মঙ্গলবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৬ই বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** ২০২৭ সালের জুনের পর ‘করছাড়’ থাকবে না *** ‘বিএসসিপিএলসি আন্তর্জাতিক ব্যান্ডউইডথ পরিবহনে মাইলফলক অতিক্রম করেছে’ *** ‘পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের মতো গাজাও ফিলিস্তিনের অংশ’ *** ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে এখনো আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব *** আগামীকাল শেষ হচ্ছে মেঘনায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা *** ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর শিরোপা জয় *** মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনে জনবল নিয়োগ *** স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর কারিগরি শিক্ষা হবে মূল বিষয়: ড. দেবপ্রিয় *** বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ–বাণিজ্য, বন্ধে প্রয়োজন কঠোর পদক্ষেপ *** হজযাত্রীদের জন্য ‘লাব্বাইক’ অ্যাপ উদ্বোধন করলেন ড. ইউনূস

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে বিপাকে রপ্তানিকারকরা, বিকল্প পথ খুঁজতে হবে

সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০৫:১৭ অপরাহ্ন, ১৬ই এপ্রিল ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

হঠাৎ করে পূর্ব ঘোষণা ছাড়া বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। এতে বিপাকে পড়েন দেশের রপ্তানিকারকরা। এ ঘোষণার পর স্থলবন্দর থেকে ভারত ফিরিয়ে দেয় পণ্যবোঝাই ট্রাক। পেট্রাপোল কাস্টমসে অপেক্ষামান তৈরি পোশাক বোঝাই ট্রাক দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি পায়নি। তবে যেসব পণ্য শুধু ভারতে রপ্তানি করা হবে, সেসব পণ্য পাঠানো যাচ্ছে।

ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের পণ্য তৃতীয় দেশে নিয়ে যাওয়ার সুবিধা দিতে ২০২০ সালের ২৯শে জুন আদেশ জারি করে ভারত সরকার। ভারতের ‌‌‌‌‌‘সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস’ (সিবিআইসি) সেই আদেশ বাতিল করে দেয়।

বেনাপোল কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, যেসব পণ্য শুধু ভারতে রপ্তানির জন্য এসেছে, সেগুলো বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যেতে পারছে। ভারতের ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধায় বাংলাদেশ থেকে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টনের মতো পণ্য সড়কপথে দেশটির বিভিন্ন বন্দর বিশেষ করে, দিল্লি ও কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে রপ্তানি হতো। 

এ সুবিধা বাতিলের একদিন আগেও ২০ ট্রাক তৈরি পোশাক তাদের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ভারতের ট্রানজিট ব্যবহার করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়েছে। বেনাপোলে পণ্যের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়াডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, পূর্ব ঘোষণা ছাড়া হঠাৎ ভারত সরকার ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধা প্রত্যাহার করার কারণে রপ্তানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতির মুখে পড়বে। 

সাধারণত গ্রীষ্মকালে তৈরি পোশাকের রপ্তানি বাড়ে। আর এখন চলছে রপ্তানির ভরা মৌসুম। এ মুহূর্তে হঠাৎ করে ভারতের এ সিদ্ধান্তে রপ্তানিকারকরা বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় কোনো দেশে পণ্য রপ্তানিতে ভারতের কলকাতা বন্দর, নবসেবা বন্দর ও কলকাতা বিমান কার্গো কমপ্লেক্স ব্যবহার করার সুযোগ দিয়েছিল ভারত।

বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের ট্রানজিট নিয়ে তৃতীয় কোনো দেশে যেসব পণ্য রপ্তানি করা হয়, সেগুলোর বেশিরভাগ ইউরোপের দেশগুলোয় যায়। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক বেনাপোল ও পেট্রাপোল দিয়ে স্পেন ও সুইজারল্যান্ডে বেশি যায়। তবে ওই বন্দর দিয়ে নেপাল ও ভুটানে পণ্য রপ্তানি কম হয়।

বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) তথ্যমতে, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের একটি বড় অংশ ভারত হয়ে নেপাল, ভুটান ও মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হতো। এখন তারাও সমস্যায় পড়েছে। বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করার ফলে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের রপ্তানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। 

এখন তারা পণ্য পরিবহনে খরচ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। শুধু প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পণ্য ভারতের মধ্য দিয়ে নেপাল ও ভুটানে প্রায় ১০ মিলিয়ন আমেরিকান ডলারের সমান রপ্তানি হয়। এ পথ বন্ধ হওয়ায় রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি এ গ্রুপের ভোগ্যপণ্য উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত কয়েক লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থানও ঝুঁকিতে পড়বে।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করলেও বাংলাদেশের সমস্যা হবে না। নিজস্ব সক্ষমতা, প্রতিযোগিতার সক্ষমতায় মাধ্যমে  ঘাটতি পূরণ করা হবে। তবে সেটা যদি করাও যায়, তাও তো অনেক সময়ের ব্যাপার।কিন্তু রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা বলেছেন অন্য কথা।

তারা বলছেন, ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের কারণে রপ্তানিকারকদের খরচ ও সময় অবধারিতভাবে বাড়বে। বিশেষ করে ভুটান ও নেপালের মতো ভূমিবেষ্টিত দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে। ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি কার্যক্রমে নিঃসন্দেহে জটিলতার সৃষ্টি হবে।

এইচ.এস/

ট্রান্সশিপমেন্ট

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন