্গে চলে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে একপর্যায়ে গুলি ছোড়েন বাহিনীর সদস্যরা। এতে গুলিবিদ্ধদের গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাদের মধ্যে চারজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গুলিবিদ্ধ একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে তার মৃত্যু ঘটে।
গোপালগঞ্জে সহিংসতায় নিহতদের মরদেহ জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ময়নাতদন্ত না করেই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে- এ খবর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এর প্রতিক্রিয়ায় গতকাল শনিবার (১৯শে জুলাই) স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, গোপালগঞ্জে সহিংসতায় নিহতদের মরদেহ প্রয়োজনে কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করা হবে।
এর ঠিক পরদিনই সহিংসতায় নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্ত না হওয়ার ব্যাখ্যা দিল গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তাদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত ১৬ই জুলাই গোপালগঞ্জ জেলায় অপ্রত্যাশিত ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের লাশ ময়নাতদন্ত না করার বিষয়ে কিছু সংবাদমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও নিহত ব্যক্তিদের আত্মীয় স্বজনদের বক্তব্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, গোপালগঞ্জ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়, যেখানে উল্লেখ করা হয় যে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে ময়না তদন্ত না করে লাশ হস্তান্তর করেন, বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসত্য।
এতে বলা হয়, ‘প্রকৃত ঘটনা এই যে, উল্লেখিত তারিখে ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর জরুরি বিভাগে প্রথম মৃতদেহটি আসে, কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণার পর রোগীর স্বজনদের লাশ ময়না তদন্তের কার্যক্রম শেষ করে লাশ নেওয়ার কথা বললে স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন এবং একপর্যায়ে জোর পূর্বক লাশ নিয়ে যান। পরবর্তীতে বাকি মৃতদেহগুলোর স্বজনরা ময়না তদন্ত করাতে রাজি হননি এবং হাসপাতালে কর্মরত কর্মচারীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে জোর পূর্বক মৃতদেহ নিয়ে যান।'
খবরটি শেয়ার করুন