শুক্রবার, ১২ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৮শে ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চুরির অপবাদে যুবককে পেটালেন আ.লীগ নেতা, ভিডিও ভাইরালের পর আটক

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১০:০৩ পূর্বাহ্ন, ৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৫

#

ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

কিশোরগঞ্জে চুরির অপবাদ দিয়ে জনসমক্ষে এক যুবককে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে পেটাচ্ছেন আব্দুস সালাম নামের আওয়ামী লীগের এক নেতা। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

এ ঘটনার পর নির্যাতনকারী, বৌলাই ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসাধারণ সম্পাদক এবং বৌলাই ইউনিয়ন ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুস সালামকে আটক করেছে কিশোরগঞ্জ মডেল থানা-পুলিশ। গতকাল শুক্রবার (৫ই সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ সড়কের বৌলাই নাকভাঙ্গা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

ছড়িয়ে পড়া ২ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, সদর উপজেলার বৌলাই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য (মেম্বার) ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সালাম বাঁশের কঞ্চি দিয়ে এরশাদ মিয়াকে পেটাচ্ছেন। আর এরশাদ মিয়া বারবার এ কাজ করেননি বলে সালামের কাছে আকুতি করছেন। পরশ ও সোহরাব নামের দুজনকে জিজ্ঞেস করতেও বলেন এরশাদ।

এ ছাড়া সালিসে আহত অবস্থায় বসে থাকতে দেখা যায় সোহরাব উদ্দিনকে। পরে আব্দুস সালাম সালিসে সিদ্ধান্ত দিয়ে বলেন, ‘আমি তাদের অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলেছি। এরশাদ মিয়া দেবে ৫০ হাজার ও সোহরাব উদ্দিন দেবে ৫০ হাজার টাকা। ১৮ই সেপ্টেম্বরের মধ্যে টাকাগুলো সজল মিয়াকে দিয়ে দিতে হবে।’

গত বুধবার (৩রা সেপ্টেম্বর) সদর উপজেলার বৌলাই ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৌলাই ইউনিয়নের পুরান বৌলাই গ্রামে মঙ্গলবার (২রা সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে আব্দুল কদ্দুসের ছেলে সজল মিয়ার বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। এ সময় সন্দেহজনক একই এলাকার সোহরাব উদ্দিন ও এরশাদ মিয়াকে ওই বাড়ির পাশ থেকে আটক করা হয়।

পরে মাতব্বরদের মধ্যস্থতায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে পরদিন বুধবার (৩রা সেপ্টেম্বর) সকালে আবারও সালিস ডেকে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। এ সময় তাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে আলজাতীয় পাতা লাগিয়ে পানি দেওয়া হয়, কঞ্চি ও লাঠি দিয়ে পেটানো, কিলঘুষি দেওয়া হয়। অবশেষে জনসমক্ষে বেত্রাঘাত করা হয়। শুধু তা-ই নয়, দুজনকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পরিশোধের জন্য ১৫ দিন সময় বেঁধে দেন আব্দুস সালাম।

সোহরাব উদ্দিন বলেন, ‘অনেক দিন ধরে আমার মাছ ধরার নেশা। ওই দিন রাত আনুমানিক ৩টায় সাবেক মেম্বার হাছান রাব্বানী লালুর সাথে মাছ ধরতে যাই। সজলদের বাড়ির পাশে একটা ব্রিজ আছে, সেটা পার হয়ে যাওয়ার পর শুনতে পাই, পাশের বাড়ির লোকজন চিৎকার করে বলছে, চোর আসছে। চিৎকার শুনে মেম্বার ও আমি দুজন ওইখানে যাই এবং চোর খুঁজতে বের হই। একপর্যায়ে আমাকে চোর বলতেছে। আমি মেম্বারকে নিয়ে তাদের বাড়িতে যাই। এ সময় সজলের ভাই স্বপন আমাকে শার্টের কলার ধরে মারধর করে। পরে মেম্বার আমাকে বাঁচিয়ে তার বাড়িতে নিয়ে যান। সেখান থেকে আমি বাড়িতে চলে আসি।’

জে.এস/

কিশোরগঞ্জ ভিডিও ভাইরাল ভাইরাল ভিডিও

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন