ছবি: সংগৃহীত
ভারতের আহমেদাবাদে আজ বৃহস্পতিবার (১২ই জুন) ঘটে গেল এক হৃদয়বিদারক বিমান দুর্ঘটনা। লন্ডনের গ্যাটউইকের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করা এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয়েছে। রাডার ডেটা অনুযায়ী, উড়োজাহাজটি মাত্র ৬২৫ ফুট উচ্চতায় উঠতে পেরেছিল—এরপরই ঘটে দুর্ঘটনা। খবর ইন্ডিয়া টুডের।
ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে সরদার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে টেকঅফ করেছিল বিমানটি। তবে এক মিনিটের মধ্যেই এটি এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে।
ফ্লাইট-ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম ফ্লাইটরাডার ২৪-এর তথ্য অনুযায়ী, উড়োজাহাজটির সিগনাল হারানোর সময় এর উচ্চতা ছিল মাত্র ৬২৫ ফুট—যা একটি দীর্ঘপথগামী এবং পূর্ণ জ্বালানি ভর্তি বিমানটির জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, উড়োজাহাজটি উড্ডয়নের পর উঁচুতে উঠতে পারছিল না। পরে এটি হঠাৎ করে তীব্র বাঁক নেয় এবং দ্রুত নেমে আসতে থাকে। এরপর শোনা যায় এক প্রচণ্ড বিস্ফোরণ এবং দেখা যায় এক বিশাল অগ্নিগোলক। শহরের ওপর দিয়ে ঘন কালো ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়।
দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। বিমানের পূর্ণ জ্বালানি থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকলকর্মীদের প্রবল সংগ্রাম করতে হয়। বহু আহত যাত্রীকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা এখনো নিশ্চিত নয়।
ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন জানিয়েছে, বিমানটির ক্যাপ্টেন সুমিত সাবহারওয়াল এবং ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্ডার উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই ‘মেইডে’ সংকেত পাঠান—যা একটি গুরুতর জরুরি অবস্থা নির্দেশ করে। তবে সংকেত পাঠানোর পর আর কোনো যোগাযোগ হয়নি।
বিমানটি কেন উচ্চতা নিতে পারেনি এবং এত দ্রুত নেমে এল, তা এখনো স্পষ্ট নয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, উড্ডয়নের সময়ই কোনো বড় ধরনের যান্ত্রিক ব্যর্থতা ঘটেছিল। বিষয়টির তদন্ত করছে ভারতীয় বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এবং বোয়িং-এর একটি কারিগরি দল।
উল্লেখ্য, বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার অত্যাধুনিক নেভিগেশন ও নিরাপত্তা প্রযুক্তিতে সজ্জিত। এতে রয়েছে সিনথেটিক ভিশন সিস্টেম, যা পাইলটদের থ্রি-ডি দৃশ্যমানতা দেয় এবং বিপদ শনাক্ত করতে সহায়তা করে। এ ছাড়া ইন্টিগ্রেটেড মডিউলার অ্যাভিয়নিকস প্রযুক্তির মাধ্যমে বিমানের বিভিন্ন কার্যক্রম আরও কার্যকরভাবে পরিচালনা করা হয়।
এ দুর্ঘটনা ভারতের বিমান চলাচল খাতে ব্যাপক নাড়া দিয়েছে। উড়োজাহাজের নিরাপত্তা ও জরুরি ব্যবস্থাপনার ওপর নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। বিমানটির শেষ মুহূর্ত সম্পর্কে আরও তথ্য তদন্তের পর প্রকাশ করা হবে বলে জানা গেছে।
এইচ.এস/
খবরটি শেয়ার করুন