বৃহস্পতিবার, ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৭শে ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১১ বছর বয়সেই যৌন সম্পর্ক, ১৩-তে ছয় নারীর শয্যাসঙ্গী হোন এই রাজপুত্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৬:০৮ অপরাহ্ন, ৮ই আগস্ট ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

মাত্র ১১ বছর বয়সেই এক নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স অ্যান্ড্রু। ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ ও লেখক অ্যান্ড্রু লাউনির ‘এনটাইটেল্ড: দ্য রাইজ অ্যান্ড ফল অব দ্য হাউস অব ইয়র্ক’ বইতে উঠে এসেছে এমন বিস্ফোরক তথ্য। খবর দ্য টেলিগ্রাফের।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অ্যান্ড্রু লাউনির বইতে বলা হয়েছে, ১৩ বছর বয়সেই ছয়জনের বেশি নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন তিনি। বইয়ের তথ্য অনুযায়ী, মাত্র ৮ বছর বয়সে প্রথম যৌন অভিজ্ঞতা হয় তার। তবে, প্রথম যৌন সম্পর্ক ১১ বছর বয়সে। এরপর ১২ বছর বয়সের আগেই দ্বিতীয়বার কোনো নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়ান তিনি। এরপর ১৩ বছর বয়সের মধ্যেই ছয়জনের বেশি নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক হয়।

প্রিন্স অ্যান্ড্রুর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলছে, ‘অপরিণত বয়সের এই অভিজ্ঞতাগুলোই পরবর্তীতে অ্যান্ড্রুর ব্যক্তিত্ব গঠনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। নারীদের প্রতি তার অস্বাভাবিক আসক্তির সূচনা এখান থেকেই।’

প্রিন্সের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র দ্য টেলিগ্রাফকে বলে, ‘তিনি ইতিপূর্বেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে সাধারণ মানুষের ধারণার চেয়েও অনেক কম বয়সে তার যৌন অভিজ্ঞতা শুরু হয়েছিল। তার ব্যক্তিগত জীবন কতটা জটিল, মানুষ তা কল্পনাও করতে পারবে না!’

৪৫৬ পৃষ্ঠার বইটিকে ‘সবচেয়ে মর্মস্পর্শী রাজকীয় জীবনী’ বলে অভিহিত করা হচ্ছে। এতে অ্যান্ড্রুর শৈশবের ট্রমা, ব্যভিচার, কামুকতা, বিশ্বাসঘাতকতা, দুর্নীতি, অর্থলিপ্সা, বিলাসিতা, অহংকার এবং প্রতিষ্ঠানের ষড়যন্ত্রের কাহিনি বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টেইনের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল প্রিন্স অ্যান্ড্রুর।

‘দ্য রাইজ অ্যান্ড ফল অব দ্য হাউস অব ইয়র্ক’ শিরোনামের বইটিতে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর প্রাপ্তবয়স্ক জীবনের আর্থিক অবস্থা ও যৌনজীবনসহ জেফ্রি এপস্টেইনের সঙ্গে তার সম্পর্কের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। ২০২৯ সালে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এপস্টেইনের সঙ্গে বন্ধুত্ব নিয়ে কোনো অনুশোচনা নেই তার। এ নিয়ে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তাকে। যার জেরে রাজকীয় দায়িত্ব থেকেও সরে দাঁড়াতে হয় তাকে।

ওই সাক্ষাৎকারে ভার্জিনিয়া গ্রিফের সঙ্গে তার কোনো যৌন সম্পর্ক কখনো ছিল না বলে দাবি করেছিলেন তিনি। উল্লেখ্য, ১৭ বছর বয়সে এপস্টেইন ও গিসলেইন ম্যাক্সওয়েলের দ্বারা পাচারের শিকার হয়েছিলেন বলে দাবি করেন ভার্জিনিয়া গ্রিফে।

লাউনির দাবি, অ্যান্ড্রু ও এপস্টেইনের সম্পর্ক শুধু যৌনতার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। এপস্টেইন অ্যান্ড্রুর স্ত্রীর ঋণ পরিশোধে সাহায্য করেছিলেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বইটিতে।

সংবাদমাধ্যমগুলো ডিউক অব ইয়র্ক প্রিন্স অ্যান্ড্রুকে ‘র‍্যান্ডি অ্যান্ডি’ নাম দিয়েছিল। এই নামের অর্থ হলো প্রচণ্ড মাত্রায় যৌন উত্তেজনা অনুভব করেন এমন কেউ। লেখক লাউনির মতে, ব্যঙ্গ করে ডিউক অব ইয়র্ককে এই নামে ডাকা হলেও, তার জীবন মূলত করুণ। তার মানসিক সহায়তার প্রয়োজন ছিল। রাজপরিবার যা জেনেও উপেক্ষা করে গেছে। ফলস্বরূপ জীবনভর ভুগতে হয়েছে অ্যান্ড্রুকে।

লেখক লাউনির মতে, অপরিণত বয়সে তার যে যৌন অভিজ্ঞতা হয়েছে, সেটিই হতে পারে তার পরিণত বয়সের বিতর্কিত আচরণের ব্যাখ্যা। তিনি বলেন, ‘এসব বিবেচনায় অ্যান্ড্রু নিজেও একজন ভুক্তভোগী। এসব জানার পর তার প্রতি সমবেদনা জন্মায়।’

‘এনটাইটেল্ড: দ্য রাইজ অ্যান্ড ফল অব দ্য হাউস অব ইয়র্ক’ বইয়ের তথ্য অনুযায়ী, বিবাহের প্রথম বছরেই অন্তত এক ডজন বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়ান তিনি। শৈশবের ট্রমা থেকে শুরু করে ক্ষমতা ও অর্থের লেনদেন—সব মিলিয়ে এটি একটি জটিল চরিত্রের আখ্যান প্রিন্স অ্যান্ড্রু।

চার বছর ধরে গবেষণা ও শতাধিক সাক্ষাৎকার নিয়ে, বইটি লিখেছেন লেখক অ্যান্ড্রু লাউনি। বইটি নিয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া বা মন্তব্য করেনি বাকিংহাম প্যালেস।

জে.এস/

যৌনতা ব্রিটিশ রাজপুত্র

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন