বৃহস্পতিবার, ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৭শে ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুমার নামাজে না গেলে জেল-জরিমানা করবে সরকার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১১:২৯ অপরাহ্ন, ১৯শে আগস্ট ২০২৫

#

মালয়েশিয়ায় জুমার নামাজে অংশ নেওয়া মুসলিমেরা। ছবি: এএফপি

মালয়েশিয়ার তেরেংগানু প্রদেশে মুসলিম পুরুষদের জন্য শুক্রবারের জুমার নামাজে হাজিরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আর এ নিয়ম ভাঙলে শাস্তির বিধানও ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন আইনে বলা হয়েছে, কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়া জুমার নামাজ বাদ দিলে মুসলিম পুরুষদের দুই বছরের কারাদণ্ড কিংবা সর্বোচ্চ তিন হাজার রিঙ্গিত (৮৬ হাজার টাকা) জরিমানা অথবা উভয় শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। খবর দ্য ইনডিপেনডেন্টের।

ব্রিটেন-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, গতকাল সোমবার (১৮ই আগস্ট) প্রাদেশিক সরকার পরিচালিত ‘শরিয়া ক্রিমিনাল অফেন্সেস’ (তাকজির) আইন অনুযায়ী এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

তেরেংগানু রাজ্য নির্বাহী পরিষদের সদস্য মুহাম্মদ খলিল আব্দুল হাদি জানিয়েছেন, আগে ওই রাজ্যে টানা তিন জুমা মিস করলে শাস্তির বিধান ছিল। কিন্তু এখন একবার জুমার নামাজ বাদ দিলেও তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। তিনি বলেন, জুমার নামাজ মুসলিম জীবনে শুধু একটি ধর্মীয় প্রতীক নয়, বরং আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। তাই বারবার সতর্ক করার পরও কেউ যদি এ দায়িত্ব এড়িয়ে চলেন, তখনই শাস্তি কার্যকর হবে।

প্রাদেশিক ওই সরকার জানিয়েছে, সাধারণ মানুষকে নিয়মিত জুমার নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করতে মসজিদে ব্যানার টানানো হবে এবং বিভিন্ন প্রচারণা চালানো হবে। পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করলে কিংবা নজরদারিতে আইন ভাঙার কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তেরেংগানুতে এই আইন কার্যকরের মধ্য দিয়ে মালয়েশিয়ার বৃহত্তম ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল প্যান-মালয়েশিয়ান ইসলামিক পার্টি (পিএএস) আবারও কঠোর শরিয়া আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এগোচ্ছে। দেশটির ১৩টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে চারটি রাজ্যে তারা ক্ষমতায় রয়েছে। দলটি বহু বছর ধরে অপরাধের বিপরীতে কঠোর শাস্তির বিধান প্রচলনের পক্ষে। এমনকি একসময় চুরি ও ব্যভিচারের মতো অপরাধে তারা হাত কেটে দেওয়া কিংবা পাথর ছুড়ে মৃত্যুদণ্ডের মতো ‘হুদুদ আইন’ চালুরও প্রস্তাব করেছিল।

এদিকে তেরেংগানু রাজ্যের নতুন ঘোষণাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। মালয়েশিয়ার আইনজীবী আজিরা আজিজ এক্স প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, ‘ইসলামে কোনো জোরজবরদস্তি নেই বলার পরও এ ধরনের আইন হয়েছে। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে, তেরেংগানুর পুরুষেরা নামাজে যাচ্ছেন না। নামাজ ফরজ—এ ব্যাপারে কারও দ্বিমত নেই। তবে এটিকে অপরাধ হিসেবে আইন করে শাস্তি দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না। সচেতনতামূলক প্রচারণাই যথেষ্ট হতো।’

জুমার নামাজ মালয়েশিয়া

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন