ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় পার্টির সঙ্গে কোনো সমঝোতা হয়েছে কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৪ দলের সঙ্গে আমরা একটি সমঝোতায় উপনীত হয়েছি। এখনো আমাদের আলাপ-আলোচনা চলছে। জাতীয় পার্টির সঙ্গেও আমরা আলোচনায় আছি। জাতীয় পার্টি আমাদের সহযোগী হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করছে।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি সন্ত্রাস- নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের অভিযাত্রাকে যারা ব্যাহত করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য, সন্ত্রাস নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে জাতীয় পার্টি বরাবর আমাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে এবং তারা আমাদের রাজনৈতিক সহযোগী।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নবনির্বাচিত কার্যকরী পরিষদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এবার তারা (জাতীয় পার্টি) স্বাধীনভাবে নির্বাচন করছে। আমরা ২০০৮ সালে মহাজোট হিসেবে নির্বাচন করেছিলাম। ২০১৪ সালে আমাদের সঙ্গে এলায়েন্স হয়েছিল। এবার তারা ইন্ডিপেন্ডেন্টলি নির্বাচন করছে, এরপরও স্ট্র্যাটেজিক্যাল (কৌশলগত) এলায়েন্স যে কারও সঙ্গে হতে পারে। সে নিয়ে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। আমরা আশা করি খুব সহসা আমরা একটা সমঝোতায় উপনীতি হবো।
আপাতত ১৪ দলীয় জোট শরিকদের সঙ্গে সাতটি আসনে সমঝোতা হয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ১৪ দলের যারা নির্বাচিত হওযার যোগ্য, তাদেরকেই তো মনোনয়ন দিতে হবে। যাদের মনোনয়ন দিলে বা প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করলে নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ, তাদের ক্ষেত্রে তো সমঝোতা করা কঠিন।
সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে তথ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করা হয় ১৪ দলকে সাতটি আসনে ছাড় দেওয়া হয়েছে, এটা আরো বাড়বে কি না? উত্তরে তিনি বলন, সাতটিতে মোটামুটি ১৪ দলের সবাই .....। যারা নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য, তাদেরকেই তো মনোনয়ন দিতে হবে, কিংবা ১৪ দলের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। যাদের মনোনয়ন দিলে বা ১৪ দলের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করলে নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ, তাদের ক্ষেত্রে তো সমঝোতা করা কঠিন। আপাতত সাতটি আসনেই তাদের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ওপর নিয়ন্ত্রণ তো আওয়ামী লীগের নেই। তারা তো আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধেই স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড়িয়েছে। তাদেরকে আমরা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবো। আমরা দলগতভাবে প্রার্থিতা ঘোষণা করার পর, সেখানে আওয়ামী লীগেরও কেউ কেউ স্বতন্ত্র হয়েছে। আরও অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছে। শুধু আওয়ামী লীগের সদস্য বা আওয়ামী লীগ ঘরানার মানুষই স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়িয়েছে তা নয়। সেখানে অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছে, বিভিন্ন আসনে। তাদের ওপর তো আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। আমাদের নিয়ন্ত্রণ আমাদের দলীয় প্রার্থীদের ওপর।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনে তো মোকাবিলা করেই জিততে হবে। আমাকেও তো মোকাবিলা করেই জিততে হবে। আমার ওখানে তো আরো পাঁচজন প্রার্থী আছে। কাদের ভাইয়ের ওখানে সম্ভবত ৪ থেকে ৫ জন প্রার্থী আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসনেও ৫ থেকে ৬ জনের মতো প্রার্থী আছে। তো মোকাবিলা করেই তো নির্বাচন করতে হবে।
সাংবাদিকদের আরো এক প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, নির্ভয়ে ভোটদানে জাতিসংঘের আহ্বানকে আমরা স্বাগত জানাই এবং এটি বিএনপি-জামায়াত, যারা নির্বাচনকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে গেছে।
তিনি বলেন, এটি একটি ভালো স্টেটমেন্ট। জাতিসংঘের এ স্টেটমেন্টকে আমরা স্বাগত জানাই এবং কারা ভোটদানে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে, ভোট প্রতিহত করার চেষ্টা করছে, আপনারা জানেন। বিএনপি-জামায়াত ঘোষণা দিয়েছে তারা ভোট প্রতিহত করবে। ভোটকেন্দ্রে যাতে মানুষ না যায়, সে জন্য তারা জনসাধারণের মধ্যে ভীতিসঞ্চার করছে, গাড়ি-ঘোড়া পোড়াচ্ছে, রেললাইন খুলে ফেলছে। আমি মনে করি এ বিবৃতি তাদের বিরুদ্ধে গেছে।
আরো পড়ুন: শরিকদের ৭ আসনের বেশি দেয়া সম্ভব না, বললেন কাদের
বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী জ্বালাও-পোড়াও চালিয়েই যাচ্ছে, এটি প্রশাসনের ব্যর্থতা কি না? সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের উত্তরে হাছান মাহমুদ বলেন, ওরা ২০১৩-১৪-১৫ সালে যেভাবে জ্বালাও-পোড়াও করেছিল, সেটি এখন পারছে না এবং এটিকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা আমাদের দায়িত্ব। সেই লক্ষ্যে সরকার ও প্রশাসন কাজ করছে।
ডিআরইউ সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভর নেতৃত্বে সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম শামীম, সাধারণ সম্পাদক মহি উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান (মিজান রহমান), সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ, দপ্তর সম্পাদক রফিক রাফি, নারী বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদা ডলি, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক মো. রাশিম (রাশিম মোল্লা), ক্রীড়া সম্পাদক মো. মাহবুবুর রহমান, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. মনোয়ার হোসেন, আপ্যায়ন সম্পাদক মোহাম্মদ ছলিম উল্লাহ (মেজবাহ), কল্যাণ সম্পাদক মো. তানভীর আহমেদ, কার্যনির্বাহী সদস্য সাঈদ শিপন, মুহিববুল্লাহ মুহিব ও মো. শরীফুল ইসলাম এ মতবিনিময়ে অংশ নেন।
এসকে/
খবরটি শেয়ার করুন